পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লাহোর Tগ্রানদিগকে ভোজ দিয়া অব্যাহতি পায়, কিন্তু ভিন্ন-সম্প্রদায়ের অপর পুরুষে আসক্ত হইয়া যদি ঐ রমণী পাপপঙ্কে লিপ্ত হয়, তাহা হইলে তাহাকে সমাজ হইতে দূর করিয়া দেওয়া হইয়া থাকে । বৈহার প্রদেশের প্রকৃষ্ট হিন্দুর মধ্যে পুত্ৰকস্তার :) মিতাক্ষর মতে প্রচলিত আছে। ইহারা মুখে সেই মত অনুসরণ করিলেও কাৰ্য্যতঃ পঞ্চায়তের আদেশেই যথাকর্তব্য নিৰ্দ্ধারণ করিয়া থাকে। ইহাদের মধ্যে পঞ্জাবের “চুড়াবন্দ” প্রথা প্রচলিত দেখা যায়। তাহতে স্ত্রীসংখ্যানুসারেই স্বামীর সম্পত্তি বিভক্ত হয়, অর্থাৎ প্রথম স্ত্রীর যদি একমাত্র পুত্র জন্মে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর যদি বহু পুত্র থাকে, তাহা হইলে মৃত পিতার সম্পত্তি দুইভাগ করিয়া প্রথমার একমাত্র পুত্র অৰ্দ্ধাংশের অধিকারী হইবে এবং দ্বিতীয়ার সন্তানগণ অপরাদ্ধ সমভাগে বণ্টন করিয়া লইবে । সম্পত্তিবণ্টনকালে বিবাহিত ও নিকা-পত্নীর কোন রূপ পার্থক্য থাকে না । ইহারা আপনাদিগকে গোড় হিন্দু বলিয়া জানে। ভগবতীকে আরাধ্য দেবী জানিয়া তাহারই উপাসনা করে, কিন্তু হিন্দুর অপরাপর দেবতাকে অবজ্ঞা করে না। ত্ৰিহুতীয় ব্রাহ্মণগণ ইতাদের বিবাহদি কৰ্ম্মে যাজকতা করেন, তাহাতে তাহারা সমাজে নিন্দনীয় হন না। বন্দী ও গোরাইয়া নামক গ্রাম্য দেবতাকে প্রত্যেক গৃহস্থই পূজা করে। তাহাতে ব্রাহ্মণের পৌরোহিত্য আবশ্বক করে না । এই দুই দেবতাকে গৃহকৰ্ত্তাই ছাগ, দুগ্ধ, রুট ও মিষ্টান্নাদি নিবেদন করিয়া দেয়। ইহার সমাজে কোইরী ও কুৰ্ম্মদিগের সমশ্রেণী বলিয়া বিবেচিত। ব্রাহ্মণের ইহাদের জল স্পর্শ করিয়া থাকেন। গালার চূড়ী ও খেলানা প্রস্তুত ব্যতীত ইহারা চাসবাস করে। লাহোর, পঞ্জাবের অন্তর্গত একটী বিভাগ। লাহোর, ফিরোজপুর ও গুজরানাল জেলা লইয়া গঠিত। ইহার উত্তরসীম শাহপুর ও গুজরাত জেলা ; পূৰ্ব্বে শিয়ালকোট ও অমৃতসর জেলা, কপুত্রথলী রাজ্য ও জালন্ধর জেলা ; দক্ষিণে পাতিয়ালা রাজ্য এবং শীর্ষা, মণ্টগোমরি ও ঝঙ্গ জেলা। অক্ষাও ৩০° ৮ হইতে ৩২° ৩৩ উঃ এবং দ্রাঘি• ৭৩, ১১ ৩০% হইতে ৭৫' ২৭% পূঃ মধ্য। ভূপরিমাণ ৮৯৮৭ বগমাইল। এখানে ২৬ট নগর ও ৩৮৪৫টা গ্রাম আছে। স্থানীয় কমিসনরের কর্তৃত্বাধীনে পরিচালিত । [ লাহোর, গুজরাণবালা ও ফিরোজপুর দেখ। ] লাহোর, পঞ্জাব প্রদেশের ছোটলাটের শাসনাধীনে পরিচালিত একটা জেলা । অক্ষা • ৩০° ৩৭ হইতে ৩১° ৪৪' উঃ এবং দ্রাঘি• ৭৩° ৪• ১৫% হইতে ৭৫° ১' পূঃ। ভূপরিমাণ ৩৬৪৮ বগমাইল । লাহোর বিভাগের মধ্যাংশ লইয়া এই জেলা [ २8१ ] লাহোর গঠিত। ইহার উত্তর পশ্চিমে গুজরানাল, উত্তরপূৰ্ব্বে অমৃতসর দক্ষিণপূৰ্ব্বে শতদ্রু নদী এবং দক্ষিণপশ্চিমে মন্টগোমরি জেলা। সমগ্র পঞ্জাব প্রদেশের ৩২টি জেলার মধ্যে লোকসংখ্যানুসারে ইহা তৃতীয় এবং ভূমির পরিমাণানুসারে একাদশ স্থানীয়। ইহা চারিটি স্বতন্ত্র তহসালে বিভক্ত। শরথপুর তহসীল ইরাবতী নদীর বহিভূত প্রদেশ লইয়া গঠিত। দক্ষিণপশ্চিমাদ্ধের চুনিয়ান তৎসীল ইরাবতী ও শতদ্রুর মধ্যস্থলে অবস্থিত, কস্থর তহসীল শতদ্রুর কুলে বিস্তৃত এবং উত্তরপূৰ্ব্বান্ধের লাহোর তহসীল ইরাবতীতট হইতে শতদ্রুতীরবর্তী কস্থর উপবিভাগ পর্য্যস্ত পরিব্যাপ্ত । এই জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বড়ই মনোরম । শতদ্রু হইতে ইরাবতী এবং তথা হইতে রেনে-দোয়াৰ নামক গুসমৃদ্ধ অস্তৰ্ব্বেদীর মধ্যস্থল পর্য্যন্ত এই জেলা বিস্তৃত । শতদ্রু, ইরাবতী ও দেখ নামক নদীত্রয় প্রভূত সুমিষ্ট জল বহন করিয়া এই জেলার অধিকাংশস্থান, বিশেষতঃ উক্ত নদীত্রয়প্রবাহিত অববাহিকা ও উপত্যক প্রদেশ উৰ্ব্বর করিয়া তুলিয়াছে। ঐ খামল শস্তক্ষেত্রসমূহ যেন সমান্তরাল বন্ধনীর স্থায় উপত্যক ভূমের স্থানে স্থানে এক একটী গণ্ডশৈল বেষ্টন করিয়া আছে। পৰ্ব্বতসমু ও উৰ্ব্বরতায় সাধারণের নিকট সুপরিচিত রহয়ছে । শতদ্র ও ইরাবতী নদীর মধ্যস্থলে মাঝা নামক অধিত্যক বা উচ্চভূমি অবস্থিত। উহা একসময়ে শিপজাতির আদি বাসভূমি বলিয়া প্ৰসিদ্ধ ছিল। সেই বিস্তৃত প্রদেশের উত্তরাংশ উদর শস্তক্ষে পরিশোভিত রহিয়াছে, কিন্তু তাহরই দক্ষিণাংশ ফ্র: 4; ক্ষীণকলেবর হইয়া অনুৰ্ব্বর মরুভূমে পরিণত হইয়াছে । উঃার সৰ্ব্বশেষাংশে সামান্ত মাত্রায় ঘাস জন্মে বটে, কিন্তু থলে বা নদীতে জল না থাকায় তত বেশী তৃণ গজায় না। বর্ষ ভিন্ন অন্তান্ত ঋতুতে তথায় যে তৃণ ও গুপাদি বিরাজিত থাকে, তাহ। ভক্ষণ করিয়া উস্ত্রগণ জীবন ধারণ করিয়া থাকে। বর্ষার জলে সেই সকল তৃণ সজীব হইয়া আবার বাড়িতে থাকে। তখন সেই সুবৃহৎ তৃণপূর্ণ প্রান্তর গবাদির চারণার্থ ব্যবহৃত হইয়া থাকে। মধ্যে মধ্যে এক একটা গওগ্রাম দৃষ্ট হয় বটে, কিন্তু এই উচ্চভূমির অধিকাংশ স্থানেই প্রাচীন পুষ্করিণী, কুপ, নগর ও গাদির ধ্বস্ত নিদর্শন নিপতিত দেখিয়া অনুমান হয় যে, এই অধিতাক ভূমিতে এক সময়ে একটা সুসমৃদ্ধ জাতির বাস ছিল। সেই অতীত গৌরবস্তৃতি আজিও ভগ্ন অট্টালিকাসমূহ বহন করিয়া আসিতেছে। শতদ্র নদী হইতে কিছু দূরে পূর্বপশ্চিমে বিস্তৃত একটা উচ্চ বাধ দৃষ্ট হয়,উহা এই মাঝ ভূমির দক্ষিণসীমা নির্দেশ করিতেছে । এই বাধ হইতে নদীতীর পর্য্যন্ত যে ত্রিকোণাকার উৰ্ব্বরভূমি পতিত রহিয়াছে, তাহ হীতার নামে খ্যাত। ইরাবতী নদীর পলিময় কুলাংশে নানা বৃক্ষ এল ফল ও স্কুল জন্মিতে