পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—আরে, ওই যে ওই আলমটাকে—ও ব্যাট হেডমাস্টারের কাছে প্রভ্যেকের বিষয়ে লাগাবে। আমাদের উস্তন-কুপ্তন করে মেরেচে মশাই | উ:, ও একেবারে অস্ত্যজ—ওর বা অপমান করেচেন আজ ! দেখুন তো, আপনার নামে কিনা লাগাতে— - নতুন টচারের মুখ কঠিন হইয়া উঠিল। তিনি বিরম কণ্ঠে বলিলেন, ও আলোচনা নাই বা করলেন এখন। মি: আলমের ভুল হতে পারে। ভুল সবারই হয়। আমি তার ভুল পয়েণ্ট আউট করেছি মাত্র। আদারওয়াইজ হি ইঞ্জ এ ভেরি গুড টীচার-ভেরি অনেস্ট অ্যাও সিন্‌সিয়ার টীচার । যাক ওসব কথা । কঠিন ভঞ্জ বের গাম্ভীর্ষে চায়ের দোকানের হাল্কা আবহাওয়া যেন থমথম করিয়া ਢੋਠਿੰਕ | - যদুবাৰু আর মাখামাথি করিবার সাহস পাইলেন না। অন্ত কথা উঠিল। নতুন টীচার বিশেষ কোন কথা বলিলেন না। মজলিস জমিল না, যতটা আশা করা গিয়াছিল। চায়ের মজলিস শেষ হইলে নতুন টীচার বিদায় লইয়া চলিয়া গেলেন। সকলের পয়সা তিনি নিজেই দিয়া দিলেন। যদুবাবু বলিলেন, গভীর জলের মাছ, দেখলে তো ? ক্ষেত্রবাবু ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন, হু। —বেশ চালবাজ । —তা একটু আছে বইকি । নারাণবাবু বলিলেন, তোমরা কারুর ভালো দেখ না—ওই তোমাদের দোষ । এ চালবাজ, ও গভীর জলের মাছ—এই সব তোমাদের কথা । - জ্যোতিবিনোদ বলিলেন, না না,ভদ্রলোক ভালই ! আমি তো দেখচিবেশ উদার লোক । যদুবাবু বলিলেন, ওই তো ভায়া, ওই জন্তেই তীে বলচি গভীর জলের মাছ। আমাদের পয়সাটি পর্য্যস্ত নিজে দিয়ে গেল, যেন কত ভদ্রতা ! অথচনারাণবাবু বলিলেন, অথচ কী ? তুমি সব জিনিসের মধ্যে একটা অথচ না বের করে ছাড়ৰে না ভায়া ! —অথচ মনের কথাটা প্রকাশ করলে না। —অথচ নয়, অর্থাৎ তোমার মত পেটপাতলা নয়। —আপনি তো দাদা আমার সবই দোষ দেখেন। —রাগ কোর না ভায়। মামি তো ও ছোকরা কোন বোধই দেখলাম না। বলে বসে মি: আলমের নামে কুৎসা গাইলেই কি ভাল লোক হত । নারাণবাবুকে সকলেই তাহার বয়সের জন্য একটু সমীহ করিয়া চলে। যদুবাৰু ইহা লইয়া নারাণবাবুর সঙ্গে আর তর্ক করিলেন না । মোটের উপর সে দিন চায়ের মজলিস হইতে বাহির হইয়া সকলেই অসম্ভোষ লইয়ু-বাড়ী ফিরলেন।