পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সন্ন্যাসীর চিঠি।
৪৫

এই অশ্বযান ছাড়া তিন রকম বাষ্পযান আছে। এক সােজাসুজি রেলগাড়ি আর এক নীচভুঁই রেল আর তৃতীয় পাতাল গাড়ি। নীচভুঁই রেল বড় কিছু আশ্চর্য্য কারখানা নয়। রাস্তার দশ-বিশ হাত নীচে দিয়ে গাড়ি চলে। মাঝে মাঝে টনেল সুড়ঙ্গ আছে কিন্তু প্রায়ই মাথার দিক খােলা। রাস্তার লােক সাঁকো বা পুলের উপর দিয়ে সেই সব রেলরাস্তা পার হয়। কিন্তু আজব কারখানা সেই পাতাল গাড়ি। এ নামটি আমি রেখেছি। ইংরেজিতে টিউব অর্থাৎ সুড়ঙ্গ রেল বলে। এই পাতাল রেল আন্দাজ ১২ মাইল লম্বা হবে। জমির ৬০ হাত নীচে এক সুড়ঙ্গ কাটা আছে সেই সুড়ঙ্গ দিয়ে রেলগাড়ি যাতায়াত করে। মাইলে মাইলে ইষ্টিশাণ। দু-আনা ভাড়া―তা এক মাইলই হােক আর দশ মাইলই হােক। ধনী-দরিদ্র বড়―ছােট সব এক শ্রেণী। টিকিট কিনে একটি কাচের বাক্সে ফেলে দিতে হয়। আর একটী লােহার ঘরে গিয়ে দাঁড়াতে হয়। তারপর একজন কর্ম্মচারী এসে কি একটা কল টেপে আর অম্‌নি সুড় সুড় কোরে লােহার ঘরটি নীচে নামে। প্রায় পঞ্চাশ ৫০ হাত নীচে গিয়ে সেই ঘরটি আট্‌কে যায়। তার পর পাথরের সিড়ি দিয়ে বাকি ১০ হাত নেবে প্লাটফরম পাওয়া যায়। বৈদ্যুতিক আলােয় একেবারে কুরখুট্টি। সুড়ঙ্গের এক মুখ থেকে ক্রমাগত কলের দ্বারা হাওয়া চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাই হাঁপ ধরে না। কিন্তু হাওয়াটা যেন―একটু ঘন-ঘন বােধ হয়। দু মিনিট তিন মিনিট অন্তর গাড়ি। গাড়িও একবারে আলােয় ভরা। গাড়ি থেকে নেমে আবার লােহার ঘরে গিয়ে দাঁড়ালেই সুড় সুড় কোরে উপরে উঠা যায়। ইহাকেই বলে পাতাল গাড়ি। এটা একটা সভ্যতার বাহাদুরি বা ডানপিটেগিরি। পাতাল দিয়ে রেল চালানাে কিছু আবশ্যক ছিল না। এজন্য এখানকার লােকে বড় জ্বালাতন হােয়েছে। যাদের