পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৬০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্ণলিপি [ ৬০২ } বর্ণলিপি মমুরীয় ( Assyria), বাবিলোন প্রভৃতি স্থানের লিপির সহিত ধরোষ্ঠী লিপির সাদৃপ্ত রক্ষিত হইয়াছে। ভোজক ব্রাহ্মণ দেখ। ] এখন আমরা বুঝাইয়া দিতে পারি যে অরমীয় শ্রেণীর মণিকলিপি হইতে খরোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটে নাই। বহুলিপিবিদ আইজাক্ টেলর তাহার “বর্ণমালা” পুস্তকে লিথিয়াছেন যে নেবুকাদনেজার ও নেরিগ্নিসারের (৫৬ খৃঃ পূৰ্ব্বাঙ্গে ) ইষ্টকের উপরই অরমীয় লিপির স্পষ্ট নিদর্শন পাওয়া যায় ৪ কিন্তু তাহাব ও পূৰ্ব্বেকার বাবিলোনীয় লিপি হইতে খরোষ্ঠীর নিদর্শন বাহির হইয়াছে এবং তাহারও বহুপূৰ্ব্বে যে এখানে জরথুস্থবংশ আধিপত্য করিতেন, সে কথা পূর্বেই বলিয়াছি। কেবল বাবিলোন বলিয়া নহে, অন্তস্থানেও খৃঃ পূৰ্ব্ব ৭ম শতাব্দীর পূৰ্ব্বে | অরমীয় লিপির পুষ্টিসাধন হয় নাই ! প্রায় খৃঃপূৰ্ব্ব ৭ম শতাকে ফনিকদিগের রাজশক্তি ও বাণিজ্যপ্রভাবের অবসান ঘটলে ফিনিসিয়ার আদিৰণমালা হইতেই । উত্তর সিরীয়ায় অরমীয়লিপি গঠন লাভ করিয়াছিল। আদি । ফনিকলিপিও দুই প্রকার দৃষ্ট হয়। তন্মধ্যে যে সৰ্বপ্রাচীন লিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহ খৃষ্টপূর্ব ১০ম শতাব্দীর শেষে । অথবা ১১শ শতাব্দীর প্রথমে উৎকীর্ণ হইয়াছিল : প্রাচীন | নিনেভে নগরীতে কীলরূপী শিল্পলিপির সহিত প্রাচীন ফনিক- | লিপি উৎকীর্ণ দেখা যায় । যাহা হউক,বেরোসাসের মত ধরিলেও আমরা দেখিতেছি যে, খৃষ্ট জন্মের দুই সহস্র বর্ষেরও পূৰ্ব্বে জরথুরে বংশধরগণ অস্বীকার রাজত্ব করিতেছিলেন, সেই ‘স্বপ্রাচীনকালে ফনিকলিপির সন্ধানই পাওয়া যায় নাই। : মিসরপতি আহমেশের চিত্রলিপিতে প্রায় ১৪৬২ খৃষ্ট পূৰ্ব্বাদে । আমরা "ফেনেখ” নামে ফিনিকদিগের উল্লেখ পাই। ঐ সময়ের । পূর্বেই যে এখানে ফনিক সংশ্ৰব ঘটয়াছিল, তাহাতে বিশেষ । সন্দেহ করিবার কারণ দেখি না । তখনও তাহাদের দ্বার বিপৰ্য্যয় বা দক্ষিণ হইতে বামমুখী লিপিব কৃষ্ট হয় নাই। এই | সময়ের পত্রপটে অঙ্কিত (t'apyrus) sitzzfafitz (Hieratic) | যে অক্ষরের আভাস পাই, তাহাব কএকটা বর্ণ দাক্ষিণাত্যের স্বপ্রাচীন বট্রেলেও, অক্ষরের মধ্যে পাওয়া গিয়াছে, সে কথা পূৰ্বেই লিখিয়াছি। ভারতীয় পশিকগণ খৃষ্ট জন্মের বহুসহস্ৰ বৰ্ষ পূৰ্ব্বে যে মিসর প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্য করিতে আসিত,সলোমনের ইতিহাস হইতেই তাহার আভাস পাওয়া গিয়াছে। পণিকদিগের কেহ কেহ মিসরে আসিয়া দ্রাবিড়ীর সভ্যতাৰ রেখা পাত করেন । , Taylor's Alphabets, Vol. I. p. 247. t Taylor's Alphabets. Vol. I, p. 198, # Taylor's Alphabets, Vol, 1. p. 216 to. ESజాజ এবং তাঁহাদের সঙ্গেই দাক্ষিণাত্যের অতি প্রাচীন বট্রেলেত্ত, সঙ্কেতলিপির স্থান অধিকার করে। তৎপূৰ্ব্বে মিসরে কেবল চিত্রলিপিরই প্রচলন ছিল । দ্রাবিড়ীয় পণিকদিগের সহিত সঙ্কেতলিপি ইঞ্জিষ্টে প্রবেশ করিলে তাহাতেই পত্রপট (Papyrus) অঙ্কিত করিবার প্রথা চলিল । র্যাহারা বলেন যে, পাশ্চাত্য দেশ হইতে ফনিকগণ গিয়া দ্রাবিড়ে সেমিটক সভ্যতার বীজ প্রবর্তন করেন, তাহদের মতের সহিত আমাদের মিল নাই । তাহ। হইলে মিসরে যেমন চিত্রাক্ষর প্রচলিত, দক্ষিণাত্যেও সেইরূপ চিত্রাক্ষরের কোন প্রকার সন্ধান পাইতাম। তাহ যখন নাই, অথচ দাক্ষিণাত্যের বট্রেলেত্তর অ, ই, প্রভৃতি কোন কোন বর্ণের সহিত মিসরের সঙ্কেতলিপির মিল পাইতেছি, অথচ সেই সময়ে চিত্রাক্ষরের অসদ্ভাব ছিল না, তখন ষে ভারত্তবাসী গ্রহণ না করিয়া তাহদের নিকট হইতেই বরং মিসরবাসী সুবিধাজনক সঙ্কেতলিপি গ্রহণ করিয়া থাকিবে, তাহ কিছু আশ্চৰ্য্যজনক নহে। এই সঙ্কেতলিপিরই ভিন্নরূপ নিদর্শন সুপ্রাচীন বাবিলোন ও অমুরীয় কীললিপিতে রহিয়াছে। কেবল মিসর বলিয়া নহে, বাণিজ্য ব্যপদেশে ফনিকগণ জরথুস্ত্রগণের অধিকারভুক্ত রাজ্যে আসিয়া বিপৰ্য্যস্তলিপির ব্যবহার শিক্ষা করিয়া যুরোপে গিয়া প্রচার করিয়া থাকিবে, এই কারণ সেই স্বপ্রাচীন গ্রীক ঐতিহাসিকগণের নিকট ফনিক্রাই লিপিমালার প্রবর্তৃক বলিয়া পরিচিত। বাস্তবিক তাছাদের অভু্যদয়ের বহুপূৰ্ব্বে বিপৰ্য্যস্ত বা খরোষ্ট্রলিপির উৎপত্তি। এখন আমরা বুঝিতেছি যে, ব্রাহ্মীলিপি যেমন ভারত, ব্রহ্ম, সিংহল, ও ভারতমহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে প্রচলিত, প্রাচীন লিপিসমূহের জননী খরোষ্ঠীও সেইরূপ সকল বিপৰ্য্যস্ত লিপির জননী । ফশিকগণ এই লিপি লইয়া গিয়া যুরোপে প্রথম প্রচার করিয়া ছিল বলিয়াই গ্রীকদিগের নিকট ফমিকেরাই বর্ণলিপির উদ্ভাবয়িত বলিয়া খ্যাতিলাভ করিয়াছে । যেমন মোআবি ও সিদোমে ফনিকদিগের প্রচারিত লিপির কালবশে পবপরের রূপে অনেকটা পার্থক্য ঘটয়াছিল, সেইরূপ অশোকের ব্যবহৃত খরোষ্ঠীর সহিত উক্ত লিপিসমূহের পার্থক্য দৃষ্ট হইয়া থাকে। যেমন স্থান ও কালবশে সেবীয় ও যেfক্তানের সেমিটিক লিপি ; মোআব, সিদোন ও অরমার লিপি হইতে বহুলাংশে পৃথক্ হইয়া পড়িয়াছে, সেইরূপ অশোকের ব্যবহৃত থরোষ্ঠীর সহিত অপর স্থানের বিপৰ্য্যস্ত লিপিরও পার্থক্য ঘটিয়াছে। টেলর, বুহ লর প্রভৃতি লিপিতত্ত্ববিদগণ এসিয়া মাইনর বা আরবের প্রাচীন লিপির ফশিক্ষরাজ সমতিৰাল হইতে সমিতিক বা সেমিটিক নামের উৎপত্তি । সুতরাং ফণিক ও সমিতিক একই ।