পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৪১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

蠍 বঙ্গদেশ ( বৌদ্ধ ও শৈব প্রভাব ) কনিষ্কের প্রভাবেই শক, যবন, পারদ ও ভারতীয় ভাস্করশিল্পের সমীকরণ হয় । সম্রাটু অশোকের সময় কেবল ভারত পুলিয়া নহে, সুদূর মধ্যএসিয়া ও যুরোপখণ্ডে বৌদ্ধধৰ্ম্ম প্রচারিত হঠলে ও বুদ্ধদেবের কোন প্রকার প্রতিমা প্রতিষ্ঠিত হয় নাই । অশোস্তুের সময় বুদ্ধপ্রতিমা-পুঞ্জার আবশুকতাও কেহ হৃদয়ঙ্গম করেন নাই। জামরা পুর্বেই লিখিয়াছি যে, শাকদ্বীপায়গণই ভাবতে দেব প্রতিমা নিৰ্ম্মাণ করিয়া প্রচার করেন । এই প্রথার অনুবন্ত্ৰী হইয়া মহাযান মত প্রচারের সহিত শাকপতি বুদ্ধের লীল বিষয়িণী নানা প্রতিমা গড়াইয়া ভারতের নানা পুণ্যস্থানে প্রতিষ্ঠিত করিতে লাগিলেন। সেই সকল অপূৰ্ব্ব ভাস্করশিল্পের নিদর্শন ভারতের নানা স্থান হইতেই আবিষ্কৃত হইয়াছে। ঐ সকলের শিল্পনৈপুণ্যদর্শনে ভারতীয় শিল্পিগণ সভ্যজগতের প্রশংসাভাজন হইয়াছেন । কনিষ্ক যে মহাযান মত প্রচার করিয়া যান, কালে তাহা সংশোধিত ও পরিবর্তিত হইয়া তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধৰ্ম্মের সৃষ্টি করিয়াছিল। একদিন সমস্ত বঙ্গদেশ এই তান্ত্রিক বৌদ্ধসাগরে ডুবিয়া গিয়াছিল, সে কথা পরে লিখিব । - মহারাজ কনিষ্কের পর তৎপুত্র ছবিষ্ক বা হুঙ্ক সিংহাসনে অভিষিক্ত হইলেন। পেশাবর হইতে পূৰ্ব্ব বঙ্গ পর্য্যস্ত র্তাহার তাপিকারভুক্ত ছিল । নানাস্থান হইতে র্তাহার যে সকল শিলালিপি ও মুদ্রালিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহা হইতে মনে হয় যে, তিনি তাহার পিতৃদেব অপেক্ষ দীর্ঘকাল সাম্রাজ্য শাসন করেন। তাহারও সময়ে পূৰ্ব্বভারত শাসন কবিবাব জন্ত পাটলিপুত্রে তােহর অধীনে একজন ক্ষ এপ অধিষ্ঠিত ছিলেন । ছবিন্ধের পুত্র শকাধিপ বসুদেব বা বামুদেব । তিনি ৭৪ হইতে ৯৮ শকাব্দ পর্য্যন্ত সাম্রাজ্যভোগ করেন । র্তাহার মুদ্রায় শিব, ত্ৰিশূল ও নন্দিমূৰ্ত্তি অঙ্কিত থাকায় তাহাকে শৈব নরপতি বলিয়াই গ্রহণ করা যায়। কনিষ্ক যে সুবিস্তীর্ণ সাম্রা...জ্যৰ পত্তন করিয়া যান, বসুদেবের সময় তাহার ধ্বংসের সূত্রপাত হইল। সম্ভবতঃ তাহার ধৰ্ম্মাস্তুর গ্রহণে র্তাহার অধীন দূরদেশবাসী ক্ষত্রপগণ বিরক্ত হইয়া সকলে স্বাধীন হইতে থাকেন। তন্মধ্যে উজ্জয়িনীপতি রুদ্রদাম প্রধান । তিনি ময়কাল মধ্যেই অবন্তী, অনুপ, নীবৃন্দ্র, আনৰ্ত্ত, স্বরাষ্ট্র, শ্বভ্র, ভককচ্ছ, সিন্ধু, সোঁবীর, কুকুর, অপরান্ত, নিষাদ প্রভৃতি জন পদ অধিকার করিয়া মহাক্ষত্রপ উপাধি গ্রহণ করেন। পাটলিপুত্রের ক্ষত্রপও তদমুবৰ্ত্তী হইয়াছিলেন। এই রাজদ্রোহিতার সময়ে পাটলিপুত্রের নিকট লিচ্ছবিগণ প্রবল হইয় উঠে। অঙ্গ-বঙ্গের সামন্তরাজগণও স্বাধীনতা অবলম্বন করেন। উত্তরপশ্চিম সীমাস্তে পারসিক সাসনবংশ মন্তকোত্তলন করিতে [ 8>> ) বঙ্গদেশ (ব্রাহ্মণ্যপ্রভাব ) থাকেন। বলতে কি, বসুদেবের মৃত্যুর সহিত উত্তরভারতীয় শাকসাম্রাজ্য ধ্বংস হইল এবং আভীর, গল্পভিল্ল, লিচ্ছবি, নাগ, হৈহয় প্রভৃতি জাতি নানাস্থান অধিকার করিয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যের সৃষ্টি করিল, ক্ষত্রপনাম উত্তরভাবত হইতে বিলুপ্ত হইল । খৃষ্টীয় ২য় শতান্ধের শেষভাগে লিচ্ছবিগণ পাটলিপুত্র অধিকার করেন । দুঃখের বিষয়, তাহাদের ইতিহাস লিখিবার উপকরণ এখনও বাহির হয় নাই। পূৰ্ব্বভারতের নানা স্থানে কর্তৃত্বস্থাপনে প্রয়াসী সামন্তগণের দ্বারা অন্তর্বিদ্রোহ উপস্থিত হয়, তাহার ফলে অনেক রাজকুমার স্বদেশ পরিত্যাগ করিয়া সুদূর কম্বোজ (বর্তমান কম্বোডিয়া ), অঙ্গদ্বীপ ( অল্পম্) ৪ যবদ্বীপে গমন করেন এবং নবজিত কম্বোঞ্জ প্রভৃতি স্থানে শৈব ও ব্রাহ্মকীৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত করেন ; বহুশত বর্ষ অতীত হইতে চলিল, এখনও সেই সকল হিন্দুকীৰ্ত্তি বিদ্যমান রহিয়াছে । খৃষ্টীয় ৩য় শতাবো মধ্যভারতে ত্ৰৈকুটক বা হৈহয়বংশ প্রবল হইয়া উঠে । এই বংশীয় ঈশ্বরদত্ত ২৪৯ খৃষ্টাব্দে উজ্জয়িনীর ক্ষত্রপদিগকে পরাজয় করিয়া চেদি বা কলচুরি সংবৎ প্রবর্তন করেন । তাহার অভু্যদয়ে হৈহয়গণ অঙ্গবঙ্গ অধিকারের চেষ্টা করেন, কিন্তু তাহদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। খৃষ্টীয় ৩য় শতাদের শেষভাগে গুপ্ত ও তৎপুত্র ঘটোৎকচ নামে দুইজন সামন্ত-মহারাজ মগধে প্রবল হইয় উঠেন । ঘটোৎকচের পুত্র ১ম চন্দ্রগুপ্ত লিচ্ছবি-রাজকম্ভ কুমারদেবীকে বিবাহ করিয়া পাটলিপুত্রের সিংহাসন লাভ করেন। অল্পদিন মধ্যে তিনি আর্য্যাবৰ্ত্তের সম্রাটু হইয়া পড়িয়াছিলেন। তাহার সময়ে পুষ্করাধিপ চন্দ্ৰবৰ্ম্ম বঙ্গদেশ জয় করেন। বাঁকুড়ার সুশুনিয়া পাহাড়ে চন্দ্ৰবৰ্ম্মার শিলালিপি উৎকীর্ণ অাছে। তিনি বৈঞ্চব ছিলেন । ১ম চন্দ্র গুপ্তের পুত্র সমুদ্রগুপ্ত অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন। এই অশ্বমেধ উপলক্ষে তিনি মহাবীর চক্ৰবৰ্ম্ম, রুদ্রদেব, মতিল, নাগদত্ত, গণপতিনাগ, নন্দী, বলবৰ্ম্ম প্রভৃতি আৰ্য্যবৰ্ত্তের নরপতিগণকে পরাজয় করিয়াছিলেন । এছাড়া অচ্যুত ও নাগসেনের ধ্বংসসাধন, এবং কোশলাধিপ মহেন্দ্র, মহাকাস্তাবপতি ব্যাঘ্ররাজ, কেরলপতি মন্টরাজ, পিষ্টপুরাধিপ মহেন্দ্র, কোট্টারপতি স্বামিদত্ত, এরগুপল্লির দমন, কাঞ্চীর বিষ্ণুগোপ, অবিমুক্তের নীলরাজ, বেঙ্গির হস্তিবৰ্ম্ম, পলক্কের উগ্ৰসেন, দেবরাষ্ট্রপতি কুবের, কুস্থলপুরাধিপ ধনঞ্জয় প্রভৃতি দক্ষিণাপথের নরপতিগণকে পরাজয় ও পরে মুক্তিদান করিয়া তিনি ভারতের সাৰ্ব্বভৌম অধীশ্বর হইয়াছিল। দৈবপুত্র, শাহী, শাহামুশাহী, শক, মুরুগু, এবং সিংহল ও অপর দ্বীপবাসিগণও র্তাহার অধীনতা স্বীকার করিয়াছিল। পশ্চিমে আফগানস্তান হইতে পূৰ্ব্বে কামরূপ চট্টগ্রাম, উত্তরে নেপাল হইতে দক্ষিণে সিংহল পর্য্যস্ত তাহার