পাতা:বিলাসী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শোয়ে যত্ন করিয়া বসাইল । লোকটা প্ৰথমে মা-শোয়ের ঐশ্বর্যের কথা তুলিল, পরে তাহার বংশের কথা তাহার পিতার খ্যাতির কথা, তাহার রাজদ্বারে সম্রামের কথা- এমনি কত কি সে অনর্গল বকিয়া যাইতে লাগিল । এ-সকল কতক বা সে শুনিল, কতক বা তাহার অন্যমনস্ক কানে পৌছিল না । কিন্তু লোকটা শুধু বলিষ্ঠ এবং অতি সাহসী ঘোড়সওয়ারই নয়, সে অত্যন্ত ধূর্ত। মা-শোয়ের এই ঔদাসীন্য তাহার অগোচর রহিল না । সে মান্দালের রাজ-পরিবারের প্রসঙ্গ তুলিয়া অবশেষে যখন সৌন্দর্যের আলোচনা শুরু করিল এবং কৃত্রিম সারল্যে পরিপূর্ণ হইয়া এই রমণীকে লক্ষ্য এবং উপলক্ষ্য করিয়া বারংবাব তাহার রূপ ও যৌবনের ইঙ্গিত করিতে লাগিল, তখন তাহার মনে মনে আতিশয় লজ্জা করিতে লাগিল, বটে, কিন্তু একটা অপরূপ আনন্দৰ ও গৌরব অনুভব না করিয়াও থাকিতে পারিল না । এবং আলাপ শেষ হইলে পো-থিন বিদায় গ্ৰহণ করিল, তখন আজিকার রাত্রির জন্যও সে আহারের নিমন্ত্রণ লইয়া গেল । কিন্তু চলিয়া গেলে, তাহার কথাগুলা মনে মনে আবৃত্তি কবিয়া মা-শোয়ের সমস্ত মন ছোট এবং গ্লানিতে ভরিয়া উঠিল এবং নিমন্ত্রণ কবিয়া ফেলার জন্য বিরক্তি ও বিতৃষ্ণার অবধি রহিল না। সে তাড়াতাড়ি আরও জন-কয়েক বন্ধু-বান্ধবকে নিমন্ত্ৰণ করিয়া চাকর দিয়া চিঠি পাঠাইয়া দিল । অতিথিরা যথাসময়েই হাজির হইলেন এবং আজও অনেক হাসি-তামাশা, অনেক গল্প, অনেক নৃত্যগীতে: সঙ্গে যখন খাওয়াদাওয়া শেষ হইল, তখন রাত্রি আর বড় বাক৷ नादे ! ক্লান্ত পরিশ্রম হইয়া সে শুইতে গোেল, বিস্তু চোখে ঘুম আসি৷ না । কিন্তু বিস্ময় এই যে, যাহা লইয়া তাহার এতক্ষণ এমন করিয়া কাটিল, তাহার একটা কথাও আর মনে আসিল না । সে-সকল ( 0