পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সন্ন্যাসীর চিঠি।
৫৯

পোষাক মানে―অর্দ্ধেক বুক ও হাত খোলা। আমার ত দেখেই আক্কেল গুড়ুম। কোন রকমে কপি ও আলু-সিদ্ধ (বিলাতে আমার ঐ ভরসা) খেয়ে চম্পট দিলাম। মিষ্টর ষ্টর্ডি বোলে একজন আছেন তিনি খুব হিন্দুস্থান ভক্ত। তিনি অনেক চেষ্টা করেছিলেন যাতে হিন্দুর দর্শন জ্ঞান চলে কিন্তু বিফল মনোরথ হয়েছেন। তিনিও বলেন কতকগুলি মেয়ে মানুষ ছাড়া আর কেউ বড় মনোযোগ দেয় না। তিনি তাই হাল ছেড়ে দিয়ে বসে আছেন।

কিসে এখানকার বিদ্বানেরা বেদান্ত দর্শনের আস্বাদন পায় তার জন্য আমাদের বিশেষ চেষ্টিত হওয়া উচিত। অক্ষফোর্ড ও কেমব্রিজ সরস্বতীর দুটী পাশ্চাত্য পীঠস্থান। কিন্তু এখানকার কোন দার্শনিক অধ্যাপক হিন্দুদর্শনের বিষয় কিছুই জানেন না। যা বা জানেন তা সব বিপরীত। ডাক্তার কোয়ার্ড প্রভৃতি দর্শনিকেরা তাঁদের গ্রন্থে স্পষ্টাক্ষরে লিখেছেন যে বেদান্ত এক পুরাণ কালের দর্শন—এখনকার বিদ্যার কাছে তাহা আর খাটে না। এ সব দার্শনিকদের কাছে মোক্ষমুলর প্রভৃতি ভাষা-তত্ত্ববিৎ দাঁড়াইতে পারেন না। এদের কথা সকলেই গ্রাহ্য করে। অক্ষফোর্ডে আমি অল্পস্বল্প চেষ্টা করেছি তাহার আভাস আগেই দিয়েছি। অল্পদিন হোল কামব্রিজে নিমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছিলাম। ত্রিনীতি কালেজে তিনটি বক্তৃতা করি। বিষয়—(১) হিন্দুর নির্গুণ ব্রহ্ম (২) হিন্দুর ধর্ম্মনীতি (৩) হিন্দুর ভক্তিতত্ত্ব। প্রসিদ্ধ দার্শনিক) Dr.Metaggarp) সভাপতি ছিলেন। নিজের সুখ্যাত করতে নেই বক্তৃতা তিনটি খুব জমেছিল। অনেক অধ্যাপক ও ছাত্র উপস্থিত ছিল। বক্তৃতার ফল এই দাঁড়াইয়াছে যে অধ্যাপকেরা পরামর্শ করছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ্চাত্য দর্শনের সঙ্গে বেদান্তদর্শন শিক্ষা দেওয়া যাবে কিনা। যদি সুপরামর্শ হয় তা হোলেই মঙ্গলনহিলে আবার উঠে পড়ে লাগ্‌তে হবে। এক দিনের কর্ম্ম