পাতা:বিলাপ - অমৃতলাল বসু.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিলাপ!

  ৩য় নাগ। যথার্থ যথার্থ; যাবতীয় লোককে এমন শোকাকুল হইতে আর ইদানীং দেখা যায় না। তবে দুই একটী লোক একটু কাণাঘুষো কচ্ছিল—তারা খুব দুঃখ কচ্ছিলও বটে— বিদ্যাসাগর মহাশয়ের গুণের কথা অনেক বলছিল, তবে ঐ একটু খুঁৎ বলাবলি কচ্ছে, যে বিধবা-বিবাহের মতটা প্রচার না কল্লে চন্দ্রে আর কলঙ্ক থাকিত না।

  ৪র্থ নাগ। যারা একথা বলে তাদের দৃষ্টি নিতান্ত অন্ধ, চরিত্রবিশ্লেষণের শক্তি তাহাদের আদৌ নাই, মনুষ্যর হৃদয়ের গভীরতম তলদেশে তাহাদের প্রবেশ করিবার অধিকার জন্মে নাই। আমি স্বয়ং একজন বিধবা-বিবাহের পক্ষপাতী নই, ব্রহ্মচর্য্যা - বলম্বিনী বিধবা আমার চক্ষে মানবী নয়—দেবী! যখন দেখি দৈহিক বৃত্তি সমুচয় পতির চিতায় ভষ্ম করিয়া জালাময় প্রাণকে দেহে আবদ্ধ করতঃ স্বামীর স্বৰ্গকামনায় বিধবাগণ ব্রহ্মচর্য্য পালন করেন, তখন তাঁহদের চরণে মস্তক স্বতঃ অবনত হয়। কিন্তু যখন বিদ্যাসাগর বঙ্গের বিধবার দুঃখে কাতর হন, তখন সে ব্রহ্মচর্য্যের শিক্ষা কয় সংসারে ছিল? তখন পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রথম জোয়ারের জলোচ্ছাসে ইংরাজ সমাজের যত মলা আবর্জ্জনাদি ভাসিয়া আসিয়া আমাদের সমাজের শান্ত সলিলকে কলুষিত করিতেছিল, সেই পুরাতন হিন্দুসমাজের পবিত্রভাব অন্তৰ্হিত প্রায় হইয়াছিল, সহধর্ম্মিনী বিলাসিনীতে পরিণত হইয়াছিল, বিদ্যাসুন্দর নিধুর টপ্পা অন্তঃপুরে রামায়ণ মহাভারতের স্থান অধিকার করিতেছিল, ভোগ বিলাস স্বার্থসুখ ইষ্টমন্ত্রের কার্য্য করিতে আরম্ভ করিল; পিতা রোহিত মৎস্যোর মুণ্ড উদরসাত করিলেন, তৃতীয় পক্ষের বিমাতা সেই পাতে