পাতা:বিলাসী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ম্যালেরিয়ার কথাটা না হয় নাই পাড়িলাম। সে যাক, কিন্তু ঐ চার ক্রোশ হাঁটার জ্বালায় কত ভদ্রলোকেই যে ছেলেপুলে লইয়া গ্ৰাম ছাড়িয়া শহরে পালান তাহার। আর সংখ্যা নাই । তার পরে একদিন ছেলেপুলের-পড়াও শেষ হয় বটে, তখন কিন্তু শহরের সুখসুবিধা রুচি লইয়া আর তাদের গ্রামে ফিরিয়া আসা চলে না। কিন্তু থাক এ-সকল বাজে কথা। ইস্কুলে যাই-দু’ক্রোশের মধ্যে এমন আরও ত দু’তিনখানা গ্রাম পার হইতে হয়। কার বাগানে আম পাকিতে শুরু করিয়াছে, কোন বনে বঁইচি ফল অপৰ্যাপ্ত ফলিয়াছে, কার গাছে কঁঠাল এই পাকিল বলিয়া, কার মৰ্তমান রম্ভার কঁাদি কাটিয়া লইবার অপেক্ষা মাত্র, কার কানাচে ঝোপের মধ্যে আনারসের গায়ে রঙ ধরিয়াছে, কার পুকুর-পাড়ের খেজুর-মেতি কাটিয়া লইলে ধরা পড়িবার সম্ভাবনা অল্প, এইসব খবর লইতেই সময় যায়, কিন্তু আসল যা বিদ্যা-কামস্কটিকার রাজধানীর নাম কি, এবং সাইবিরিয়ার খনির মধ্যে রূপা মেলে, না। সোনা মেলো-এ-সকল দরকারী তথ্য অবগত হইবার ফুরসতই মেলে a কাজেই একজামিনের সময় এডেন কি জিজ্ঞাসা করিলে বলি পারসিয়ার বন্দর, আর হুমায়ুনের বাপের নাম জানিতে চাহিলে লিখিয়া দিয়া আসি তোগলিক খা — এবং আজ চল্লিশের কোঠা পার হইয়াও দেখি, ও-সকল বিষয়ে ধারণা প্ৰায় একরকমই আছেতার পরে প্রোেমশনের দিন মুখ ভার করিয়া বাড়ি ফিরিয়া আসিয়া কখনো বা দল ৰাধিয়া মতলব করি, মাস্টারকে ঠ্যাঙানো উচিত, কখনো বা ঠিক করি, আমন বিশ্ৰী স্কুল ছাড়িয়া দেওয়া কর্তব্য। আমাদের গ্রামের একটি ছেলের সঙ্গে মাঝে মাঝেই ইস্কুলের পথে দেখা হইত। তার নাম ছিল মৃত্যুঞ্জয় । আমাদের চেয়ে সে বয়সে অনেক বড় । থার্ড ক্লাসে পড়িত । কবে যে সে প্ৰথম থার্ড 8