পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
 বিলাত-প্রবাসী

 সন্ন্যাসীর চিঠি।

(৫)

আমি গতবারে লিখিয়াছি যে পঞ্জাবে এখানের চেয়ে শীতের প্রকোপ অধিক। তিন চারি দিন থেকে আর তাহা বলা চলে না। একেবারে হাড়ভাঙ্গা শীত পোড়েছে। গত সপ্তাহে দু'তিনদিন বৃষ্টি হয়। সেই জন্য নদী উপ্‌চে উঠায় তটস্থ মাঠগুলি জলময় হোয়েছিল। শীতের চোটে মাঠের জল সব জমে বরফ হোয়ে গেছে। প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড তুষারধবল ভূমিখণ্ড সূর্য্যকিরণে রঞ্জিত হোয়ে, অপ্সরাদের নর্ত্তন-প্রাঙ্গণের ন্যায় দেখাইতেছে। যথার্থই এখানে নৃত্য হয়। চক্রবিশিষ্ট কাষ্ঠ বা লৌহপাদুকার সাহায্যে নরনারী এই বরফের উপর দিয়া রথের মত ঘর্ঘর শব্দে অতিবেগে ছুটিয়া বেড়ায় বা ঘুরপাক খায়। নদী দুটি প্রায় জমে এসেছে। আর দু-এক দিন এই রকম ঠাণ্ডা থাকিলেই চোলে পারাপার হওয়া যাবে। কাল সন্ধ্যার সময় নদীর ধারে বেড়াতে গিয়াছিলাম। বরফের বড় বড় থান নিয়ে নদীর মাঝখানে ছুড়িয়া ফেলিলাম। সব চূরমার হোয়ে গেল—কেন না মাঝখানেও জল পাথরের মত জমে গেছে। আমার খুব ফুর্ত্তি। শীত বেশ মিঠাকড়া লাগিল। আর আমি একেশ্বর রাজার মত বিহার করিতে করিতে আনন্দে ডুবে গেলাম। একেশ্বর—কেন না ঠাণ্ডায় লোকজন অতি অল্পই সন্ধ্যার সময় নদীর ধারে বেড়াতে এসেছিল। ইংরেজেরা ভারি শীতকাতুরে। মদ খায় মাংস খায়—তবু হি হি হি করে; আর আগুনের কাছে বসিতে