পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

YS विन्नाछ-६यो মাছ ধরিবার কাঠের মাচা তাহার চোখে পড়িয়া গেল । এগুলো এতক্ষণ ঠিক যেন নিঃশব্দে চােখ মেলিয়া তাহায়ই দৃষ্টি অপেক্ষা করিয়াছিল, চোখাচোখি হইবামাত্রই ইসারা করিয়া ডাক দিল। বিরাজ সহসা ভীষণ কণ্ঠে বলিয়া উঠিল, সাধু পুরুষ আমার হাতের জল পৰ্যন্ত খাবেন না, কিন্তু ঐ পাপিষ্ঠ খাবে তা ! বেশ ! কামারের জাতার মুখে জলন্ত কয়লা যেমন করিয়া গৰ্জিয়া জলিয়া ছাই হয়, বিরাজের প্রজ্বলিত মস্তিষ্কের মুখে ঠিক তেমনই করিয়া তাহার অতুল অমূল্য হৃদয়খানি জলিয়া পুড়িয়া ছাই হইয়া গেল। সে স্বামী ভূলিল, ধৰ্ম্ম ভুলিল, মরণ ভুলিল, একদৃষ্টি প্ৰাণপণে ও-পারের ঘাটের পানে চাহিয়া রহিল। আবার কড়, কড়া করিয়া অন্ধকারে আকাশের বুক চিরিয়া বিদ্যুৎ জলিয়া উঠিল, তাহার বিস্ফারিত দৃষ্টি সন্ধুচিত হইয়া নিজের প্রতি ফিরিয়া আসিল, একবার মুখ বাড়াইয়া জলের পানে চাহিল, একবার ঘাড় ফিরাইয়া বাড়ীর দিকে দেখিল, তাহার পর লঘুহন্তে নিজের বাধা বাঁধন খুলিয়া ফেলিয়া চক্ষের নিমেষে অন্ধকার বনের মধ্যে মিশিয়া গেল। তাহার দ্রুত পদশব্দে কত কি সয়া সম্বা খসি খসা করিয়া পথ ছাড়িয়া সরিয়া গেল, সে ভ্ৰক্ষেপও করিল না-সে। সুন্দরীর কাছে চলিয়াছিল। পঞ্চানন ঠাকুর-তলায় তাহার ঘর, পূজা দিতে গিয়া সে কতবার তাহ দেখিয়া আসিয়াছে। এ গ্রামের বধু হইলেও শৈশবে এ গ্রামের প্রায় সমস্ত পথ ঘাটই সে চিনিত, অল্পকালের মধ্যেই সে সুন্দরীর রুদ্ধ জানালার क्षाएल शिघ्र iिgiईल । ইহার ঘণ্টা-দুই পরেই কাঙালী জেলে তাহার পানসীখানি ওপারের, দিকে ভাসাইয়া দিল। অনেক রাত্রেই সে পয়সার লোভে সুন্দরীকে ও-পারে পৌছাইয়া দিয়া আসিয়াছে, আজও চলিয়াছে, আজ শুধু একটির পরিবর্ভে দুটি রমণী নিঃশব্দে বসিয়া আছে। অন্ধকারে বিরাজের মুখ সে দেখিতে পাইল না, পাইলেও চিনিতে পায়িত না । তাহদের ঘাটের