পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বক্রোক্তি প্রাণান্ত হইলেও আমার নাম যেন থাকে এই প্রথম বর চাই, এবং তোমার নিকটই যেন আমার অস্তিম কাল শেষ হয়, এই বর ও চাই। শিব কছিলেন, মহারাজ ! তুমি ধন্ত, যেহেতু তোমার ঈদৃশী ইচ্ছা হইয়াছে ; তোমার অন্ত বর লইতে লোতও হইল না । মহারাজ শ্বেত শোন, মামার নিকটে যে জাহ্নবী রহিয়াছে, ঠামার স্নানার্থ যাহাতে নানা তীর্থের সমাগম হইয়া থাকে, আজ হইতে তাহা তোমার নামানুসারে শ্বেতগঙ্গা নামে খ্যাত হইবে ও তুমিও অন্তকালে আমার পদ লাভ করিবে সন্দেহ নাই । তোমার চরিত্র যে শুনিবে ও তোমার স্তোত্র যে পাঠ করিবে, তাহার স্বগ লাভ হইবে, তাহাকে আর যমালয়ে যাইতে হইবে না। আমার নিকট এই শ্বেতগঙ্গাজলে স্নান করিয়া যে পিও দান করিবে, তাহার গয়া শ্রান্ধের সমান ফল হইবে।” উদ্ধৃত প্রাচীন কাহিনী হইতে মনে হইবে যে, নানা উষ্ণপ্রস্রবণশোভিত এই নিভৃত স্থান বহু ঋষি তপস্বীর প্রিয় নিকেতন বলিয়া গণ্য হইলেও শ্বেত নামে কোন হিন্দু রাজার য়েই এই পুণ্যক্ষেত্রের পুতাও তীর্থ লিয়া পরিচিত হইয়াছে। এখনও নানাস্থান হইতে বহু যাত্রী এই তীর্থ সন্দর্শনে গমন করিয়া থাকে। এই স্থান অতি স্বাস্থ্যকর, এখানকার কুগুরূপী উঞ্চ প্রস্রবণসমূহের জল প্রকৃতই নানা রোগনাশক। বলেক্তি (স্ত্রী) বক্র কুটিল উক্তিঃ । ১ কাকুক্তি। দ্ব্যর্থউক্তি। “অৰ্থ বৃত্তে বৃষোৎসর্গে দাতা বক্রোক্তিভিঃ পদৈঃ। ব্রাহ্মণ্যনাহ যৎকিঞ্চিৎ ময়োৎস্থঃস্তু নির্জনে ॥ তৎকিঞ্চিদন্তে ন নয়ের বিভাজ্যং যথাক্রমম্। ন বাহং ন চ তৎক্ষীরং পাতব্যং কেনচিৎ কচিৎ ৷” ( কামধেনুকল্পতরুস্কৃত ব্ৰহ্মপুরাণ ) ২ কুটিলোক্তি। বাকা কথা । “বাদী ব্যাকরণং বিনৈব বিদুষাং ধৃষ্ট: প্রবিষ্ট: সভাম্ জল্পন্নল্পমতিঃ স্মারাৎ পটুবটুক্র ভঙ্গবক্রোক্তিভিঃ। স্ত্রীত; সনুপহাসমেতি গণকে গোলানভিজ্ঞস্তথা জ্যোতিৰ্ব্বিংসদসি প্ৰগলভগণকঃ প্রশ্নপ্রপঞ্চোক্তিভিঃ ” ( সিদ্ধান্তশিরোমণি-গোলাধ্যায় ) বক্র অর্থাস্তরগ্রহণেন কুটিল উক্তিঃ । শব্দালঙ্কার বিশেষ। কাব্যাদিতে শ্লেষবাক্যপ্রয়োগ বা ব্যঙ্গোক্তিকে বক্রোক্তি বলা যায়। সাহিত্যদর্পণের ১০ম পরিচ্ছেদে ইহার বিষয় এইরূপ বাণত আছে--- “অন্তস্তান্তার্থকং বাক্যমন্তথা যোজয়ে যদি । অন্তঃশ্লেষেণ কাক্কা বা সা বক্রোক্তিস্ততে দ্বিধা ॥” ( সাহিত্যদর্পণ ১৭৬৪৯ প” ) সাধারণতঃ বক্রোক্তিতে দুইটী অর্থ প্রকাশ করিয়া থাকে। [ ७१७ ] * বক্রোলক উহার একটা শ্লেষার্থক ও অপরটা কাকু অর্থবাচক। নিয়োক উদাহরণে তাহা স্পষ্টীকৃত হইয়াছে।--

  • কে যুদ্ধং স্থল এব সম্প্রতি বরং প্রশ্নে বিশেষাপ্রয়ঃ কিং ক্ৰতে বিহগ: স বা ফণিপতিৰত্ৰাস্তি কুপ্তে হরিঃ । বাম মূমিহে বিড়ম্বরসিক: কীদৃঙ্ক পরে বর্ততে “ যেনাশ্বাস্থ বিবেকপূক্তমনসঃ পুংস্তেব যোবিদ ভ্ৰমঃ ” ‘কে বুয়ং তোমরা কে ? এই প্রশ্নে উত্তরদাতা খলিল, জামরা জলে নহি, সম্প্রতি স্থলেই আছি। এখানে কে’টকে কিম্শকের প্রথম বিভক্তির বহুবচন-নিম্পন্ন গ্রহণ না করিয়া জলবাচক কং শব্দের সপ্তমী বিভক্তির একবচন-নিম্পন্ন ‘কে’ পদ গ্রহণ করিয়া উত্তর সাধিত হওয়ায় ৰক্রোক্তি ঘটিয়াছে। প্রত্যুত্তরে-প্রশ্নে. বিশেষাপ্রয়ঃ’ পদে জিজ্ঞাস্ত জ্ঞাপন করা হইয়াছে। এ স্থলে ‘বি’ পক্ষী ও ‘শেষ’ অনন্ত ( নাগ ) এই বিশেষ অর্থ গ্রহণ করিয়াই উত্তর হইয়াছিল; বিশেষ শব্দের সাধারণ অর্থ গৃহীত হয় নাই – তবে কি তোমরা বলিতেছ, আমরা পক্ষী, অথবা সৰ্প যেখানে হরি শয়ন করিয়া আছেন ? এখানে বিশেষ শব্দের সাধারণ অর্থ পরিত্যক্ত এবং বি-শৰে পক্ষী ও শেষ শব্দে সৰ্প অর্থ গৃহীত হওয়ায় বক্রোক্তি হইয়াছে।’

দ্বিতীয়াদ্ধে—আহা! তবে কি তোমরা বাম,অৰ্থাৎ প্রতিকূল অর্থ গ্রহণ করিয়া থাক,(বাম শব্দের একটী অর্থ প্রতিকূলবানী)। কারণ আমরা এক অর্থে প্রশ্ন করিতেছি, তোমরা অন্ত অর্থে গ্রহণ করিতেছ! উত্তরবাদী বামাশন্ধের প্রতিকূলবাদী অর্থ গ্ৰহণ না করিয়া বামাশৰে সাধারণতঃ স্ত্রী অর্থ গ্রহণ করিয়া বলিল,-ওহে প্রতারণাপটু, তোমার কিরূপ কামনা হইতেছে, যে কামনোদিত হওয়ায় বিবেকশুন্য হইয় পুরুষেতে তোমার নারীভ্রাস্তি উপস্থিত । এ স্থানে বামাশদেরও দুইটি অর্থ ১ম স্ত্রী২য় প্রতিকুলবাদী। প্রশ্নকৰ্ত্তা প্রতিকূলবানী অর্থে প্রয়োগ করিয়াছেন, কিন্তু উত্তরদান্ত স্ত্রী অর্থ গ্রহণ করিয়া উত্তর দিতেছেন, ইহাই বক্রোক্তি। এই অর্থ দ্বয়ের যোগ হেতু ইহা সভঙ্গ শ্লেষ বলিয়া কথিত । অস্তপক্ষে ইহা অভঙ্গ। “কালে কোকিলবাচালে সহকার মনোহরে । কৃতাগস: পরিত্যাগাং তস্তাশ্চেতো ন দুয়তে ” কোকিল কলরব পরিপূর্ণ আম্রমুকুল বিকলিত মনোহর বাস্ত কালে কৃতাপরাধ কান্তকে ত্যাগ করির কামিনীর চিত্ত বধিত হইতেছে না, বস্তুতঃ ব্যথিত হইতেছে। এখানে নিষেধাৰ্থে নএ, শকা প্রযুক্ত হইয়াছে, কিন্তু অপরপক্ষে কাৰণ অর্থাৎ ধ্বনি বিশেষ দ্বারা বিধি অর্থও সংঘটিত হইতেছে। বক্রোলক (পুং ) একটা গওগ্রাম। (কথাসরিৎসা ৭৬৷১৮) ২ তন্নামীয় একটি নগর । (কথাসরিৎসা ৯৩।৩)