পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লামা পায়, কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি একই অপরাধ বারংবার করে ; তাহা হইলে অপরাধ গুরুতর বলিয়া গণ্য হয় এবং অপরাধীর তদনুরূপই শাসন হইয়া থাকে। যদি কোন ছাত্র উপযুপিরি মদ্যপান বা চুরি করে,তাহা হইলে সেই অপরাধীর শিক্ষক ও ছাত্রাবাস-পরিদর্শক বিচারসভায় সমবেত যতিমণ্ডলীর সমক্ষে নিন্দভাজন হইয়া থাকেন। পরে দুইজন লোকে ঐ ছাত্রের পায় দড়ি বাধিয়া মন্দিরের বাহিরে লইয়া যায় এবং তাহার দক্ষিণ ও বাম পাশ্বে উপযুপিরি বেত্ৰাঘাত করিতে থাকে। এক সময়ে তাহার উপর প্রায় সহস্রাধিক বেয়াঘাত হয়, তদনন্তর তাহাকে মঠের সীমাবহির্ভাগে টানিয়া ফেলিয়া আইসে । যাহার স্বেচ্ছায়,ব্রহ্মচৰ্য্য ভঙ্গ করিয়া মঠ পরিত্যাগ করে, তাহারা বন্‌ লোক নামে খ্যাত । মঠের বহিঃপ্রদেশেও লামাদিগের প্রভাব বিস্তৃত আছে । কেন ব্যক্তি কাহার উপর অহিতাচরণ করিলে হেই-হো-সঙ্গ বা কপালে কৃষ্ণবর্ণ রেখাপারী গেকোর লামাগণ মঠ প্রাচীরের বহির্ভাগে আসিয়া সেই দুৰ্ব্বস্তুকে দমন করিতে পারেন। এই গেকোর লামাগণ মঠাধ্যক্ষ অপর প্রতিযোগিদ্বয়ের সাহায্যে লাম বা ব্রহ্মচৰ্য্যাশ্রমের নিয়ম রক্ষা করিয়া থাকেন । এই লামাগণ প্রাচীন বৌদ্ধসন্ন্যাসীদিগের স্থায় সুখ পৃহবর্জিত নহেন। সন্ন্যাসীর দ্যায় তাহারা অর্থলালসা ও ভোজনলিপ্ত ত্যাগ করিতে পারেন নাই। সাধারণ লোকে তাহাদেব ভোজ্য এবং চক্ষ, চী প্রভৃতি পানীয় যোগাইতে যোগাইতে উৎকণ্ঠিত হইয়াছেন । গে-লুগ-প প্রভৃতি তিব্বতীয় প্রধান সঙ্ঘারামের অধীনে অনেক ভূসম্পত্তি আছে। উহার আয়ে তাহদের ব্যয়ভার চলিয়া থাকে। এতদ্ভিন্ন শরতের শস্তকৰ্ত্তনকালে বহুশত লামা মঠের বাহির হইয়া ভিক্ষা করিয়া শস্ত এবং চা, নবনীত, লবণ, মাংস প্রভৃতি ভরণপোষণোপযোগী দ্রব্যাদি সংগ্ৰহ করিয়া ভাণ্ডার পুর্ণ করেন। কোন কোন লামা পুতুল গড়িয়া বা প্রতিমূৰ্ত্তি কাটিয়া, ছবি আঁকিয়া, কোষ্ঠী প্রস্তুত করিয়া, বুজরুকী দেখাইয়া, চিকিৎসা করিয়া ও ঝাড়া ফুকা দিয়া নানা উপায়ে অর্থ সঞ্চয় করিয়া মঠের ব্যয় সস্কুলান করিয়া থাকেন। যে সকল লামা তাদৃশ প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন অথবা পণ্ডিত নহেন, তাহারাই মঠের অন্তান্ত কাৰ্য্য করেন। কেহ কেহ বাণিজ্যে লিপ্ত হইয়া সঙ্ঘারামের ঐশ্বৰ্য্য । বৃদ্ধি করিয়া থাকেন। এই সকল ধৰ্ম্মাচার্যগণ ব্যবসা ব্যপদেশে স্বদ গ্রহণ কবিতে কুষ্ঠিত হন না। বাস্তবিক পক্ষে তাহার সুব্যবসায়ী এবং দেশের মহাজন বলিয়া পরিগণিত। ভারতীয় বৌদ্ধগণের বেশভূষাদি ভারতীয় ঋতুগুলির অমুকুলে নির্মিত হইয়াছিল। যখন বৌদ্ধধৰ্ম্ম তিব্বত প্রভৃতি তুষারময় প্রদেশে বিস্তার লাভ করিল, তখন रहेडरे | [ २२७ ] লামা বেশভূষার পরিবর্তন ঘটিতে থাকে। তিব্বতীয় লামা বা বৌদ্ধ, যতিগণ দারুণ শীত ও মশকদংশনাদি শারীরিক পীড়াদায়ক যন্ত্রণা হইতে পরিত্রাণ পাইবার জন্ত জুতা, মোজা ও গাত্রবক্স প্রভৃতি শীত প্রধান দেশের উপযোগী করিয়াই নিৰ্ম্মাণ করেন এবং ক্রমশঃ তাহার পরিচ্ছন্নতার দিকে দৃষ্ট পড়ে। প্রাচীন বৌদ্ধগণের চীরবাস ও বর্তমান লামাদিগের জপমালা, শিরস্ত্রাণ, আলখাল্লা, কোমরবন্দ, ছোটজাম, চোগা, ডোরাকাটা পশমী জোব্বা, ইজার, পায়জামা এবং জুতা প্রভৃতি আবশ্বকীয় উপাদানসমূহের তুলনা করিলে বুঝা যায় যে, বর্তমান যুগে বৌদ্ধধৰ্ম্মে কি বিপ্লব উপস্থিত হইয়াছে ! তিববতীয় লামাগণ শিরোদেশে যে বিভিন্ন প্রকার উষ্ণুীষ শোভিত করেন, তাহার প্রায় সকলগুলিই ভারতীয় অনুকরণে গঠিত, কএকটা মাত্র চীন ও মোঙ্গলীয় ধরণে নিৰ্ম্মিত দেখা যায়। তিববতীয় লামাগণের বিশ্বাস এই যে, লাম-ধৰ্ম্মমতের প্রতিষ্ঠাতা বৌদ্ধভিক্ষু পদ্মসম্ভব এবং তাহার সহযোগী শাস্তরক্ষিত খৃষ্ঠায় ৮ম শতাব্দে ভারত হইতে যে শিরস্ত্রাণ পরিধানপুৰ্ব্বক তিব্বতে পদার্পণ করেন, তাহারই আকৃতি অনুসারে বর্তমান টুপীগুলি গঠিত হইয়া থাকে। পঞ্চেনজ-দমর নামক লাল উষ্ণীষ দিয়া স্বয়ং শাস্তরক্ষিত তিব্বতে আসিয়াছিলেন । গে-লুগ-প ব্যতীত তিব্বতের সর্বত্রই ঐ টুপীর প্রচলন ছিল। উহা ভারতের শীতপ্রধান দেশে ব্যবস্থত তুলার ‘কাণ ঢাকা’ টুপীর মত। ৎসোঙ-খাপ সেই লাল বণ টুপীর পরিবর্তে হরিদ্রাবর্ণের উষ্ণীষ ( ষ-সের ) প্রচলন করিয়া যান। উহাই গেলুগ-প সম্প্রদায়ের পরিধেয় । মঠবিহারিণী ৰৌদ্ধভিক্ষুণীগণ পশমী বস্ত্র বা লোমের দ্বারা প্রস্তুত একপ্রকার শিরস্ত্রণ ব্যবহার করেন । সম্প্রদায়ভেদে উহ। লাল ও কৃষ্ণবর্ণের হয়। সিকিম, ভোটান ও হিমায়ুর প্রাস্তস্থ অনেক জনপদে যেখানে ষ্টিপাত হয় না, সেই সকল প্রদেশবালী বৌদ্ধলামাগণ গ্রীষ্মকালে খড়ের টুপী পরিধান করিয়া থাকেন। কেহ বা আদৌ টুপী পরেন না। চীনবাসীর স্থায় উহার টুপী খুলিয়া আগন্তুককে অভিবাদন করেন, এই কারণে দেবমন্দিরে প্রবেশকালে কেহই মাথায় টুপি রাখেন না, কেবলমাত্র কএকটা ধৰ্ম্মকাৰ্য্যে টুপি পরিধানের বিধি আছে। তাহাদের গাত্রবস্ত্রেও উক্ত দুই প্রকার বর্ণ দেথা যায়। গে-লুগ-প সম্প্রদায়ের আচার্যগণ কুঙ্কুমরঞ্জিত হরিদ্রাবাস ধারণ করেন। যদি কেহ গে-লুগ-প আচার্য্যের নিকট কোন উপঢৌকন দিতে আসে, তাহা হইলে সে ঐক্লপ হরিদ্রাবাস পরিধান করিতে পারে, তদ্ভিন্ন যদি অপর কোন ব্যক্তি ঐ বাস পরিধান করে, তাহা হইলে দণ্ডনীয় হয়। প্রাচীন বৌদ্ধদ্বিগেৰু