পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৬৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলীক [ ماريون ] বঙ্গীক উল্লিপিত বঙ্গীক সকল যেমন উন্নত, উহার নিৰ্ম্মাণ-পরিপাটীও তদমুরূপ । উহার অভ্যস্তর ভেদ করিয়া দেখিলে, সামরিক পুত্তিকাদিগের নিপুণতা ও বিচক্ষণতার স্বম্পষ্ট প্রমাণ প্রত্যক্ষ করিয়া চমৎকৃত হইতে হয় । তাহাদের সুন্দররপ আহার বিহার সম্পাদনাৰ্থে বাসগৃহের বেরূপ শৃঙ্খলা আৰপ্তক, তাহারা তাহ সুচারুরূপে সম্পন্ন করিয়া থাকে। রাজ-প্রাসাদ, ভাণ্ডার-গৃহ, শিশু-শালা, পথ, সেতু, সোপান প্রভৃতি অতি পরিপাটী রূপে প্রস্তুত করে। প্রকোষ্ঠ সকল খিলান করা। এক প্রকোষ্ঠ হইতে অন্ত প্রকোষ্ঠে গমন করিবার নিমিত্ত সুগম পথ প্রস্তুত থাকে। এক প্রদেশ হইতে অন্ত প্রদেশে গমন করিতে হইলে, যে যে স্থলে কুটিল পথ দিয়া অনেক ঘুরিয়া গমন করিতে হয়, তাহার সেই সেই স্থলে এক এক খিলান করা সেতু নিৰ্ম্মাণ করিয়া গতায়াতের সুবিধা করিয়া রাখে। এই রূপে তাহারা আপনাদের বাসবাট সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর করিয়া তাহার মধ্যে মুখে অবস্থিতি করে। উহা এমন সুদৃঢ় ও কঠিন যে, ৪৫ জন মনুষ্য, উহার উপর দণ্ডায়মান হইলেও, ভাঙ্গিয়া পড়ে না । সামরিক পুত্তিকাদিগের কার্য্য-প্রণালীও অতি সুন্দর। ঐ প্রণালী এমত পরিপাটী যে, উহাকে এক উৎকৃষ্ট রাজ্যের ব্যবস্থা প্রণালী বলিলেও বলা যায় । ইহারা তিন শ্রেণীতে নিবিষ্ট, শ্রমজীবী পুত্তিক, সৈনিক পুত্তিকা ও বিশিষ্ট পুত্তিক । শ্ৰমী পুত্তিকার গৃহ, পথ, সেতু প্রভৃতি প্রস্তুত করে। সৈনিক পুঞ্জিকার গৃহের রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং প্রয়োজনানুসারে শক্ৰব সহিত যুদ্ধ করিয়া থাকে। তাহদের শীর শ্রমজীবী পুত্তিকা দিগের শরীর অপেক্ষায় প্রায় ১৫ গুণ বড়। আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, শ্রমী পুত্তিকার কখনও সৈনিক পুত্তিকার কয়ে প্রবৃত্ত হয় না এবং সৈনিক পুত্তিকারাও কখন শ্রমী পুত্তিকার কাৰ্য্যে নিযুক্ত হয় না । বিশিষ্ট পুত্তিকার না গৃহাদি নিৰ্ম্মাণ করে, না যুদ্ধ করিতেই প্রবৃত্ত হয়, তাহারা আপনার রক্ষণাবেক্ষণ করিতেও সমর্থ নয়। কিন্তু তাহদের কলেবর সর্বাপেক্ষা পরিণত ও উৎকৃষ্ট এবং অঙ্গে পালক উঠিয়া থাকে। তাহদের দেহ, সৈনিক পুত্ত্বিকাদিগের ২ দ্বিগুণ ও শ্রমজীবী পুস্তিকাদিগের শরীরের ৩০ ণে গুণ। অন্ত জন্য পুত্তিকার তাহাদিগকে সৰ্ব্বপ্রধান লির মান্ত করে ও প্রধান পদে অধিরূঢ় করিয়া রাখে । তাহার ঐ পদে অভিষিক্ত হইবার পর কয়েক সপ্তাহ মধ্যেই উড্ডায়মান হইয়। অন্যত্র গমন করে। কিন্তু উড়িবার কিঞ্চিৎকাল পরেই, পালক সকল ঝরিয়া পড়ে, তখন পক্ষী পতঙ্গাদি আসিয়া, তাহাদিগকে আহার করে। আফ্রিকানিবাসীরা তাহাদিগকে ভাজিয়া ভক্ষণ করে। এইরূপে প্রায় সমুদায় বিশিষ্ট পুৰিকা, নষ্ট হইয়া যায়। যদি ২৪ জুই চারিট কোন ক্রমে রক্ষা পায়, পূৰ্ব্বোক্ত শ্রমী পুত্তিকার, দেখিতে পাইলে, তাহাদিগকে গ্রহণ করিয়া রাজার ও রাষ্ট্রীর পদে বরণ করে এবং এক মৃত্তিকাময় প্রকোষ্ঠ মধ্যে স্থাপন করিয়া, যত্নপূর্বক পরিপালন করে। পরে যখন রাষ্ট্রীর সস্তান উৎপত্তির উপক্রম হয়, তখন এক কাষ্ঠময় প্রকোষ্ঠ প্রস্তুত করিতে প্রবৃত্ত হয়। রাজ্ঞী, যে সমস্ত অও প্রসব করে, তাহা সত্বর গ্রহণ করিয়া, সেই প্রকোষ্টে স্থাপন করে। ভারতে সাধারণতঃ সন্ধ্যার প্রাক্কালে সপক্ষ পুত্তিকা উড়িতে দেখা যায়। উহাদিগকে বাদল পোকা বলে। যখন তাহার দলে দলে মেঘাকারে ভূগর্ভস্থ নিবাস হইতে আকাশ মার্গে উঠিতে থাকে, তখন কাক, বাদুড় প্রভৃতি নানা জাতীয় পক্ষী তাহাদিগকে খাইতে আরম্ভ করে। ডানা ভাঙ্গিয়া যাহা মাটিতে পড়িয়া যায়, তাহ পর দিন প্রাতে কাকের উদরস্থ হয়, কোথাও কোথায় নিকৃষ্ট শ্রেণীর লোকে উহা সঞ্চয় করিয়া স্কুতে ভাজিয়া থায় । উল্লিখিত পুত্তিকা-মহিষী, গর্ভাবস্থায় যাদৃশ অবস্থান্তর ও রূপান্তর প্রাপ্ত হয়, তাহ শুনিলে, বিস্ময়াপন্ন হইতে হয়। উহার বস্তি-দেশ ক্রমশঃ ক্ষীত হইয়া অবশিষ্ট সমুদায় অঙ্গ অপেক্ষ ১৫০ • দেড় সহস্র অথবা ২০ •• দুই সহস্র গুণ স্থল হইয়া উঠে । উহার শরীর স্বীয় স্বামীর শরীর অপেক্ষায় ১০০০ এক সহস্র গুণ ভারী হয় এবং শ্রমী পুত্তিকাদিগের শরীর অপেক্ষ ২০৩০ সহস্র গুণ বিস্তৃত হইয় পড়ে। এক জন পণ্ডিত, গণনা করিয়া দেখিয়াছিলেন, এক পুত্তিকামহিষী এই অবস্থায় ৬০ ষাট দণ্ডে, আশী হাজার অও প্রসব করিয়াছিল। প্রসবকালে কতকগুলি শ্রমী পুতিক তাহার নিকট নিযুক্ত থাকে ; তাহারা ঐ সকল অণ্ড গ্রহণ করিয়া পূৰ্ব্বোক্ত কাঠময় প্রকোষ্ঠ মধ্যে স্থাপন করে। ঐ সমস্ত ডিম্ব ফুটিয়া, যে সকল পুত্ত্বিকা-শাবক উৎপন্ন হয়, শ্রমী পুত্তিকার তাহাদিগকে সম্যক প্রকারে লালন পালন করে। তাহাদের রক্ষণাবেক্ষণার্থে যখন যে বিষয় আবগুক, তখন তাহ অবাধে সম্পাদন করিয়া থাকে। শাবকগণ এইরূপে লালিত ও পালিত হইয়া শক্তিসম্পন্ন ও শ্রমক্ষম হইলে, বল্মীক-রূপ সুরম্য রাজ্যের কার্ষ্য করিতে নিযুক্ত হয়। পণ্ডিতেরা প্রত্যক্ষ দেখিয়াছেন, যদি কোন প্রকারে বঙ্গীকের কোন স্থান ভগ্ন করিয়া দেওয়া যায়, তাহা চইলে, তৎক্ষণাৎ ১ একটা সৈনিক পুত্তিক, সেই ভগ্ন স্থানে আসিয়া উপস্থিত হয়। অনতিবিলম্বে আর ২৩ জুই তিনটী আগমন করে। তদনন্তর ভূৱি ভূরি পুত্তিক বাহির হইতে ধাকে। এইরূপ যতক্ষণ রত্নীকের উপর আঘাত করা যায়, ততক্ষণ