পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
 বিলাত-প্রবাসী

 সন্ন্যাসীর চিঠি।

(৮)

এখানে এখন রাত নয়টা পর্যন্ত গােধূলি থাকে। আবার ওদিকে রাত তিনটের সময় বেশ ফর্‌সা হয়। ঠিক ধর্‌তে গেলে ঘণ্টা চারি-পাঁচ রাত থাকে। সূর্য্যের কিরণকে রৌদ্র বলে―কিন্তু এখানে একেবারে রুদ্রভাব নেই। দা-কাটা কড়া তানাকে আর বাবু মহলের ভ্যালসায় যত তফাৎ আমাদের দেশের এবং এখানকার রােদে তত তফাৎ। তবে বেলা দুটা-তিনটার সময় একটু মিটে কড়া রকম হয়। সেই সময় গাছের তলায় বড় আরাম। হাওয়া যে কত মিষ্টি লাগে তা বলে উঠা দায়। এখানে গ্রীষ্মে হাওয়া খাওয়া আর মধু খাওয়া দুই এক।

কালেজের ছাত্রদের খুব নৌকা-বহার ধুম পড়ে গেছে। অধ্যাপকদের কন্যারা এবং সহরবাসী গৃহস্থের মেয়েরা সব অপরাহ্ণে নদীর ধারে বেড়াতে আসে। যুবক ছাত্রেরা এবং ঐ যুবতীরা নৌকারোহণ কোরে কখন বা ধীর ধীরি কখন বা দ্রুতগতি দূরে দূরে ভেসে চলে যায়। কেহ কেহ আবার কোন তীর তরুচ্ছায়ায় তরীটিকে বেঁধে অলসতার মাধুর্য্য সম্ভোগ করে। একটা কড়া নিয়ম আছে। ছাত্রেরা বড় ঘরের বা মধ্যবিৎ গৃহস্থের মেয়েদের সঙ্গে মিশিতে পারে কিন্তু যে মেয়েরা দোকানে কাজ করে নীচ ঘরের—তাদের সঙ্গে রাস্তায় কথাটি পর্যন্ত কহিলে ছাত্রটী শাস্তি পায়। সন্ধ্যার পর ছয় সাত জন দারােগা (proctor) ঘুরে বেড়ান।