পাতা:বিশ্বকোষ অষ্টাদশ খণ্ড.djvu/৫৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যানগর ১৪৪৬ খৃষ্টাব্দে তদীয় পুত্র মল্লিকার্জন সিংহাসনাধিরূঢ় হইয়া ১৪৪৫ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত রাজ্যশাসন করেন। মল্লিফাৰ্জ্জুন বিবিধ নামে অভিহিত হইতেন-ইন্মাড়ি বৌদ্ধ দেবরায়,ইমাড়ি দেবরায়, ইমাড়ি দেবরায়, বীর প্রতাপ দেবরায় । শ্রীশৈলে যে মল্লিকাজুন দেব আছেন, তাহার নাম অনুসারেই ইহার নামকয়ণ হয়। মিন্মান দগুনায়ক ই হার প্রধান মন্ত্রী ছিলেন। ইনি লোকামুরক্ত রাজা ছিলেন। ১৪৬৪ খৃষ্টাব্দে ইহার একটা পুত্র জন্মে। এই পুত্রের সম্বন্ধে সবিশেষ কিছুই জানা যায় না। মল্লিকার্জুন স্বধৰ্ম্মনিরত ছিলেন, ইহার দানও বথেষ্ট ছিল । রায়বংশাবলীতে মল্লিকার্জুনের স্থলে রামচন্দ্র রাষ্ট্রর নাম দৃষ্ট হয় । সম্ভবতঃ রামচন্দ্র রায় এই মল্লিকার্জুনেরই নামান্তর । দ্বিতীয় দেবরায় দুই স্ত্রীর পাণিগ্রহণ করেন। প্রথম পক্ষের স্ত্রী পল্লবীদেবীর গর্ভে মল্লিকার্জুন জন্মগ্রহণ করেন। অপর স্ত্রী সিংহলাদেবীর গর্ভে বিরূপক্ষের জন্ম। মল্লিকার্জুনের পরলোকের পর ১৪৬৯ হইতে ১৪৭৮ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত বিরূপাক্ষ বিদ্যাজিরাপীক্ষ নগরের শাসনভার গ্রহণ করেন। অধুনা এ সম্বন্ধে বারখানি শিলালিপি প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে। মল্লিকার্জন ও বিরূপক্ষের রাজ্যশাসন সম্বন্ধে ঐতিহাসিক ঘটনা সবিশেষ জানা যায় না।-ইহার কি কাৰ্য্য করিয়াছিলেন, ইহাদের সময়ে | প্রজাদের অবস্থাই বা কেমন ছিল, ইহাদের শক্তিই বা কি পরিমাণে চালিত হইত, ইহাদের অধীন কোন কোন রাজন্তবর্গ । প্রদেশসমূহ শাসন করিতেন, কিরূপেই বা ইহাদের মৃত্যু ঘটিল এবং কিরূপেই বা ইহাদের বংশের পরিবর্তে নুতন লোক সহস রাজ্যে প্রবেশ করিয়া রাজসিংহাসন অধিকার করিল, সেই সকল ঘটন কালের অন্ধকারগর্ভে বিলীন হইয়াছে। এখনও সেই সকল ঘটনার উপর কোনও প্রকার ঐতিহাসিক আলোকরেখ নিপতিত হয় নাই। ১৪৬২ খৃষ্টাব্দে মহম্মদশাহ বাহ্মণী বেলগাও কাড়িয়া লইলেও বিরূপক্ষে দক্ষিণদিকে মসলিপত্তনে স্বরাজ্যবিস্তার এবং যুমুফআদিলশাহকে বাহ্মণীরাজ্যের বিরুদ্ধে সাহায্য l করিয়াছিলেন । একখানি শিলালিপিতে স্পষ্ট লিখিত আছে, মহারাজাধিরাজ রাজা পরমেশ্বর শ্ৰীবীরপ্রতাপ বিরূপাক্ষ মহারায়ের শাসন সময়ে রাজ্যমধ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধি বিরাজিত ছিল। এই সময়ে রাজমন্ত্রী নায়ক অমরনায়ক সম্রাটেয় আদেশে অগ্রহার অমৃতাভপুরে প্রসন্নকেশব দেবমন্দিরের নিকট একটি গোপুর নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। ১৪৭৮ খৃষ্টাব্দে এই শিলালিপি লিখিত হয়। এইরূপ আরও কয়েকখানি শিলালিপি দ্বারা জানা যায় যে, বিরূপাক্ষ রায় ১৪৭৮ খৃষ্টান্ধ পর্যন্ত রাজ্যশাসন করেন। বিরূপক্ষই সঙ্গমবংশীয় নৃপতিগণের শেষ রাজা । অতঃপর [ ৫৭৯ ] বিদ্যানগর অপর একজন প্রভাবশালী পুরুষ বিষ্ঠানগরের রাজসিংহাসন স্বীয় বলে অধিকার করেন। এতক্ষণ আময়া বিদ্যানগরের যে সঙ্গম-রাজবংশের ভূপতিদের নাম ও শাসনের কথা উল্লেখ করিলাম, ইহার কোন বংশসম্ভৃত, সঙ্গমরাজবংশের ইহা লইয়া অনেক মতভেদ দৃষ্ট হয়। কেহ উৎপত্তি বলেন, ইহার দেবগিরিয়ু যাদববংশ-সভূত, অপর কাহারও মত এই যে, বনবাসীর কদম্ববংশ হইতেই ইহার উৎপন্ন। আবার এক শ্রেণীর ঐতিহাসিক বলেন, মহিমুরের হোয়শাল বল্লালবংশেই এই বংশের উৎপত্তি। আবায় আর এক সম্প্রদায় এক অদ্ভূত আখ্যান দ্বারা ইহাদের বংশবিনির্ণয় করিয়া রাখিয়াছেন । ইহার বলেন, বরঙ্গল রাজাদেয় মেষপালকের অধ্যক্ষদ্বয় আনগুওঁী গ্রাম হইতে দক্ষিণপশ্চিমাভিমুখে যাইবার সময়ে মাধবাচার্য্যের অনুগ্রহসৃষ্টি লাভ করেন। তিনি স্বীয় নামে বিদ্যানগর সংস্থাপন করিয়া ছক্ক বা হরিহরকে বিদ্যানগরের সিংহাসনে অভিবিক্ত করেন। কিন্তু অধুনা যে একখানি শিলালিপি প্রাপ্ত হওয়া গিয়ছে, তাহাতে জানা যায় যাদববংশ হইতেই সঙ্গমরাজবংশ প্রাণ্ডুভূত। নরসিংহ রাজবংশ ] বিরূপাক্ষের মৃত্যুর পর সলুব নরসিংহ বিদ্যানগরের সিংহাসনাধিরূঢ় হন । এই নরসিংহের সহিত সঙ্গমরাজবংশের কোনও সম্বন্ধ ছিল না। নরসিংহ স্বীয় প্রতাপে অনধিকার স্থলে স্বীয় প্রভাব বিস্তার করিয়া বিদ্যানগরের রাজসিংহাসন অধিকার করেন। ঐতিহাসিকগণ নরসিংহের পুৰ্ব্বপুরুষদের নামোল্লেখ করিয়াছেন । নরসিংহের পিতামহের নাম তিন্ম, ইহার পত্নীর নাম দেবকী, পুত্রেয় নাম ঈশ্বর। নরসিংহ ঈশ্বরের পুত্র। তাহার মাতার নাম বুক্কাম । নরসিংহের আরও দুইটী নাম আছে—এক লাম নরেশ, অপর নাম নরেশ অবনীলাল । ইহার দুই স্ত্রী—প্রথম স্ত্রীর নাম তিপাজীদেবী, অপরার নাম নাগলদেবী বা নাগাম্বিক । কেহ কেহ বলেন, নাগাম্বিক নর্তকী ছিলেন। ১৪৭৯ খৃষ্টাব্দ হইতে ১৪৮৭ খৃষ্টা পর্য্যস্ত নরসিংহ রাজ্যভোগ করেন । অতঃপর তাহার প্রথম পুত্র ধীর নরসিংহেন্দ্র ১৪৮৭ হইতে ১৫৩৮ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত বিদ্যানগরের সিংহাসনাধিরূঢ় ছিলেন। ই হার সেনানায়ক রামরাজ কণুলৈ যাইয়া তত্ৰত্য দুর্গাধ্যক্ষ যুমুফ আদিল সেবোয়কে সমরে পরাভূত ও দুর্গ অধিকার করিয়া লস্কররূপে (জায়গীরদার) কাৰ্য্য করিতে থাকেন । এই সময়ে বীরনরসিংহেঞ্জের तत्रारबब्र बांड কৃষ্ণদেবরায় তাহার মন্ত্রীর কাৰ্য্যে নিযুক্ত হইয়াছিলেন। কৃষ্ণদেব রায়ের অসাধারণ ক্ষমতা ছিল । তেলুগুভাষায় কৃষ্ণদেবের প্রশংসাসূচক ৰহল কবিতা আছে। ই হার একটী কবিতায়