পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লাহোর [ २¢s ] লাহোর উল্লেখযোগ্য। ইহাদের মধ্যে হিন্দু ও মুসলমান শ্রেণী দেখিতে পাওয়া যায়। প্রকৃত মুসলমালবংশের মধ্যে শেখ, খোজা, কাশ্মীরের সৈয়দ, পাঠান, বলুচী ও মোগলই প্রধান। ইহার সকলে সিয়া, শুন্নি বা ওহাৰী মতাবলম্বী। ঐ সকল অধিবাসীর মধ্যে অধিকাংশই কৃষিজীবী। কতকাংশ শিক্ষণ ও সভ্যতা গুণে রাজকাৰ্য্যে অথবা জাপনা কাৰ্য্যে নিযুক্ত আছে। নিরক্ষর প্রজাবৃন্দ গৃহকৰ্ম্মে নিরত থাকিয়া অথবা পরের দাসত্ব অবলম্বন করিয়া জীবন অতিবাহিত করে । অপেক্ষাকৃত ধনী লোকে ব্যবসা বাণিজ্য অবলম্বন করিয়া কেহ বা মুটেগিরি করিয়া দিনপাত করিতেছে । এখানে রবি ও খরিফ দুই প্রকার শস্যই উৎপন্ন হয় । তন্মধ্যে গম, যব, ধান্ত, জোয়ার, বজরা, মক্কা, ছোলা এবং তৈলশস্ত ও অন্যান্ত শস্ত প্রধান । তুলা, তামাক ও শণ এখানে পৰ্য্যাপ্ত উৎপন্ন হয় । এই সকল শস্ত নৌকাপথে, রেলপথে এবং যানরোহণে নানা দুরবর্তী স্থানে রপ্তানী হইয়া থাকে। সিন্ধুপঞ্জাব দিল্লী এবং ইগুস্থ ভেলী রেলপথ দিয়া এই জেলার পণ্যদ্রব্য রায়বিন্দ হুইয়া করাচী বন্দরে সমানীত হইয়া ! থাকে। অপর দিকে নর্দান পঞ্জাব ষ্টেট রেলপথ পেশবার ; ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে এখানকার মাল পত্র লইয়া যাইতেছে। গ্র ট্রান্ধবোড নামক পথ ইরাবতী ও শতদ্র নদীর সেতু অতিক্র করিয়া লাহোর নগর হইতে উত্তরাভিমুখে পেশনার পর্য্যস্ত গিয়াছে । ঐ পথে এবং জেলার অপরাপর নগরসংযুক্ত পথে এখানকার পণ্যদ্রব্য গোশকটে নিরস্তব যাতায়াত করিতেছে । সুমিষ্ট ও প্রয়োজনীয় ফলের মধ্যে এখানে আম, কমললেবু, তুথফল, কুল, লকাট, খরবুজা, পেয়ারা, আনারস, ফলসা, দড়িম, সরবতী নেবু ও কদলী প্রচুর পাওয়া যায়। ২ উক্ত জেলার একটা তহসীল। বড়িদোয়াবের উত্তরপূর্ববিভাগ লইয়া গঠিত। ভূপরিমাণ ৭৪০ বর্গমাইল। অক্ষা ৩১°১৩% ৩০ হইতে ৩১° ৪৪' উঃ এবং দ্রাঘি” ৭৪২-৪৪ৰ্প হইতে ৭৪°৪২ পূঃ। এখানে ৭টা থানা, ৪৯• রেগুলার পুলিশ ও ৩২২ জনগ্রাম্য চৌকীদার অাছে। লাহোরনগর, পঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী ও লাহোর বিভাগের বিচার সদর । ইরাবতী নদীর অৰ্দ্ধক্রোশ দক্ষিণে ( অক্ষা” ৩১° ৩৪৫' উ. এবং দ্রাঘি" ৭৪২১ পু: ) অবস্থিত। প্রাচীন লাহোরনগরের ধ্বংসাবশেষের উপর বর্তমান নগর স্থাপিত হইলেও এখন তাহার সমুদায় প্রাচীন কীৰ্ত্তি গ্রাস করিতে পারে নাই। অদ্যাপি ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত নানা প্রাচীন নিদর্শন—অতীত স্মৃতির কীৰ্ত্তিমালা সাধারণের নয়নপথে সমুদিত রহিয়াছে। লাহোর নগরের স্বপ্রাচীন ইতিবৃত্ত ও প্রত্নতত্ব সম্বন্ধে আজিও কোনরূপ সবিশেষ প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। স্থানীয় হিন্দুগণের কিংবদন্তী অনুসরণ করিলে জানা যায় যে,রামায়ণোক্ত অযোধ্যাধিপতি শ্রীরামচন্দ্রের রাজত্বকালে লাহোর জনপদ কতকাংশে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়ছিল । তাহার দুই পুত্ৰ লব ও কুশ স্ব স্ব নামানুসারে লবাবাড় ও কুশর নগর স্থাপন করিয়া তদেশে আপনাদের শাসনবিস্তার করিয়ছিলেন। উহাই পরে লাহোর ও কমুর নামে খ্যাত হয় । কোন কোন প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে এই স্থান লবরণ (লবারণ্য) নামে উল্লিখিত হইয়াছে। উপরোক্ত কিংবদন্তী ব্যতীত লাহোর নগর প্রতিষ্ঠার আর কোনরূপ প্রমাণ পাওয়া যায় না । আলেকসান্দরের সমসাময়িক ঐতিহাসিকগণ এই জনপদের কোনরূপ উল্লেখ করিয়া ধান নাই, অথবা বহিলক-যবন বংশীয় (Graeeo Baetriam) a$${τεία প্রচলিত কোন প্রকার মুদ্রা এখানকার ধ্বস্ত স্তুপ মধ্য হইতে আজিও বহির্গত হয় নাই। এই সকল লক্ষ্য করিলে সহজেই অনুমিত হয় যে, ভারতেতিহাসের প্রাথমিক অবস্থায় লাহোর নগরের কোনরূপ সমৃদ্ধির পরিচয় ভারতবাসী অবগত ছিলেন না। খৃষ্টীয় ৭ম শতাদের প্রারম্ভে বেীন্ধ-ধৰ্ম্মতত্ত্বানুসন্ধিৎসু চীন-পরিব্রাজক হিউএনসিয়াং স্বীয় ভ্রমণবৃত্তান্তে এই নগরের সমৃদ্ধির উল্লেখ করিয়া সিয়াছেন । তাহতে বোধ হয় যে, খৃষ্টয় ১ম হইতে ৭ম শতদের মধ্যে লঙ্গের নগর প্রসমৃদ্ধিপূর্ণ থাকিয়া সাধারণের নয়ণ আকৃষ্ট করিয়াছিল। দেশামু হিন্দুরাজগণ এবং প্রাচীন মুসলমান-রাজগণের অধিকারকলে লাহের নগরেব প্রাথমিক অবস্থা কিরূপ ছিল, তাহ লাহোর জেলার ইতিহাসে কতকাংশে বিপ্লুত হইয়াছে । আজমীর রাজবংশীয় এক জন চৌহানরাজপুত এখানে রাজত্ব করিতেন । তদ্বংশীয় জয়পাল ও অনঙ্গপালের শাসনকাল পৰ্যন্ত এই স্থানে হিন্দুরাজ প্রভাব প্রতিষ্ঠিত ছিল । তদনন্তর যথাক্রমে গজনী ও ঘোরবংশীয় মুসলমান সুলতানগণ পঞ্চমদ বিজয়ের পর এখানে রাজধানী স্থাপন করেন । তাহারা যে সকল সৌধমালায় এই নগর বিভূষিত করিয়াছিলেন, তাহার অধিকাংশ এক্ষণে ধ্বস্তাবস্থায় পতিত । মোগল-সলাটুগণের রাজত্বকালে লাহোর নগরের র্সমা পরিবদ্ধিত এবং নানা সুবৃহৎ অট্টালিকায় ইহার সম্পাদিত হইয়াছিল, মোগলরাজ দুমাপুন, অকবর শাহ, জাহাঙ্গার, শাহ জহান ও অরঙ্গজেব এথানকার স্থাপত্য শিল্পের পরাকাষ্ঠী সম্পাদন করিয়াছিলেন। তাহাদের অধিকারকালে লাহোর নগরের ইতিহাসে প্রকৃতপক্ষে স্বর্ণযুগ উপস্থিত হইয়াছিল। সম্রাট আকবর এখানকার ছুগের আকার পরিবৰ্ত্তিত করিয়া তাহার সংস্কার সাধন করেন। তিনি এই নগরের চতুর্দিকে