বিরাজ-বেী לופי" বিরাজ ঘাড় নাড়িয়া বলিল, পায়বি। তারপর তুলসী আলো লইয়া পথ দেখাইতে চাহিল। বিরাজ নিষেধ করিয়া বলিল, কােজ নেই, তুই এক ফিরে আসতে পারবি নে। বলিয়া নিমেষের মধ্যে অন্ধকারে অদৃশ্য হইয়া গেল। আজি চাড়ালের ঘরে সে ভিক্ষা করিতে আসিয়াছিল, ভিক্ষা করিয়া লহঁয়া গেল, অথচ এত বড় অপমান তাহাকে তেমন বিধিল না-শোক, দুঃখ, অপমান, অভিমান কোন বস্তুরই তীব্ৰতা অনুভব করিবার শক্তি তাহার দেহে ছিল না । বাড়ী ফিরিয়া দেখিল, নীলাম্বর আসিয়াছে। স্বামীকে সে তিন দিন দেখে নাই, চোেখ পড়িবামাত্রই দেহের প্রতি রক্তবিন্দুটি পৰ্য্যন্ত উদ্দাম হইয়া উঠিয়া একটা দুৰ্নিবার আকর্ষণ প্ৰচণ্ড গতিতে তাহাকে ক্ৰমাগত ঐ দিকে টানিতে লাগিল, কিন্তু এখন আর তাহাকে এক পা টলাইতে *ॉङ्गिल भी । তীব্র তড়িৎ সংস্পর্শে ধাতু যেমন শক্তিময় হইয়া উঠে, স্বামীকে কাছে পাইয়া চক্ষের নিমিষে সে তেমনই শক্তিময়ী হইয়া উঠিয়াছিল। তথাপি সমন্ত আকর্ষণের বিরুদ্ধে সে স্তব্ধ হইয়া দাড়াইয়া এক দৃষ্টি চাহিয়া झलि । নীলাম্বর একটিবার মাত্র মুখ তুলিয়াই ঘাড় হেঁট করিয়াছিল, সেই দৃষ্টিতেই বিরাজ দেখিয়াছিল, তঁহার দুই চোখ জবার মত ঘোর রক্তবর্ণমড়া পোড়াইতে গিয়া তাহারা যে এই তিন দিন অবিশ্রাম গাজা খাইয়াছে সে কথা তাহার অগোচর রহিল না । মিনিট পাঁচ-ছয় এই ভাবে থাকিয়া কাছে সরিয়া জিজ্ঞাসা করিল, খাওয়া হয়নি ? নীলাম্বর বলিল, না । বিরাজ আর কোন প্রশ্ন না করিয়া রান্নাঘরে যাইতেছিল, নীলাম্বর সহসা ডাকিয়া বলিল, শোন, এত রাত্তিরে কোথায় গিয়েছিলে ?
পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০০
অবয়ব