পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

लकाc * [ سالا لا ] লক্ষণ 臺 শাবককে ব্যাস্ত্রী যেরূপে রক্ষা করে, কনিষ্ঠকে সেইরূপ আগুলিয়া বসিয়া আছেন ;-রাবণের অসংখ্য শর রামের পৃষ্ঠদেশ ছিন্ন ভিন্ন করিতেছিল,সেদিকে দৃকপাত না করিয়া রাম লক্ষ্মণের প্রতি সজলচক্ষু দ্যস্ত করিয়া তাহাকে রক্ষা করিতেছিলেন । অনন্তর বানরসৈন্ত লক্ষ্মণের রক্ষাভার গ্রহণ করিলে তিনি যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন এবং রাবণ পৃষ্ঠভঙ্গ দিয়া চলিয়া গেলে মৃতকল্প ভ্রাতাকে অতি সুকোমলভাবে আলিঙ্গন করিয়া রাম বলিলেন, “তুমি যেরূপ বনে আমার অনুগমন করিয়াছিলে, আজ আমিও তেমনি যমালয়ে তোমার অনুগমন করিব, তোমাকে ছাড়িয়া আমি বঁাচিতে পারিব না । দেশে দেশে স্ত্রী ও বন্ধু পাওয়া যাইতে পারে,কিন্তু এমন দেশ দেখিতে পাই না, যেখানে তোমার মত ভাই, মন্ত্রী ও সহায় পাওয়া যাইবে। এখন উঠ, নয়ন উন্মীলন করিয়া আমায় একবার দেখ ; আমি পৰ্ব্বতে বা বন-মধ্যে শোকার্ত, প্ৰমত্ত বা বিধঃ হইলে, তুমিই প্রবোধবাক্যে আমায় সান্তন দিতে, এখন কেন এইরূপ নীরব হইয়া আছ ?” রামায়ণী যুদ্ধে বীরবর লক্ষ্মণ বিশেষ বলবীৰ্য্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়া গিয়াছেন। সহযোগী সেনাপতিরূপে যুদ্ধ করা ব্যতীত তিনি স্বীয় ভুজবলে অতিকায়, ইন্দ্রজিৎ প্রভৃতিকে স্বয়ং শমনভবনে প্রেরণ করিয়াছিলেন । মেঘনাদ নিধনে তাহার কৃতিত্ব ছিল। চতুর্দশবর্ষ অনাহারী ও জিতেন্দ্রিয় না হইলে ইন্দ্রজিৎকে কেহ নিধন করিতে পাপ্লিবে না এইরূপ বর ছিল । লক্ষ্মণ বনবাসকালে সেই ব্ৰত পালন করিয়াছিলেন। তাড়কানিধনকালে বিশ্বামিত্রপ্রদত্ত মন্ত্রই তাহ অনশনক্লেশ নিবারণের সহায় হইয়াছিল। * রামের আজ্ঞাপালনে লক্ষ্মণ কোনকালে দ্বিরুক্তি করেম নাই, দ্যায়সঙ্গত হউক বা না হউক, লক্ষ্মণ সৰ্ব্বদা মৌনভাবে তাহ পালন করিয়া গিয়াছেন। রক্ষোকুলের বিনাশসাধন হইলে যে দিন রাম সীতাকে বিপুল সৈন্তসংঘর্ষের মধ্য দিয়া শিবিক ত্যাগ করিয়া পদব্রজে আসিতে আজ্ঞা করিলেন । শত শত দৃষ্টির গোচরীভূত হইয়া সীতা লজ্জায় যেন মরিয়া যাইতে ছিলেন, স্ত্রীড়াময়ীর সর্বাঙ্গ কম্পিত হইতেছিল। লক্ষ্মণ এই দৃশু দেখিয়া ব্যথিত হইলেন, কিন্তু রামের কার্য্যের প্রতিবান করিলেন না। যখন সতীত্ব পরীক্ষার সময় সীতা অগ্নিতে প্রাণবিসর্জন দিতে কৃতসংকল্প হইয়া লক্ষ্মণকে চিতা প্রস্তুত করিতে আদেশ করিলেন,-তখন লক্ষ্মণ রামের অভিপ্রায় বুঝিয়া সজলনেত্ৰে 'চিত প্রস্তুত করিলেন, কিন্তু কোন প্রতিবাদ করে নাই।' ভ্রাতৃস্নেহে তিনি স্বীয়-অস্তিত্বশৃষ্ঠ হইয়া গিয়া ছিলেন। সীতাকে উদ্ধার করিয়া রাম অযোধ্যায় আসিয়া রাজা হইলেন। লক্ষ্মণ ভ্রাতৃভক্তিবশতঃ ওঁাহার মাথায় ছত্র ধরিয়াছিলেন । তিনি রাজকাৰ্য্যে ভ্রাতার সহায়তা করিতেন। কিছুদিন পরে প্রজাকুল সীতার চরিত্রসম্বন্ধে সন্দেহজনক জল্পনা উত্থাপন করিলে রাম তাহাকে বনবাস দিবার পরামর্শ করেন। লক্ষ্মণ এই গুরুভার লইয়া পরমারাধ্যা সীতাদেবীকে বাল্মীকির আশ্রমে রাখিয়া আসেন। এই সময় হইতে লক্ষ্মণের চিত্তবিকৃতি ঘটে। অশ্বমেধ যজ্ঞের সময় তিনিই মহামুনির আশ্রম হইতে সীতাদেবীকে আনয়নার্থ গমন করেন। সীতার পাতালপ্রবেশের পর, একদিন কালপুরুষ আসিয়৷ রামচন্ত্রের সহিত সাক্ষাৎ করেন। ঐ সময়ে মন্ত্রণাগৃহে কাহাকেও প্রবেশ করিতে দিবে না অনুমতি দিয়া রাম লক্ষ্মণকে দ্বারপালরূপে রক্ষা করেন। অকস্মাৎ রোযমূৰ্ত্তি দুৰ্ব্বাসা আসিয়া রামের সাক্ষাৎ জন্য অগ্রসর হইলে তিনি আদেশ জানাইয়া তাহাকে নিরস্ত করেন, কিন্তু দুৰ্ব্বাসার শাপের ভক্ষে জ্যেষ্ঠের নিকট প্রবেশাধিকারের অনুমতি লইবার জন্ত গৃহে প্রবিষ্ট হন। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ রাম লক্ষ্মণকে বর্জন করিলে, তিনি সরযুসলিলে জীবন বিসর্জন করেন। অধ্যাত্মরামায়ণের মতে লক্ষ্মণ “শেষ” নাগের অবতার। লক্ষ্মণের চরিত্রে আদ্যন্ত পুরুষকারের মহিমা দৃষ্ট হয় । একদা লক্ষ্মণ রামকে বলিয়াছেন, “জল হইতে উদ্ধতমীনের ন্যায় আপনাকে ছাড়িয়া আমি এক মুহূৰ্ত্তও বাচিতে পারিব না।” বনবাসীঞ্জ অত্যন্ত অন্তায় এবং রামের পিতৃ-আদেশ-পালন তিনি ধৰ্ম্মবিরুদ্ধ বলিয়াই মনে করিয়াছিলেন। তাহাতে রাম লক্ষ্মণকে বলিয়াছিলেন, “তুমি কি এই কাৰ্য্য দৈবশক্তির ফল বলিয়া মনে করিবে না ? অারন্ধকাৰ্য্য নষ্ট করিয়া যদি কোন অসংকল্পিত পথে কার্য্যপ্রবাহ প্রবর্তিত হয়, তবে তাহ! দৈবের কৰ্ম্ম বলিয়া মনে করিবে। দেখ, কৈকেয়ী চিরদিনই আমাকে ভরতের ন্যায় ভাল বাসিয়াছেন, তাহার দ্যায় গুণশালিনী মহৎকুলজাত রাজপুত্ৰী সামাকে পীড়াদান করিবার জন্ত ইতর ব্যক্তির স্থায় এইরূপ প্রতিশ্রুতিতে রাজাকে কেনই বা । আবদ্ধ করিবেন ? ইহা স্পষ্ট দৈবের কৰ্ম্ম, ইহাতে মামুষের কোন হাত নাই।" লক্ষ্মণ উত্তরে বলিলেন, “অতি দীন ও অশক্ত ব্যক্তিরাই দৈবের দোহাই দিয়া থাকে, পুরুষকার দ্বারা যাহার দৈবের প্রতিকূলে দণ্ডায়মান হন, তাহারা আপনার স্তায় অবসর হইয়া পড়েন না । মৃদ্ধ ব্যক্তিরাই সৰ্ব্বদা নিৰ্য্যাতন প্রাপ্ত হন— “মূৰ্ছি পরিভূয়তে।" ধৰ্ম্ম ও সত্যের ভাণ করিয়া পিতা যে ঘোরতর অন্তায় করিতেছেন, তাছা কি আপনি বুঝিতে পারিতেছেন না ? আপনি দেবতুল্য, ঋজু ও দাস্ত এবং রিপুরাও আপনার প্রশংসা করিয়া থাকে। এমন পুত্রকে তিনি কি অপরাধে বনে তাড়াইয়া দিতেছেন? আপনি যে ধৰ্ম্ম পালন করিতে