পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লামা [ २११ ] লাম সত্যাট, অন্তর্বাসক ও উত্তরাসজ্ঞাটির সহিত তিব্বতীয় লামদিগের জান, নম্ন জার ও বল গোম্ নামক গাত্রবস্ত্রাদির অনেক সোসাদৃশু আছে। এতদ্ভিন্ন শাক্ত ও বৈষ্ণবদিগের ভায় তাহার মাল8জপ করে। ঐ মালায় ১০৮টা দানা থাকে এবং উহার দুই পাশ্বের সুত্রে ১০টা করিয়া সাক্ষী রাখে। ১০৮ বার মালাজপের পর এক একটী সাক্ষী ধরিয়া তাহারা মন্ত্রসংখ্যা নিরূপণ করে। এইরূপ দুই দিকের ১০ x ১০ সাক্ষীতে তাহদের ১০৮s • জপসংখ্যা হয়। এই সকল মালা দানাও বিভিন্ন প্রকার হইয়া থাকে। সৰ্ব্বপ্রধান তষিলামার নিকট মুক্তা, চুনি, পান্না, নীলা, প্রবাল, স্ফটিক প্রভৃতি মূল্যবান প্রস্তরে নিৰ্ম্মিত মালা দেখা যায় । এতদ্ভিন্ন সম্প্রদায়ভেদে ও দেবারাধনা বিশেষে মালার দানা পৃথক হইয়া থাকে। গে লুর্গ, প সম্প্রদায় মধ্যে হরিদ্র বর্ণ কাষ্ঠের মালা প্রচলিত। তম্দিন পূজায় লাল চন্দনকষ্ঠের এবং ছ-রণী উপাসনায় শ্বেতশঙ্খের মালা, তান্ত্রিক উপcrstsitsia af water (Elaeocarpus Janitus), zittels হাড়ের মালা, অবলোকিতের পুজায় স্ফটিকের মালা, পদ্মসম্ভবের ও তাম্ দিনের পূজায় প্রবাল এবং বজ্রভৈরবের উপাসনায় মৃকরোটি ব্যবহৃত হইয়া থাকে। লামারা যখন মালা জপ করেন না, তখন তাহা গলায় বা দক্ষিণ হস্তে জড়াইয়া রাখেন। মালা-জপের সময় প্রত্যেক দানা ধরিবার অগ্ৰে তাহার ৫ম প্রণব উচ্চারণ করেন, পরে দানা ধরিয়া মনে মনে মন্ত্র পাঠ করিতে থাকেন। ভিন্ন ভিন্ন দেবতার জপমন্ত্র বিভিন্ন। এই সকল লামাগণ সচরাচর আরও কএকটী দ্রব্য ব্যবহার করিয়া থাকেন। তন্মধ্যে ভজনচক্র, বজ্ৰদও, ঘণ্টা, করোটি-নিৰ্ম্মিত ঢঙ্কা, খঞ্জনী, কবচ, পুথি ও অলঙ্কার প্রধান। তষিল কুণপোর প্রধান লামা সময়ে সময়ে জহরতাদি গঠিত কণ্ঠহার ধারণ করেন। কাহার কাহারও ভিক্ষাপাত্র ও সন্ন্যাসদণ্ড আছে। তিব্বতবাসী লামাগণ ধৰ্ম্মের জন্য প্রাণ বিসর্জন করিলেও কৰ্ম্মকাণ্ডে তাহদের বিশেষ আসক্তি দৃষ্ট হয়। মঠবাসী যতি, গ্রাম্য পুরোহিত, গুহাবাসী তপঃপরায়ণ লামা ভিক্ষু অথবা কৃষিবাণিজ্যাদি কৰ্ম্মে লিপ্ত লামাগণ পৃথক পৃথক্ কার্য্যে ব্যাপৃত থাকিয়া জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করিতেছেন। এই বিভিন্ন শ্রেণীর লামাদিগের নিত্যকৰ্ম্মপদ্ধতিও স্বতন্ত্র। - লামানগরীর পোতল পৰ্ব্বতস্থ শ্রেষ্ঠ লামাসঙ্ঘারামে বৌদ্ধযতিগণ যে প্রথা অবলম্বনে দৈনিক কাৰ্য্য সমাধা করিয়া থাকেন, তাহাই নিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে উদ্ধৃত হইল,— রাত্রিকালে যখনই নিদ্রাভঙ্গ হইবে, তখনই যতিগণ শয্যাত্যাগ করিয়া থাকেন। পরে গাত্ৰোখানপুৰ্ব্বক পরিচ্ছন্ন পরিধান করিয়া ংযত, হৃদয়ে গৃহমধ্যস্থ বেদীর সমক্ষে তিনবার দেবোদেশে 事 প্রণাম করিবেন। তদনন্তর জীবনযাত্রানির্ধ্বাহের উপায় প্রার্থনা করিয়া বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্বদিগের উদ্দেশে স্তব এবং সঙ্গে সঙ্গে স্বত্রগ্রন্থ হইতে কএকটী মন্ত্র পাঠ করিবেন। স্তব ও মন্ত্র পাঠাস্তুে “ওঁ শ্বে চরগণয় স্ত্রী স্ত্রী স্বাহ৷” মন্ত্র তিনবার পাঠ করিয়া যতিগণ স্ব স্ব পদতলে থুতু প্রদান করবেন। তাছাদের বিশ্বাস, দিবাভাগে ভূপৃষ্ঠে ভ্রমণ জন্য যে সকল জীব পদদলিত হইয়া পঞ্চত্র প্রাপ্ত হয়, এই মন্ত্রবলে তাহারা অমরাবতীর ইস্ত্রপুরে দেবরূপে জন্ম পরিগ্রহ করিয়া থাকে । এই সকল দেবারাধনার পর, যদি রাত্রি প্রভাত হইতে অধিক বিলম্ব থাকে, তাহা হইলে সেই যতি পুনরায় শয্যাশায়ী হইয়া নিদ্রা যাইতে পারেন, কিন্তু যদি দুই বা চারি দণ্ড বাকী থাকে, তাহ হইলে তিনি আর নিদ্রিত হইবেন না, সেই স্বল্পকাল “ন্মোন লম্‌” ভজনগীতি বা মন্ত্র পাঠ করিয় রাত্রি যাপন করিবেন এবং ঘণ্টাধ্বনি হইলে যখন সকলে স্বপ্তোথিত হইবেন, তখন তিনিও শয্যা ত্যাগ করিয়া শঙ্খধ্বনি ও শিঙ্গাধ্বনি পৰ্য্যস্ত আপনার বেশ পরিধানাদি কাৰ্য্যে ব্যাপৃত থাকিবেন । শিঙ্গাধ্বনি হইবামাত্রই সকলে স্ব স্ব মঠকক্ষ পরিত্যাগ করিয়া দে1বছল নামক প্রস্তর মণ্ডপে উপাসনার্থ সমবেত হইবেন । ঐ সকল প্রস্তরাসনে দণ্ডায়মান থাকিয় তাহার “গুম্‌ অৰ্থং চার্যং বিমনসে! উৎমুম্ম মহাক্রোধ হুংফটু” মন্ত্র পাঠপূৰ্ব্বক মনের পাপ ও কলু্যাদি চিন্তা করিবেন। উহার দ্বারা তাহদের চিস্তুপাতক বিদূরিত হইয়া থাকে। তদনন্তর সুগ, পা নামক ক্ষারমৃত্তিক বা সাবান যোগে স্ব স্ব তাম ঝারিস্থ জল দ্বারা হস্ত পদাদি প্রক্ষণলন করিবেন। হস্তপদের স্থান বিশেষ প্রক্ষীলনকালে তাহারা বিশেষ বিশেষ মন্ত্র পাঠ করিয়া থাকেন। মুখাদি প্রক্ষালনের পর শৌচ দেহে তাহারা হস্তে মালা লইয়া জপ করিতে করিতে তারা দেবী ও মঞ্জুশ্রীর উদ্দেশে মন্ত্র পাঠ করেন, সময় থাকিলে কেহ কেহ স্ব স্ব কুণাধিষ্ঠাত্রী দেবতার স্তুতি পাঠও করিয়া থাকেন। এই সকল কাৰ্য্য সমাধান করিতে প্রায় ১৫ মিনিট সময় লাগে। তাহার পর দ্বিতীয় বার শঙ্খধ্বনি হইলে গে-লোঙ যতিগণ মন্দিরদ্বারের সমক্ষে যাইয়া এবং গেৎসুলের মন্দিরসন্মুখস্থ প্রাঙ্গণে দাড়াইয়া দেবোদেশে প্রণাম করেন। তাহার পর মন্দিরদ্বার উন্মুক্ত হইলে একে একে সকলেই মন্দিরে প্রবেশ করেন। ঐ সময়ে দগুহস্তে গেকো দ্বারপথে দণ্ডায়মান থাকেন । সকলে নিজ নিজ মাদুরে শ্রেণীবদ্ধভাবেও মর্যাদানুরূপে বৃন্ধের ন্যায় আসনপিড়ি হইয়া উপবিষ্ট হইলে তৃতীয়বার শঙ্খধ্বনি হয়। তখন সকলে সমস্বরে ঐ সময়কার কএকটী নির্দিষ্ট মন্ত্র পাঠ করেন । তাহার পর চা পান করেন। চা পান করিবার পূৰ্ব্বে অধ্যক্ষ লাম সমবেত সকলের স্বস্তি বাক্য উচ্চারণ করিলে আপন আপন চা