পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সন্ন্যাসীর চিঠি।
৩৩

সম্পাদকের নিকট লইয়া গিয়াছিলাম। তিনি প্রথমে প্রবন্ধটি গ্রহণ করিতে স্বীকার করিলেন না—কেননা তাঁহার মাসিক পত্রের জন্য এক বৎসরের কাপি জমে পােড়ে আছে। কিন্তু আমার সঙ্গে আলাপ করিতে লাগিলেন। বেদান্তের কথা শুনে হেসে বলিলেন—খুব একটা ব্যাপার বটে, কিন্তু এখনকার কালে ও সব চক্ষুবুজুনি দর্শন আর চলিবে না।—কথা চলিতে লাগিল। কিছু আকৃষ্ট হোলেন। আমায় আর একদিন কথাবার্ত্তার জন্যে নিমন্ত্রণ করিলেন। আমার প্রবন্ধটা রেখে এলাম তার পরে যে দিন গেলাম সে দিন তিনি বলিলেন—প্রবন্ধতে নূতন কথা আছে—যে রকম ব্যাখ্যা করা হোয়েছে তাতে বােধ হয়―বেদান্ত পাশ্চাত্য দর্শনের অপেক্ষা অধিকতর সঙ্গত—আমি এ প্রবন্ধ প্রকাশ করিব।―আমার প্রবন্ধে জীব ও জগৎ যে মিথ্যা ও মায়ার রাজ্যে যে কোন স্বাধীনতা নাই—তাহাই প্রতিপাদিত হইয়াছে। আর পাশ্চাত্য দর্শনে যে মায়িক অলীকতার প্রতিবাদ আছে তাহারও খণ্ডন করা হইয়াছে। যাহা হউক আনন্দের বিষয় যে আমার প্রবন্ধ মাইণ্ডের মতন সুপ্রসিদ্ধ পত্রিকায় বাহির হইবে। আরও আরও অনেক বিদ্বান্ এখানে আছেন যাঁরা দেশের মাথা — কিন্তু ভারতের দর্শন-জ্ঞান তাঁদের কাছে কোন পুরাণ কালের বৃহৎ জন্তুর (ম্যামথের) মত—মিউজিয়মে রেখে দিবার জিনিস। মােক্ষমূলর অনেক দিন ঊক্ষপারে পরিশ্রম করিয়াছেন বটে কিন্তু তার ফল দাঁড়িয়েছে যে বেদ অল্প-অল্প-সভ্য কৃষকদের গান—উপনিষদ সকল প্রাণের উচ্চ আকাঙ্ক্ষামাত্র—বর্ণাশ্রমধর্ম্ম রাহ্মণদের অত্যাচার—যা কিছু ভারতবর্ষের সার তা বৌদ্ধধর্ম্ম আর জগৎ অলীক—এটা খুব সাহসের কথা বটে তবে প্রলাপ। বেদান্তের মহাবাক্য—সর্ব্বং খল্বিদং ব্রহ্ম ও যেমন রজ্জু ভ্রমবশত সর্পরূপে প্রতিভাত হয় তেমনি ব্রহ্মই অবিদ্যা প্রভাবে দ্বৈত-প্রপঞ্চরূপে প্রতিভাত—এই সার