পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৪১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদেশ ( ব্রাহ্মণপ্রভাব ) [ 8> * J বঙ্গদেশ ( বৌদ্ধপ্রভাব ) ফিরতে হয়। পাটলিপুত্রের পূৰ্ব্বে যবনের অগ্রসর হইতে সাহসী হন নাই। অনেকে মনে করেন যে, তৎকালে যবনের অশোককীৰ্ত্তিসমূহ ধ্বংস করিয়া যান। আবার বৌদ্ধগ্রন্থ মতে পুষ্যমিত্রই অশোকের কীৰ্ত্তিলোপের কারণ। যাহা হউক, যবন আক্রমণে মগধ রাজ্য অনেকটা বিশৃঙ্খল হইয়া পড়িয়াছিল। তৎপরে বৃদ্ধ নৃপতির মৃত্যু হইলে তাহার বংশধরকে ফাকি দিয়া অপরে রাজ্যগ্রহণের ষড়যন্ত্র করিতেছিল । সেই ষড়যন্ত্রের ফলে অভিনয় কালে মিত্রদেবের হস্তে অগ্নিমিত্র ছিন্নশিরা হইলেন । ষড়যন্ত্রকারীরা অগ্নিমিত্রের কনিষ্ঠ সুজ্যেষ্ঠকে রাজা করিলেন । কিন্তু শুঙ্গ সুজ্যেষ্ঠের ভাগ্যেও বেশীদিন রাজ্যভোগ ঘটিল না। মহাবীর বসুমিত্র অল্পদিন পরেই পৈতৃক সিংহাসনে অভিষিক্ত হইলেন । বৈদিক ধৰ্ম্মপ্রচার করিবার জন্তই মহাবীর বসুমিত্র দাক্ষিণাত্য হইতে বেদজ্ঞ বিপ্র মানাইয়া তাহাদিগকে রাজগৃহ প্রদান করিয়াছিলেন । বসুমিত্র ও তৎপরবর্তী অন্তক, পুলিন্দক, ঘোষবস্তু, বঞ্জমিত্র, ভাগবত ও দেবভূমি প্রভৃতি শুঙ্গ রাজগণ সকলেই দেববিপ্ৰভক্ত ছিলেন । এই বংশ ১১২ বৰ্ষ অর্থাৎ প্রায় ৬৪ খৃঃ পূৰ্ব্বাদ পৰ্য্যন্ত রাজ্যভোগ করেন । দেবভূমি অতিলম্পট ও ব্যসনাসক্ত ছিলেন, তাহাকে বিনাশ করিয়া তাহার ব্রাহ্মণমন্ত্রী বসুদেব সিংহাসন অধিকার করেন । বসুদেব হইতেই কাঞ্চ বা কাথায়ন ব্রাহ্মণ-বংশের প্রতিষ্ঠা । বসুদেব, ভূমিমিত্র, নারায়ণ ও মুশৰ্ম্ম কাঞ্চ বংশীয় এই ৪ জন নৃপতি ৪৫ বর্ষ মাত্র ( প্রায় ২০ খৃঃ পূৰ্ব্বাদ পর্যন্ত) পাটলিপুত্রে অধিষ্ঠিত ছিলেন । শুঙ্গ ও কাদিগকে শাকদ্বীপী বলিয়া মনে হয় । তাহাদের সময়ে কেবল পূৰ্ব্বভারত বলিয়া নহে, সমগ্র ভারতবর্ষে সৌরমত ও প্রতিমাপূজা প্রচলিত হয় । সৌর, ভাগবত, পাঞ্চরাত্র এবং পৌরাণিকগণেরও অভিনব অভু্যত্থান হইয়াছিল। শুঙ্গ ও কীর্ঘদিগের আধিপত্য কালেষ্ট উত্তর পশ্চিম ভারতে শকজাতির অভু্যদয় । [ ভারতবর্ষ শব্দে শক বিবরণ দ্রষ্টব্য। ] বসুমিত্রসম্মানিত রাজ্যগৃহস্থিত বৈদিকবিপ্রগণ বৎস, উপমনু্য, কৌশুিষ্ঠ, গৰ্গ, হারিত, গৌতম, শাণ্ডিল্য, ভরদ্বাজ, কৌশিক, কাশুপ, বশিষ্ঠ, বাৎস্ত, সাবর্ণি ও পরাশর এই ১৪টা গোত্রে বিভক্ত ছিল । পরবত্তীকালে এই সকল দক্ষিণাত্য বিপ্রসন্তান বঙ্গের নানাস্থানে বিস্তৃত হইয়া পড়িয়াছিলেন । কিন্তু তাহারাও জৈনবৌদ্ধপ্রভাবময় বঙ্গের জলবায়ুগুণে কিছুকাল পরে অনেকটা বৈদিকাচারভ্রষ্ট হইয় পড়েন । এই সময়ে বঙ্গের স্থানে স্থানে বন্ত প্রদেশে মেদ, কৈবৰ্ত্ত প্রভৃতি জাতির আধিপত্য হইতে cभ५ीं धांग्न । দাক্ষিণাত্যের অন্ধ রাজগণের হন্তে ৰাখবংশ রাজ্য হারাই। উত্তর পশ্চিমভারতে শকক্ষত্রপগণের আশ্রয় গ্রহণ করেন । আন্থগণ পাটলিপুত্র অধিকার করিলেও এখানকার রাজধানী তাহাদের বাসপোযোগী হয় নাই । তাহার এথানে প্রতিনিধি রাখিয়া দাক্ষিণাত্যে প্রস্থান করেন। বাহা হউক, তৃৎকালে পূৰ্ব্বভারতে দ্রাবিড়ীয় আচার কতকটা প্রবর্তিত হইয়াছিল। কিন্তু প্রতিনিধিগণের স্বার্থ সাধনচেষ্টায় রাজ্য মধ্যে অস্তবিপ্লবের স্বচনা হইল ; তাহারই ফলে অঙ্গ, বঙ্গ ও মগধরাজ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত হইত্ব এক এক স্বাধীন নরপতির শাসনাধীন হইয়া পড়িল । এ সময়ে পশ্চিম প্রদেশে শকাধিপত্য দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। শাকদ্বীপী কাশ্বব্রাহ্মণদ্বিগের ধৰ্ম্মোপদেশে শাকরাজগণ ভারতীয় দেববিগ্রপূজক ও প্রজারঞ্জক হইয়া পড়িলেন । প্রজাগণও র্তাহাদের অনুরক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। সুতরাং পুৰ্ব্বদিকে আধিপত্য বিস্তারের সময় তাহাদিগকে বেশ কষ্ট পাইতে হয় নাই। শকদিগের শুভদিন আসিয়া পড়িল । খৃষ্টীয় ১ম শতাদে শকাধিপ কনিষ্ঠ ভারত সম্রাটু হইলেন। সারনাথের ভূগর্ভ হইতে সম্প্রতি মহারাজ কনিক্ষের ষে স্তম্ভ লিপি আবিস্কৃত হইয়াছে, তাহার অনুসরণ করলে মনে হইবে, যে পূৰ্ব্বভারত ও কনিষ্কের সাম্রাজ্যভুক্ত হইয়াছিল । তিনি অনেকটা উদারনৈতিক হইলেও তাহার শিলালিপিসমূহ তাহার বৌদ্ধধৰ্ম্মানুরাগ ঘোষণা করিতেছে । তাহার যত্নে বারাণসীর ছায় অঙ্গ, বঙ্গ ও কলিঙ্গেও মহাযান বৌদ্ধমত প্রচারিত इहेम्नांछ्ठि । মহারাজ কনিষ্কের পুরুষপরে (বর্তমান পেশাবরে ) রাজধানী ছিল । তিনি এই সুদুর পশ্চিম সীমান্তে অধিষ্ঠিত থাকিয়াও কাসঘর, য়ারকন্দ, থোতন প্রভৃতি মধ্য এসিয়াস্থ সুদূর উত্তর প্রদেশ হইতে দক্ষিণে বিন্ধ্যাদ্রি এবং পূৰ্ব্বে অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গে পৰ্য্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করিয়াছিলেন । ‘ধৰ্ম্মপিটকসম্প্রদায়নিদান’নামক বৌদ্ধগ্রন্থমতে মহারাজ কনিষ্ক পাটলিপুত্রে আসিয়া এখানকার রাজাকে জয় করিয়া বৌদ্ধস্থবির অশ্বঘোষকে লইয়া যান। সম্প্রতি সারনাথ হইতে তথাকার সমতল ভূমির ১•হাত মৃত্তিক নিয়ে সম্রাট কনিষ্কের শিলালিপি ও কীৰ্ত্তি আবিষ্কৃত হইয়াছে। ঐ শিলালিপি হইতে জানা যায়, তৎকালে বারাণসীপ্রদেশ মহারাজ কনিষ্কের অধীন থরপল্লল নামক এক ( শক ) ক্ষত্রপের শাসনাধীন ছিল । পাটলিপুত্রের প্রাচীন ভূগর্ড রীতিমত খনিত ও উদঘটিত হইলে সারনাথের স্তায় সুপ্রাচীন কনিষ্কৰ্কীৰ্ত্তি আবিষ্কৃত হইতে পারে। তাহা হইলে আমরা জানিতে পারিব, পূৰ্ব্বভারতে তাহার অধীনে কোন ক্ষত্রপ (Satrap ) আধিপত্য করিতেছিলেন।