GtW<b বিরাজ-বেী বিরাজ পূর্ববৎ কঠিনভাবে বলিল, এই যে চোখ বেশ রাঙা হয়েছে, আবার ঐগুলো খেতে সুরু করেছ ? নীলাম্বর কথা কহিল না। ভয়ে চোখ নিচু করিয়া কাঠের মূৰ্ত্তির মত বসিয়া রহিল। একে ত চিরদিনই সে তাহাকে ভয় করে, তাহাতে কিছুদিন হইতেই বিরাজ এমনই একরাশি উত্তপ্ত বারুদের মত হইয়া আছে যে, কখন কি ভাবে জলিয়া উঠিবে তাহা আন্দাজ পৰ্য্যন্ত করিবার যো ছিল না। বিরাজও কিছুক্ষণ স্থির হইয়া দাড়াইয়া থাকিয়া বলিল, সেই ভাল, গাজী-গুলি খেয়ে বোম-ভোলা হয়ে ব’সে থাকার এই তা সময়, বলিয়া বাড়ীর মধ্যে চলিয়া গেল। সেদিন গেল, তার পরদিন নীলাম্বর আর থাকিতে না পারিয়া সমস্ত লজ-সঙ্কোচ ত্যাগ করিয়া সকাল-বেলা পীতাম্বরকে বাহিরের ঘরে ডাকিয়া আনিয়া বলিল, পুটির শ্বশুর ত একটা জবাব পৰ্যন্ত দিলে না—তুই একবার চেষ্টা করে দেখা না, যদি বোনটিকে দুটাে দিনের তরেও আনতে পারিস। পীতাম্বর দাদার মুখপানে চাহিয়া বলিল, তুমি থাকতে আমি আবার কি চেষ্টা করব ? নীলাম্বর তাহার শঠতা বুঝিয়া ভিতরে ক্রুদ্ধ হইল ; কিন্তু সে ভাব যথাসাধ্য গোপন করিয়া বলিল, তা হোক, যেমন আমার, তোরাও ত সে তেমনই বোন। না হয়, মনে কর না, আমি ম’রে গেছি, এখন, তুই শুধু একলা আছিস । পীতাম্বর কহিল, যা সত্যি নয়, তা, তোমার মত আমি মনে করতে পারিনে। আর তোমাকে চিঠির জবাব দিলে না, আমাকেই বা দেবে কেন ? নীলাম্বর ছোটভাইয়ের এ কথাটাও সহ্য করিয়া লইয়া বলিল, যা সত্যি নয়, তাই আমি মনে করি ? আচ্ছা তাই ভাল, এ নিয়ে তোর সঙ্গে আমি ঝগড়া করতে চাই নে, কিন্তু আমার চিঠির জবাব দেয় না। এই জন্যে যে,
পাতা:বিরাজবৌ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৫
অবয়ব