পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* পর্তুগীজ [ R ] পর্তুগীজ এদিকে ভ্রাতার বিলম্ব দেখিয়া, ২৫ এ জামুয়ারী (১৫০৪ খৃঃ) আফন্সেী-দা-আলবুকার্ক স্বদেশ যাত্রা করেন। তথায় তিনি পর্তুগালরাজের নিকট যথেষ্ট পারিতোষিক ও উচ্চসম্মান লাভ করেন । কিন্তু ফ্রান্সিস্কো-দা-আলবুকার্ক ভারত-উপকুল লুটিয়া যথেষ্ট অর্থসঞ্চয় করিলেও, দুর্ভাগাক্রমে তিনি আর দেশে ফিরিতে পারিলেন না । ৫ই ফেব্রুয়ারী তিনি আপনার তিনখানি জাহাজে মাল-বোঝাই লইয়া স্বদেশাভিমুখে যাত্র করেন ; কিন্তু পথিমধ্যে সদলে সমুদ্রগর্ডশায়ী হন। আলংকার্কের প্রস্থানের পরেই সামরীরাজ মলবারের অপরাপর রাজা ও সামন্তগণের সহিত একত্র হইয়া কোচিন হইতে পর্তুগীজদিগকে বিদূরিত করিবার আয়োজন করিলেন। প্রায় ৫০০০ • পদাতি, ২৮• খানি রণতরী ও ৪• • • নেীযোদ্ধা কোচিনাভিমুখে প্রেরিত হইল । কোচিনরাজ এ সংবাদে ৰিচলিত হইলেন। পর্তুগীজ অধ্যক্ষ কোচিনরাজকে রাজধানী রক্ষার ভার দিয়া শত্রর গতিরোধ করিতে অগ্রসর হইলেন । কোচিন রাজ্যে প্রবেশের যে সকল পথ ঘাট ছিল, পাচেকো সেই সকল স্থানে পাহারা রাখিয়া দিলেন । সামরারাজের দলবল নানা দিক্ হইতে কোচিনরাজ্য আক্রমণ করিল। কিন্তু সৌভাগ্যশালী কোচিনরাজের ও পর্তুগীজদিগের চেষ্টায় শক্রর বিশেষ কিছু করিতে পারিল না । কম্বলম্ নামক স্থানে পর্ব গ্রীজেরা নিতান্ত বিপদগ্ৰস্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এখানে শুক্রর আক্রমণে অনেক পর্তুগীজ-রণতরী বিধ্বস্ত ও ছিদ্রযুক্ত হইয়াছিল। পাচেকে। পরে অলক্ষিতভাবে আসিয়া বহু আয়াসের পর পর্তুগীজদিগকে রক্ষা করেন । ইহার পর পাচেকো সংবাদ পাইলেন যে, কোচিনবাসী সকল পর্তু - গীজই শত্রুকরে জীবন বিসর্জন করিয়াছে এবং কল্পনুর ও কোলম্বে পর্তুগীজের মহাবিপদে পড়িয়াছে। অবিলম্বে পাচেকো কোলম্বে আসিয়া দেখিলেন যে একজন মাত্র পর্তুগীজ প্রাণ হারাইয়াছে। পৰ্ব্ব গীজ জাহাজ সমস্তই খালি । কিন্তু আরবী পোতগুলিতে গরম মসলা বোঝাই রহিয়াছে। পাচেকে। সেই সমস্ত পোতগুলি দখল করিয়া তাহার সমস্ত মাল পর্তুগীজ জাহাজে উঠাইয়া লইলেন এবং এখানে পর্তু - গীজদিগের রক্ষার স্ববন্দোবস্ত করিয়া উপকূলে নানাস্থানে বিদেশীয় পোত লুট করিতে চলিলেন। ঠিক এই সময়ে পর্তুগালরাজ লেপো-সোয়ারেজ-দি-আলগবারিয়া নামে অার এক পোতাধ্যক্ষকে পাঠাইলেন, তাহার অধীনে ১৩ খানি সৰ্ব্ববৃহৎ জাহাজ ও ১২০ • নেীযোদ্ধা ছিল। অঞ্জস্বীপের নিকট তাহার সহিত সালদানূহ ও রাইলোরেন্সোর দেখা হইল এবং তাহদের নিকট তিনি পাচেকেণর XI পরাক্রম ও সামীরাজের পরাজয়ের কথা শুনিলেন. তিনি সালদানূহ ও লোরেন্সোকে সঙ্গে লইলেন এবং তিনজনে একত্র হইয়। কালিকট বন্দর আক্রমণ করিলেন। তখন সামরীরাজ রাজধানীতে উপস্থিত ছিলেন না, রাজপুরুষগণও শত্রর আক্রমণ হইতে নগররক্ষার বন্দোবস্ত করিতে পারিল না। পর্তুগীজ জাহাজ হইতে দুইদিন অনবরত গোল-বৃষ্টি হইতে লাগিল, তাহাতে নগরের অনেক সুবৃহৎ অট্টালিকা ধূলিসাৎ অধিকাংশ বিধ্বস্ত ও প্রায় ৩০০ ব্যক্তি মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিল। এখান হইতে পর্তুগীজ পোতাধ্যক্ষগণ ১৪ই সেপ্টেম্বর ( ১৫০৪ খৃঃ অব্দে ) কোচিনে গমন করেন । তথায় আসিয়। কোচিনরাজের নিকট শুনিলেন, সামরীরাজের নবীয় দরিম্ নামে এক প্রধান সেনানায়ক তাহার বিশেষ অনিষ্ট করিয়াছেন, এখন তিনি কোরঙ্গনুরে থাকিয় কোচিন আক্রমণের জন্ত বলসঞ্চয় করিতেছেন । সোয়ারেজ কোরঙ্গমুরে গিয়া নবীয়। দরিমকে আক্রমণ করিলেন । এই যুদ্ধে উভয় পক্ষেরই ক্ষতি হইল । শেষে দরিম্ রণে ভঙ্গ দিলেন। তখন পর্তুগীজের নগর লুণ্ঠন, য়িহুদী ও মুসলমানদিগের মসজিদ ধ্বংস এবং হিন্দু-দেবালয় ভঙ্গ করিয়া আপনাদের পৈশাচিকবৃত্তি চরিতার্থ করিল। তাহাঁদের শাণিতকৃপাণে কতশত নিঃসহায় প্রাণ হারাইল । মুসলমানবণিকদিগের প্রবল প্রতাপ পর্তুগীজদিগের হস্তে ক্রমেই থৰ্ব্ব হইয়া পড়িল । যে যে বন্দরে মুসলমানের বাণিজ্য দ্বারা প্রভূত অর্থ ও প্রভাব উপার্জন করিয়াছিল, ভারত মহাসাগর ও আরবসমুদ্রের তীরবর্তী প্রায় সেই সমস্ত বন্দরে পর্তুগীজের স্ব স্ব প্রতাপ বিস্তার করিল। ভীষণ অত্যাচার, পাশবিক উৎপীড়ন, ঘোরতর কণমান গর্জন ও কূটনীতিবলে পর্তুগীজের ভারত মহাসাগরে একপ্রকার একাধিপত্য করিতে লাগিলে । সমুদ্রবাণিজ্যে ক্রমে তাহার। প্রাধান্তলাভ করিলেন । এখন পর্তুগালরাজ সকলদিকে দৃষ্ট ও পর্তুগীজদিগের স্বার্থরক্ষার জন্ত ভারতে একজন শাসনকর্তা ( Governor ) পাঠাইলেন। প্রথমে ত্রিস্তাও-দা-কানুহ এই উচ্চপদ লাভ করিয়াছিলেন ; কিন্তু তিনি অসুস্থ হইয়া পড়ায় ডম ফ্রান্সিস্কোদা-অলমিদা প্রথম গবর্ণর হইলেন । পর্তুগীজদিগের প্রথম শাসন। ১৫০৫ খৃষ্টাব্দে আগষ্ট মাসের শেষভাগে অলমিদ ( Almeida ) প্রথম অঞ্জস্বীপে পদার্পণ করেন। এখানে দুর্গ নিৰ্ম্মিত হইল। একজন পর্তুগীজ-সেনানায়ক ও ৮০ জন যোদ্ধ। দুৰ্গরক্ষায় নিযুক্ত রহিল। তথা হইতে অলমিদা হানোবর ( onor ) অভিমুখে আসিলেন। তিনি এখানকার সহর ও