পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ললিতপুর স্থতির পরিচয় প্রদান করিতেছে । ৰপ্তমান সময়েও পৰ্ব্বত্ত প্রান্তস্থিত কএকটা গ্রামে এখনও গোড়জাতির বাস দেখা যায়। পরবর্ত্তিকালে এখানে জার্ধ্য উপনিবেশ স্থাপিত হইলে সেই গোড়া ক্রমশঃ হিন্দুধর্শে আস্থাবা হইয় তাহারই অনুরাগী হয় এবং অতি অল্পকাল মধ্যেই তাহারা শিক্ষা ও সভ্যতা গুণে সমুন্নত হইয়া উঠে । তাহাদের স্থাপত্যবিস্কার পরিচয় স্বরূপ আজিও অট্টালিকা ও জলনালীসমূহ এখানে বিদ্যমান রহিয়াছে। তাহাঙ্গের অধঃপতনের পর মহোবার চলোলবংশীয় রাজগণ এখানে আধিপত্য বিস্তার করেন। বান্দা ও হামীরপুরে তাহাদের রাজধানী ছিল। তৎপ্রসঙ্গে এই রাজবংশের সংক্ষিপ্ত পরিচয় বিবৃত হইয়াছে। [ বান্দা ও হামীরপুর দেখ। ] খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাদের শেষভাগে এই চন্দেল রাজবংশের অধঃপতন ঘটে। তখন এই জনপদ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সামন্তরাজগণের শাসনাধীন হয়। ঐ সমস্তগণ দিল্লীর মুসলমান-রাজগণের প্রাধান্ত স্বীকার করেন নাই। র্তাহারা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন করিয়াছিলেন। খৃষ্টীয় ১৪শ শতাদে ছৰ্দ্ধৰ্ষ বুন্দেলা জাতি এই প্রদেশ আক্রমণ ও অধিকার করে। তাহারা প্রথমে ঝাঙ্গীতে ও পরে সমগ্র বুন্দেলখওে আপনাদের প্রভাব বিস্তার করিয়ছিল । বর্তমান ললিতপুর জেলা চন্দেরীর বুন্দেলরাজ্যের অন্তর্গত এবং এথানকাল রাজবংশ রাজা রুদ্র প্রতাপের বংশধর । খৃষ্টাব্দ হইতে ১৭৮৮ খৃষ্টাব্দ পর্য্যস্ত তদ্বংশীয় নয়জন রাজা চন্দেরীতে রাজত্ব করিয়াছিলেন । এই সুদীর্ঘ শাসনকালের মধ্যে দিল্লীর মোগলসম্রাটগণও মধ্যে মধ্যে এইস্থানে আধিপত্য বিস্তার করিয়াছিলেন। অবশেষে নবম রাজারামর্চাদ তীর্থযাত্রা উপলক্ষে অযোধায় গমন করিলে, তাহার অনুপস্থিতি লক্ষ্য করিয়া মহারাষ্ট্ৰীয়গণ এই প্রদেশে প্রভাব বিস্তার করেন। কিন্তু তাহারা অধিক দিন এদেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করিতে পারেন নাই । ১৮০০ •পুষ্টাব্দে তৎপুত্রকে তাহারা অধিকাংশ সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করিতে বাধ্য হন । ইহার দুই বৎসর মধ্যে জনৈক অমাত্যের প্ররোচনায় রাজকুমার গুপ্তভাবে নিহত হন এবং তাহার ভ্রাত৷ মৃরপ্রহ্লাদ সিংহাসনে অধিরোহণ করেন। তিনি উচ্ছম্বল এবং শাসনকার্য্যে অকৰ্ম্মণ্য ছিলেন। র্তাহার অধীনস্থ ঠাকুর সামন্তগণ পূৰ্ব্বাত্যস্ত কুণ্ঠনপ্রবৃত্তির দাস হইয়া পার্শ্ববর্তী রাজ্যসমূহে উপদ্রব করিতে থাকে। রাজা মূরপ্রস্তাদ কিছুতেই তাহাদিগকে বশে রাখিতে পারিলেন না। উপযুপিরি এইরূপ আক্রমণ ও লুণ্ঠন করিতে করিতে যখন তাহার ১৮১১ খৃষ্টাব্দে গোয়ালিয়ার সীমান্তে উপস্থিত হইয়া সিনোরীজের প্রজাবর্গের উপর অত্যাচার আরম্ভ করিলেন, তখন গোয়ালিয়ারপতি তাহার প্রতিহিংসা ১৭৪২ [ s७१ ] ললিতপুর সাধনে অগ্রসর হইলেন । মহারাজের আদেশে সিন্দে-সৈন্ত চন্দেরী আক্রমণ করিল। গোয়ালিয়র-সেনাপতি জিন বাপ্তিস্তে (Jean Baptiste ) সম্বলে অগ্রসর হইয়া কোটুরাবংশী, রাজবাড়া ও ললিতপুর দুর্গ অধিকার করিলেন। মুরপ্রহ্লাদ ঋণসীতে পলাইয়া গেলেন, কিন্তু তাহার সেনাপতিগণ নগররক্ষার অগ্রসর , হইলেন। কএক সপ্তাহকাল অবরোধের পর ভীমবেগে "যুদ্ধ করিয়া চন্দেরী-সৈন্ত আত্মসমৰ্পণ করিল। একজন ঠাকুর সামস্তের বিশ্বাসঘাতকতায় চন্দেরী শক্ৰহস্তগত হইল। দেখিতে দেখিতে তালবেহাতবাসীও সিন্দে রাজকরে আত্মসমর্পণ করিলেন । সিন্দে মহারাজ তখন সেই প্রদেশের শাসনভার গ্রহণ করিয়া কর্ণেল বাপ্তিস্তেকে তথাকার শাসনকর্তা নিয়োগ করিলেন।. গোয়ালিয়ার-মহারাজ অমুকম্প করিয়া পূৰ্ব্বতন জায়গীরদারদিগকে তাহদের জায়গীর ফিরাইয়া দিলেন এরং রাজা মুরপ্ৰহলাদ স্বীয় ভরণপোষণের জন্ত ৩১ খানি গ্রাম পাইলেন । ইহার পর ৩৫ বৎসর কাল এই প্রদেশে শাস্তি বিরাজিত ছিল। সিন্দেরাজের নির্দিষ্ট শাসনপ্রণালীতে এথানকার শাসনকাৰ্য নিৰ্ব্বিয়ে সম্পাদিত হইতে লাগিল, কিন্তু অকস্মাৎ বুলেলা, গণ পূৰ্ব্বরাজকে নায়ক মনোনীত করিয়া বিদ্রোহী হইয়া উঠিল । তখন সিনোমহারাজ পুনরায় কর্ণেল বাপ্তিস্তেকে রাজ্যে শাস্তি বিধানার্থ প্রেরণ করিলেন । র্তাহার বন্দোবস্তানুসারে ললিতপুররাজ্য তিন ভাগ হইল। একভাগ রাজা মূরপ্রহ্লাদ পাইলেন ও দুইভাগ সিন্দেরাজের রাজ্যভুক্ত রহিল, রাজা মূরপ্রস্থলাদ এই ক্ষুদ্র রাজ্য লইয়াও ,আপনার অধীনস্থ ঠাকুর সামস্তদিগের সহিত বিবাদ করিতে করিতে ১৮৪২ খৃষ্টাব্দে স্বীয় কলহপূর্ণ জীবনের অবসান করিলেন। তাহার মৃত্যুর পর তংপুত্র মর্দনসিংহ রাজা হইলেন । উক্ত ঘটনার দুই বৎসর পরে মহারাজপুরযুদ্ধের অবসানে দিনেরাজ গোয়ালিয়ার-সেনাদলের ভরণ পোষণ-ব্যয়ভার-বহনের জামিন স্বরূপ ইংরাজ-রাজ-করে চন্দেরী রাজ্যের নিজ অংশ সমর্পণ করিলেন । ইংরাজগবর্মেন্ট ঐ সম্পত্তি লাভ করিয়া উহাকে একটা স্বতন্ত্র জেলারূপে গঠিত করিয়া লইলেন, কিন্তু সন্ধির মৰ্ম্মানুসারে সিনো মহারাজের প্রভূত্ব অক্ষুণ্ণ রাখিতে ও প্রজাবর্গের স্বাধিকার রক্ষা করিতে ইংরাজগবমেণ্ট স্বীকৃত রহিলেন । সিপাহীবিদ্রোহ পৰ্য্যন্ত এই প্রস্তাব মতে কাৰ্য্য চলিয়াছিল। বাণপুররাজ মৰ্দ্দনসিংহ আপনার সন্মানত্ত্বাসে দুঃখিত হইয়া এই সময়ে বুন্দেলাসর্দারদিগকে ইংরাজরাজের বিরুদ্ধে অভু্যথিত করেন। ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দের ১২ই জুন তারিখে রাজা মৰ্দ্দন সিংহ বিদ্রোহিলে পরিবৃত হইয়া বাসী ও গোয়ালিয়ার বিদ্রোহীদিগের সহিত যোগদান করেন । এইরূপে বছশত বিদ্রোহী সেন এবং