পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লাহোর [ २५० | লাহোর স্বীয় রাজপদ প্রতিষ্ঠার সঙ্কল্প করেন। ক্রমে তিনি স্বীয় বুদ্ধি ও ভুঞ্জবলে সমগ্র পঞ্জাব প্রদেশের অধীশ্বরপদে উন্নীত হইয়া “পঞ্জাব কেশরী মহারাজ রণজিৎ সিংহ” বলিয়া বিঘোষিত হইয়াছিলেন । তাহার বিপুল উদ্যমে ও বীরত্ব প্রতিভায় অর্মিত এই পঞ্চনদরাজ্য তদ্বংশধরগণের শাসকশক্তির অভাবে এবং গৃহবিপ্লবে অচিরে ংস প্রাপ্ত হয়। তৎপরেই লাহেরে বুটশ শাসনাপিকার আরম্ভ হইল। [ রণজিৎসিংহ ও পঞ্জাব দেথ । ] পঞ্জাব প্রদেশ-শাসনকল্পে ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে ইংরাজরাজ লাহোর নগরে প্রতিনিধিসভার (Council of । Rogency) প্রতিষ্ঠা করেন এবং ইংরেজ রেসিডেন্টই প্রকৃতপক্ষে তৎকালে লাহোরের প্রপান শাসনকৰ্ত্তী হইয়াছিলেন । র্তাহাঁর অনভিমতে কোন শিখসদারই রাজ্যশাসনসংক্রান্ত কোন কাৰ্য্যই সম্পাদন করিতে পারিতেন না । ১৮৪৯ গষ্টাব্দের ২৯এ মার্চ দ্বিতীয় শিখযুদ্ধের অবসান হয়। যুবক মহারাজ দলীপ সিংহ ইংরাজকরে লাহোর রাজ্যের শাসনভার সমর্পণ করিয়া স্বয়ং রাজপদ ত্যাগ করেন । তদবপি এই জেলার শাসনকার্য্য ইংরাজের শাসন প্রণালীতে পরিচালিত হইতেছে। [ গড়গসিংহ, নবনেহাল সিংহ ও দলীপ সিংহ দেথ । ] ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে সিপাহী বিদ্রোহের সময় এখানকার মিঞান মীর সেনাবাসের দেশীয় সেনাদল বিদ্রোহী হইয়া লাহোর দুর্গ আক্রমণের ষড়যন্ত্র করে । সৌভাগ্যক্রমে তাহদের গুপ্তকল্পনা বৃটিশ গবমোট জানিতে পাবেন । ইংরাজসেনাপতি, তপাকার ইংরাজ-কামনাল{হী ও পদাতিক সেনাদলের সাহায্যে সেই বিদ্রোহী সেনাদলকে বশীভূত করিয়া তাহদের নিকট হঠতে অস্ত্ৰ শস্ত্র কাড়িয়া লন । তাহাতে তাহদের পোযিত আশা ব্যর্থ হইলে ও লাহোর রাজ্যের বিদ্রোহবহি উপশমিত হয় নাই । দীর্ঘকালবা সী সিপাচা-বিদ্রোহের সময় তথাকার শিথগণ ও মধ্যে মধ্যে ইংরাজরাজকে সশঙ্কিত করিয়া তুলিয়াছিল। উক্ত বর্যের জুলাই মাসে মিঞান-মীরস্থ ২৬ সংখ্যক দেশীয় পদাতিক দল বিদ্রোহী হইয়া ক এক জন সেনানায়ককে নিহত করে এবং বাতাসমুখিত ধূলিরাশির মধ্য দিয়া গোপনে পলাইয়া যায়। অমৃতসরের ডেপুটী কমিশনর মিঃ কুপার-পরিচালিত একদল ইংরাজসেনা ইরাবতী নদীতটে তাহদের সম্মুখীন হইয়া যুদ্ধ করে। এই যুদ্ধে দেশীয় পদাতিকদল সম্পূর্ণরূপে বিপৰ্য্যস্ত হয়। তদনন্তর দিল্লীনগরের অধঃপতন পর্য্যস্ত ইংরাজরাজ লাহোর রক্ষার বেশ সুবন্দোবস্ত করিয়াছিলেন । দিল্লী রাজধানী ইংরাজের পদানত হইল দেখিয় এখানকার বিদ্রোহী দল ইংরাজের বলবীৰ্য্য ও বীরত্ব দেখিয়া স্তম্ভিত ও ত্ৰাসযুক্ত হইয় পড়ে। তদবধি এখানে সার কোনরূপ বিপদের সুচনা হয় নাই । } লাহোর নগর ও মিঞানীর-গোরাবাজার, কস্বর, ছুনিয়ন পাট, ক্ষেমকর্ণ, রাজা জঙ্গ ও শূদ্ৰসিংহ নগর এখানকার প্রসিদ্ধ বাণিজ্যস্থান। খুদিয়ান ও শরখপুরে মিউনিসিপালিটী থাকিলেও লোকসংখ্যা সৰ্ব্বাপেক্ষ অল্প। গবমেণ্ট সাহায্যে এবং দেশীয় লোকের যত্নে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয় ব্যতীত এই সকল নগরে আমেরিকান বাপ্তিস্ত মিসন, চার্চ মিসনরি সোসাইট ও জেনন মিশন শিক্ষা-বিস্তার ও খৃষ্টধৰ্ম্মপ্রচারকল্পে বি%ালয় প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন । ১৮৬৩ খৃষ্টাব্দে লওন রিলিজস ট্রক্ট সোসাইটর সহযোগে পঞ্জাব রিলিজস ট্রাক্ট সোসাইট এখানকার আর্ণকালী বাজারে একটা পুস্তকাগার স্থাপন করিয়াছে। ইংরাজরাজ পঞ্জাব বিভাগে সুশিক্ষা ও মুশাসন বিস্তারে প্রয়াসী হইয়া স্থানে স্থানে যথারীতি রাজকৰ্ম্মচারী নিয়োগ করিয়াছেন। শিক্ষাবিস্তার প্রসঙ্গে তাহারা পঞ্জাব ইউনিভাসি ট্রী প্রতিষ্ঠা করেন । লাহের নগরের ওরিএন্টাল কলেজ, গবমেণ্ট কলেজ, ট্রেনিং কলেজ, নৰ্ম্মাল বিদ্যালয় সমূহ, স্কুল অব আর্ট (চিত্র বিদ্যালয় ), ল' স্কুল, জেনানা-মিশনের অধীনে ও আমেরিকা প্রেস্বিটেরিয়ান মিসনের অধীনে পরিচালিত বিদ্যালয়সমূহ, চর্টমিসনরি সোসাটার কর্তৃত্বাধীনে রক্ষিত সেন্টজনস্ ডিভিনিটি স্কুল এবং যুরোপীয় দেশীয় বালকবালিকাদিগের শিক্ষার্থে নানা বিদ্যালয় এই ইউনিভার্সিটির নিয়মাধীনে চলিতেছে । কস্থরবিভাগে ১৮৭৪ খৃঃ অঃ একটা শ্রমজীবী বিদ্যালয় (School of Industry) effort of উহাতে এখনও কাপেট ও বস্ত্রবয়ন, সল্যা চুমকীর কাজ, দক্ষ্মির কাজ, চৰ্ম্ম ও ধাতুর শিল্পচাতুর্থ্য প্রভৃতি শিক্ষা দেওয়া হয়। এতদ্ভিন্ন মেডিকাল কলেজ, মেওহাসপাতাল, ভেটরিনারি স্কুল (পশুচিকিৎসার বিদ্যালয়) ও লুনাটিক্ এসাইলাম (পাগলা-গারন) এখানকার রোগবিজ্ঞানশিক্ষার বিশেষ উপযোগী হইয়াছে। এই জেলার অধিবাসীদিগের মধ্যে জটি জাতির সংখ্যাই অধিক । উহারা প্রধানতঃ কৃষিজীবী । উচ্চাদের প্রায় নয় আন ভাগ অর্থাৎ ৮০ হাজার লোক পুৰ্ব্বপুরুষদিগের আচরিত্ন হিন্দু বা শিখধৰ্ম্ম পালন কবিতেছে এবং অবশিষ্টাংশ ইস্লামধৰ্ম্মের আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে। অপরাপর অধিবাসিগণ হিন্দু হইলেও মুসলমানজাতির সাহচৰ্য্য হেতু অনেকাংশে আপনাদের ধৰ্ম্মকৰ্ম্মে মুসলমানের আচারাদি মিশ্ৰিত করিয়া ফেলিতেছে ; কোন কোন জাতির শাখা ইসলামধৰ্ম্মীক্ষিতের বংশধর বলিয়া পরিচিত হইয়া রহিয়াছে। এই শেষোক্ত শ্রেণীর মধ্যে দুহরা, অরাইন, রাজপুত, জুলাহা, অরোরা, ক্ষত্রি, কুমার, তখান, মচ্ছি, তেলী, ঝিন্‌বার, ব্রাহ্মণ, মোচী, কুম্বো, ধোবী, নাই, লোহার, মিরাসী, লবান, খহরম, সোণার, গুজর ও দোগরা জাতিই