বিরাজ-বেী የS?ኢ9 এক-আধটু ইঙ্গিত ভিন্ন কোন কথা বিরাজের সামনে উত্থাপন করিতে সাহস করে নাই। সুন্দরী নির্বোধ ছিল না ; সে বিরাজ-বেীকে চিনিত । বাহির হইতে এই বধুটিকে যতই মধুর এবং কোমল দেখাক না কেন, ভিতরের প্রকৃতি যে তাহার উগ্র এবং পাথরের মত কঠিন ছিল, সুন্দরী তাহা ঠিক জানিত। বিরাজের দেহে আরও একটা বস্তু ছিল, সে তাহার অপরিমেয় সাহস । তা সে মানুষই হ’ক, আর সাপ-খোপ ভূত-প্রেতই হ’ক, ভয় কাহাকে বলে তাহা সে একেবারেই জানিত না। সুন্দরী কতকটা সে কারণেও এতদিন আর তাহার মুখ খুলিতে नांद्र नाई। বিরাজ উনুনের কাঠাঁট ঠেলিয়া দিয়া ফিরিয়া চাহিয়া বলিল, আচ্ছা! সুন্দরী, তুই ত অনেকবার সেখানে গিয়েছিল, এসেছিল, অনেক কথাও কয়েছিল, কিন্তু আমাকে ত একটি কথাও বলিসনি ? সুন্দরী প্রথমটা হতবুদ্ধি হইয়া গেল, কিন্তু পরীক্ষণেই সামলাইয়া লইয়া কহিল, কে তোমাকে বললে মা, আমি অনেক কথা কয়ে এসেচি ? বিরাজ বলিল, “কেউ বলে নি, আমি নিজেই জানি। আমাদের কপালের পেছনে আরও দুটাে চোখ-কান আছে। বলি, কাল কটাকা বকশিস নিয়ে এলি! দশ টাকা ? সুন্দরী বিস্ময়ে অবাক হইয়া গেল। তাহার মুখের উপরে একটা পাণ্ডুর ছায়া পড়িল, উনুনের অস্পষ্ট আলোকেও বিরাজ তাহা দেখিল এবং সে যে কথা খুজিয়া পাইতেছে না, তাহাও বুঝিল । ঈষৎ হাসিয়া বলিল, সুন্দরী, তোর বুকের পাটা এত বড় হবে না যে, তুই আমার কাছে মুখ খুলবি ; কিন্তু কেন মিছে আনা-গোনা ক’রে টাকা খেয়ে শেষে বড়লোকের কোপে পড়বি ? কাল থেকে এ বাড়ীতে আর ঢুকিসনে। তোর হাতের জল পায়ে ঢালতেও আমার ঘেন্না করে। এতদিন তোর সব কথা জানতুম না, দুদিন আগে তাও শুনেছি ; কিন্তু যা, আঁচলে
পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৮
অবয়ব