পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
বিলাত-প্রবাসী

ইংরেজজাতির মনে সন্ন্যাস-আশ্রমের উপর বিদ্বেষ জন্মিয়াছে। কালেজ ইংলণ্ডের রাজা সন্ন্যাসীদিগকে দূর করিয়া মঠ সকল ভাঙ্গিয়া দিয়াছেন ও দেবোত্তর সম্পত্তিগুলি বাজেয়াপ্ত করিয়াছেন। কাজে কাজেই আয়তনগুলি এখন সরকারি খাসে আসিয়াছে। এই মঠ ভাঙ্গার পর আরও গুটিকয়েক কালেজ হইয়াছে। এখন এখানে সর্ব্বশুদ্ধ তেইশটি কালেজ। প্রত্যেক কালেজেই ছাত্রাবাস আছে। তবে সকল ছাত্রেরই থাকিবার জায়গা হয় না। বাকি ছাত্রেরা বাসা করিয়া থাকে। কিন্তু সেই বাসা সকল কর্ত্তৃপক্ষের দ্বারা নির্দ্দিষ্ট হয় ও কতক পরিমাণে শাসিত হয়। কতকগুলি লোক নিযুক্ত আছে— যাহারা ছাত্রদের বাসার তত্ত্বাবধারণ করে এবং রাস্তা ঘাটে তাহাদের চালচলনের উপর নজর রাখে। তবে ছাত্রদের স্বাধীনতা স্বেচ্ছাচারিতা খুব। অধ্যাপকদের সামনে খুব চুরুট টানে ও তামাক (পাইপ) ফোঁকে। তারা থিয়েটারে প্রায়ই যায় ও সেখানে গিয়ে এমনি বেল্লেলাগিরি করে যে দেখে পিলে চমকে যায়। অধ্যাপক মহাশয়েরা সেই রসরঙ্গের ভিতর ডুবে লুপ্তপ্রায় হোয়ে বোসে থাকেন। ছাত্রেরা সুরাপান করে কিন্তু মাতাল হোলেই শাস্তি পায়। তবে কখন কখন নেশাটা একটু গোলাপিরকম হোলে ছাত্র মহাশয় দরজা জানালায় খড়খড়্ শব্দ কোরে অধ্যাপকদের ভীতি উৎপাদন বা নিদ্রাভঙ্গ করিতেও ছাড়েন না। বিলাতী সভ্যতা এইরূপই।

এখানে শীতকালে আটটার সময় সূর্য্য উঠে। তবে প্রায়ই উঠে না— মেঘে ঢাকা থাকে। আটটার সময় ছেলেদের গির্জ্জা হয়। বেলা নয়টার সময় আহার। দশটা হইতে একটা পর্য্যন্ত কালেজ। আবার আহার। তার পর দুটা থেকে চারিটা পর্য্যন্ত খুব খেলা বা নৌকাবাহন—যাহার যা ইচ্ছা। পাঁচটার সময় চা পান। আবার তার পর