পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লেপন মৰ্ম্ম এই যে, “তোমার ভৰপারে গমনের সুবিধার্থ যাবতীয় প্রক্রিয়াই অনুষ্ঠিত হইল। এক্ষণে তুমি স্বচ্ছন্দে একাকী ধৰ্ম্মরাজ খমের নিকট গমন করিতে পার।” ইহাই তাহাদের বৈতরণীপারের ব্যবস্থা বলিতে হইবে। প্রধান লামার বক্তব্য শেষ হইলে, অপরাপর লামাগণ আসিয়া সেই মূৰ্ত্তিকে বস্ত্রহীন করিয়া ফেলে। ঐ সময়ে অপ রাপর লোকে শঙ্খ, শিঙ্গা, ঢাক, করতাল প্রভৃতি বিবিধ বিকট বাস্ত করিতে করিতে মঠের বাহিরে আসিয়া মৃতব্যক্তির আত্মাকে অন্ধকারময় স্থানে লইয়া নিক্ষেপ করণানন্তর পুনরায় মঠমধ্যে ফিরিয়া আইসে । পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, লেপছাদের মধ্যে কোনরূপ জাতিবিচার নাই। যাহার নেপালরাজ্য মধ্যে হিন্দুরাজার অধীনে বাস করে, তাহার সেইরূপ রাজনিয়মের বশবৰ্ত্তী হইয় আপন আপন ধৰ্ম্ম পালন করে। নেপালে ইহারা গোহতা করিতে পারে না। দার্জিলিঙ্গে কিন্তু ইহারা গো শূকর প্রভৃতি যাবতীয় পশুমাংসই ভক্ষণ করে । বনমধ্যস্থ মৃত পশ্বাদিতে ইহাদের অরুচি নাই। মৃত হস্তীর পচা মাংস ইহারা বিশেষ আদরে ভক্ষণ করিয়া থাকে । এতদ্ভিন্ন পৰ্ব্বতজাত ফল, মূল, চাউল ও ময়দার রুটা প্রভৃতি তাহদের ভক্ষ্য। চাউল, ও ময়দার জন্য ইহার ধান্ত, গোপূম, যব, ভূট্টা প্রভৃতি শস্তের চাস করিয়া থাকে। এই চাউল, দুটা বা মউয় হইতে ইহার মন্থ প্রস্তুত করিয়া পান করে। যখন কোন দূর স্থানে গমন করে, তখন ইহারা বাশের চোঙ্গায় মদ লইয়া যায়। পথিমধ্যে *াশের চোঙ্গায় চাউল সিদ্ধ করিয়া ভোজন করিয়া থাকে, কিন্তু ঘরে থাকিলে সাধারণতঃ লৌহ কড়াতেই ভাত রাধে । খাদ্যাদি সম্বন্ধে ইহাদের বিশেষ কোন পারিপাট্য নাই। লেপন (ক্লী) লিপ-লুটি। লেপ, চলিত লেপা। “বৈশাখস্ত সিতে পক্ষে তৃতীয়াক্ষয়সংজ্ঞিতা । তত্ৰ মাং লেপয়েদগন্ধলেপনৈরতিশোভন ॥” (তিথিতত্ত্ব) গোমস্থাদি দ্বারা দেবগৃহ লেপন করিলে ইহলোকে বিবিধ মুখ ও পরলোকে স্বৰ্গলাভ হইয়া থাকে। পুরাণাদি ধৰ্ম্মশাস্ত্রে লেপনের বিশেষ প্রশংসা লিখিত আছে— -শৃণু তত্ত্বেন মে দেবি লিপ্যমানন্ত যৎ ফলম্। সৰ্ব্বং তে কথয়িষ্যামি যথা প্রাপ্নোতি মানবঃ ॥ গোময়ং গৃহ বৈ ভূমে মম বেশ্বোপলেপয়েং। ন্যস্তানি তত্র যাবস্তি পদানি চ বিলিম্পতঃ ॥ তাবদ্ধর্ষসহস্রাণি দিব্যানি দিবি মোদতে । যদি দ্বাদশ বর্ষাণি লিপ্যতে মম কৰ্ম্মসু ॥”( বরাহপুরাণ ) ২ গারে লেপপ্রদান, গাত্রে চন্দনাদি লেপন। মঙ্গতে [ లిeరి ) লেপন লিখিত আছে যে, স্নানের পর লেপন বিধেয়, এই লেপন অঙ্গে প্রয়োগ করিলে সৌভাগ্য এবং দেহের লাবণ্য বৃদ্ধি হয়। ইহা দেহের দৌর্গন্ধ ও শ্রমনাশক । যে সকল অবস্থায় স্নান নিষিদ্ধ, সেই অবস্থায় লেপন ও নিষিদ্ধ। লেপন তিন প্রকার, দোষ ও বিষনাশক এবং বর্ণ্যকর। ইহা আবার ২ প্রকার, প্রদেহ ও আলেপ । ইহার • মধ্যে আলেপ পিত্তনাশক এবং প্রদেহ ত্ৰাতশ্লেষ্মনাশক। লেপ রাত্রিকালে নিষিদ্ধ। কিন্তু ত্ৰণাদিতে লেপ দিতে হইলে রাত্রিকালেও দেওয়া যাইতে পারে। “দোষত্ত্বে বিষহ বর্ণ্যে লেপস্তুেবং ত্রিধ মতঃ । দ্বেী তন্ত কথিতে ভেদে প্রলেহtখ্যপ্রদেহকোঁ ॥” (সুশ্রুত ) ভাব প্রকাশে লিখিত আছে যে, প্রতিদিন গাত্রে আমলকী লেপন করিয়া স্নান করিলে বলিপলিত রোগ হইতে মুক্ত হইয়। শত বৎসর কাল জীবিত থাকিতে পারা যায় । স্বানের পর পরিষ্কৃত বস্ত্র পরিধান করিয়া সুগন্ধি দ্রব্য দ্বার গাত্রে লেপন করিবে। শীতকালে চন্দন, কুঙ্কুম এবং কৃষ্ণ গুরু একত্র মিশিত করিয়া গাত্রে লেপন করিবে, ইহা উষ্ণ বায়ু এবং কফনাশক। গ্রীষ্ম ও শরৎ কালে চন্দন, কপুর ও বালা মিশ্রিত করিয়া লেপন করিবে, ইহা সুগন্ধি ও অতি শীতল। বর্ষাকালে চন্দন, কুঙ্কুম এবং কস্তী মিশ্ৰিত করিয়া লেপন করিবে, কারণ এই লেপ উষ্ণ ও নহে, শীতল ও নহে । * * উপযুক্ত পরিমাণে লেপন প্রয়োগ করিলে পিপাস, মুছ1, দুৰ্গন্ধ, ঘৰ্ম্ম ও দাহ বিনষ্ট হয় এবং সৌভাগ্য, তেজ, বর্ণ, প্রতি ও বল বৃদ্ধি হইয়া থাকে স্বানের অযোগ্য ব্যক্তির পক্ষে লেপন নিষিদ্ধ। স্নান না করিয়া লেপন প্রয়োগ করিবে না। এই লেপন কফন্ত্র, মেদোনাশক, শুক্রজনক, বলকারক, রক্তবৰ্দ্ধক এবং চৰ্ম্মের প্রসন্নতা ও কোমলতকারক । মুখ লেপ দ্বারা চক্ষু স্থির, গণ্ডস্থল স্থূলতর এবং বদন স্থল, কমনীয়, ব্যঙ্গ ও পীড়করহিত ও কমল সদৃশ হইয়া থাকে। শরীর-লেপনের পর ভূষণ পরিধান বিধেয়। (ভাবপ্র, পুৰ্ব্বথ ) মুখতে লিখিত আছে, লেপ তিন প্রকার, প্রলেপ, প্রদে৮ ও আলেপ । ইহার মধ্যে শুষ্ক হউক বা না হউক, শীতল বা অল্প হইলেই তাহকে প্রলেপ কহে । উষ্ণ অথবা শীতল, অনেক বা অল্প এবং শুষ্ক এরূপ হইলে প্রদেহ, এই উভয় প্রকারের মধ্যবৰ্ত্তী হইলে তাহাকে আলেপ কহে । রক্তপিত্ত জন্য রোগে আলেপ বিধেয় এবং বাতশ্লেষ্মজষ্ঠ্য রোগ হইলে অথবা ভগ্ন অস্থির সংযোগ করিতে হইলে অথবা লগের শোধন বা পুর্ণ করিতে হইলে বা ফুল স্থানে বেদন হইলে প্রদেহ বিধেয় । ক্ষত বা অক্ষত এই উভয় স্থানেই