পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ መዓ বিৱাজ-বেী যে সুমুখে আসেন, কথা কন, এ সমস্ত র্তাহার কাছে প্ৰত্যক্ষ সত্য ছিল । তাই ইতিপূর্বে গোপনে এই পটখানিকে কথা কহাইবার প্রয়াস সে ষে কত করিয়াছে, তাহার অবধি নাই, কিন্তু সফল হয় নাই। অথচ, এই নিস্ফলতার হেতু সে নিজের অক্ষমতার উপরেই দিয়া আসিয়াছে, এমন সংশয় কোন দিন মনে উঠে নাই, পাট সত্যই কথা কহে কি না ! লেখা পড়া সে শিখে নাই। বর্ণপরিচয় হইয়াছিল, তার পর, বিরাজের কাছে রামায়ণ, মহাভারত পড়িতে এবং একটু আধটু চিঠিপত্র লিখিতে শিখিয়াছিল-শাস্ত্র বা ধৰ্ম্মগ্রন্থের কোন ধার ধারিত না, তাই ঈশ্বর সম্বন্ধীয় ধারণা তাহার নিতান্তই মোটা ধরণের ছিল। অথচ এ সম্বন্ধে কোন যুক্তি তর্কও সহিতে পারিত না । ছেলে-বেলায় এই সব লইয়া কখনও বা পীতাম্বরের সহিত কখনও বা বিরাজের সহিত তাহার মারপিট হইয়া যাইত । বিরাজ তাহার অপেক্ষা মাত্র চার বছরের ছোট ছিল--তেমন মানিত না। একবার সে মারা খাইয়া নীলাম্বরের পেট কামড়াইয়া রক্ত বাহির করিয়া দিয়াছিল। শাশুড়ী উভয়কে ছাড়াইয়া দিয়া বিরাজকে ভৎসনা করিয়া বলিয়াছিলেন, ছি মা, গুরুজনকে আমন করে কামড়ে দিতে নেই । বিরাজ কঁাদিতে কঁাদিতে বলিয়াছিল, ও আমাকে আগে মেরেছিল। তিনি পুত্রকে ডাকিয়া শপথ দিয়াছিলেন, বিরাজের গায়ে কখনো যেন সে হাত না তোলে। তখন তাহার বয়স চোদ্দ বৎসর, আজ প্ৰায় ত্রিশ চলিয়াছে- সে অবধি মাতৃভক্ত নীলাম্বর সেদিন পৰ্য্যন্ত মাতৃ-আজ্ঞা লঙ্ঘন कां नांदे । আজ স্তব্ধ হইয়া বসিয়া পুরাতন দিনের এই সব বিস্মৃত কাহিনী স্মরণ করিয়া প্ৰথমে সে মায়ের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাহিয়া তাহার জাগ্ৰত ঠাকুরকে দুটা সোজা কথায় বিড় বিড় করিয়া বুঝাইয়া বলিতৃেছিল, অন্তৰ্যামী ঠাকুর! তুমি ত সমন্তই দেখতে পেয়েছ। সে যখন এতটুকু অপরাধ করেনি,