পাতা:বিশ্বকোষ একাদশ খণ্ড.djvu/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পর্তুগীজ [ రిట ] তাহাতে পর্তুগীজের সকলেই উত্তেজিত হইল। নেকোটি অপরাপর পর্তুগীজসেনানায়কগণের সহযোগে একদিন হঠাৎ বনদলাকে তাড়াইয় গুৰুগৃহ দখল করিয়া লইল । পরে দিঘীনের বৌদ্ধ মন্দির লুটিয় তাহার বিস্তর অর্থ পাইল ও তস্থায় আপনাদের দলপুষ্টি করিল। আরাকানরাজ প্রথম কার্যোর জন্ত নিকোটির উপর বিরক্ত হইয়াছিলেন, কিন্তু নিকোটি রাজাকে অনেক ভাৰী আশার প্রলুদ্ধ করিয়া বরং রাজার আরও প্রিয় হইয়া উঠিলেন, আরাকানরাজ নিকোটির ইচ্ছামত উক্ত গুৰুগৃহ ত্বৰ্গ দ্বার স্বরক্ষিত রাখিতে আদেশ করেন । এখানে ছৰ্গ নিৰ্ম্মাণ আরম্ভ হইলে, নিকোটি পর্তুগীজ-রাজপ্রতিনিধির অনুগ্রহলাভাশায় সালভাডোরের উপর দুর্গরক্ষার ভার দিয়া, গোয়ায় রাজপ্রতিনিধিকে ঐ দুর্গ প্রদান করিতে আসিলেন । পথে নিকোটি কএকজন রাজার সহিত দেখা করেন এবং আশা দেন যদি তাহারা পর্তুগীজ রাজপ্রতিনিধির সহিত যোগদান করেন, তাহা হইলে তাহারা অনায়াসেই বঙ্গ অথবা পেগু অধিকার করিতে পরিবেন। তাছার মুখে এইরূপ মনোমুগ্ধকর বাক্য শুনিয়া অনেক রাজাই তাহার সহিত গৈায়ার দূত পঠাইয়াছিলেন । নিকোটিরন আরাকান-পরিত্যাগের পরই আরাকানরাজ পর্তুগীজদিগের দুরভিসন্ধি বুঝিতে পারিলেন। অবিলম্বে তিনি পর্ত গীজদিগকে তাহার রাজ্য হইতে দূর করিয়া দিবার আদেশ প্রচার করিলেন ও পর্তুগীজ সৈন্তদিগকে দমন করিবার জন্ত বনদলার অধীনে ৬০ • • সৈন্ত পাঠাইলেন । প্রোমের রাজাও সৈন্ত পাঠাইয়া আরাকানরাজের সাহায্য করিলেন। কিন্তু সালভাডোর সসৈন্তে দুর্গমধ্য হইতে বেরূপ ক্ষিপ্ৰ গোলাবর্ষণ করিয়াছিল, তাহাতে কেহই তাহার সম্মুখীন হইতে সাহসী ছয় নাই। পর্তুগীজের রাত্রিকালে অতর্কিতভাবে আক্রমণ করিয়া আরাকানী সৈন্তদিগকে পরাস্ত করিল। এই সময় হইতে সেই দুৰ্দ্ধৰ্ষ ও পিশাচরূপ পর্তুগীজের আরাকানবাদীর উপর দারুণ অত্যাচার আরম্ভ করে । ক্রমে জলপথে যাত্র। ভারও অনর্থকর ও বিপজ্জনক হইয়া উঠিল । বনদলা পুনঃ পুনঃ আক্রমণ করিয়াও পর্তুগীজদিগের কিছুই করিতে পারিলেন না। শত শত আরাকানী পোত পর্তুগীজলিগের হন্তে বিধ্বস্ত হইল । ১৬০২ খৃষ্টাব্দে সালভাডোর রিবেরে সসৈন্তে কামলঙ্ক আক্রমণ করে, তাছাতে জলে ও স্বলপথে কামলঙ্কার যথেষ্ট ক্ষতি ছইল। কামলঙ্কারাজ মহাসিংহ ঐ যুদ্ধে নিহত হইলেন। কামলম্বারাজ পরাজিত হইলে পেশুর জৰিবালিগঞ্জ পর্তুগীজ । দিগকে মৰাভর ভক্তি করিতে লাগিল। " এই সময় তথাকার প্রায় ২••• লোক রিবেক্টোর অধীনে কৰ্ম্ম স্বীকার করিয়াছিল। এখন রিবেরে কামলঙ্কার সিংহাসনে অভিষিক্ত হইলেন। রডরিগো-জালারেল-ডি-সেকুইয়া এখন সিরিামের ফুর্গাধিপতি হইলেন । এ দিকে নিকোটি গোরায় গিয়া পৰ্তুগীজরাজপ্রতিনিধির প্রতিভাজন হইলেন। এমন কি পর্তুগীজপ্রতিনিধি যব

  • দ্বীপীয় রমণীর গর্ভজাত তাহার এক ভ্রাতু-পুত্রীর সহিত নিকো

টির বিবাহ দিলেন ও তাঁহাকে "সিরিয়ামের দুর্গাধ্যক্ষ ও পেগুজয়ের প্রধান সেনাপতি’ এই উপাধি প্রদান করিলেন । নিকোটি সিরিয়ামে ফিরিয়া আসিয়া, এখানে দুর্গ-সংস্কার, গির্জা-স্থাপন ও আরাকানরাজকে বহু উপহার প্রেরণ করিলেন। তৎপরে এই আদেশ প্রচার করিলেন যে, এ দিকে ষে কোন বাণিজ্য জাহাজ আসিবে, তাহাকে এই শুদ্ধগুহ হইয়া যাইতে হইবে। ইহাতে পর্তুগীজদিগের যথেষ্ট অর্থাগম হইতে লাগিল। এখন আরাকানরাজ ঐ শুত্বপূহ দখলের চেষ্টা করিতে লাগিলেন। তাহার অভিপ্রায় অবগত হইয়া পর্তুগীজের আরাকানী পোত সকল লুট করিতে লাগিল । পেগুরাজপুত্রগণ আরাকানী সৈন্তের সহিত মিলিত হইয়া পর্তুগীজদিগের সহিত ঘোরতর যুদ্ধ করিয়াছিলেন, কিন্তু পর্তুগীজদিগের কুটযুদ্ধে তাহার বারম্বার পরাজিত হইয়াছিলেন। আরাকান ও প্রোমরাজ পরাজিত হইলে ব্রহ্মের আর কোন রাজা পৰ্ত্ত - গীজদিগের বিরুদ্ধে অগ্রসর হইতে সাহসী হইলেন না । এখন পর্তুগীজের নিশ্চিত্ত হইয় প্রভূত অর্থসঞ্চয় করিতে লাগিল । সালভাডোর রিবেরে নিকোটির হস্তে শাসনভার অর্পণ করিয়া স্বদেশ যাত্রা করিলেন । এই সময় হইতে আরাকান ও পেণ্ডর মধ্যস্থিত সমুদ্রোপকূলবর্তী স্থান ও বঙ্গোপসাগরস্থিত অনেক ক্ষুদ্র দ্বীপ ‘ফিরাঙ্গির মুলুক’ বা ‘ফিরিঙ্গির দেশ’ বলিয়া গণ্য হইয়াছিল । ১৬০৫ খৃষ্টাব্দে মাটিম্ অফিন্সো-ডি-কাষ্ট্রে রাজপ্রতিনিধি হইয়া আসিলেন । এই সময়ে ওলমাজের ক্রমেই প্রবল হইয়া উঠিতেছিল । তাহারা পর্তুগীজদিগের হস্ত হইতে ভারত মহাসাগরীয় অনেক দ্বীপের বাণিজ্যাধিকার কাড়িয়া লইল । এই কারণে ওলন্দাজগণের সহিত যুদ্ধ বাধে। আফন্সোর মৃত্যু হওয়ায়, তাহার স্থানে গোয়ার জার্কবিশপ ডম্ব আলেক্সো-ডি-মেনেজিস্ ১৬৯৭ খৃষ্টাম্বে পর্তুগীজ ভারতের শাসনকর্তী হইলেন । ১৬০৯ খৃষ্টাব্দে তাহার স্থানে ডম্‌ জোয়াও পেরির ফ্রোঙ্গাস (coade de Feyra ) পর্তুগাল হইতে রাজপ্রতিনিধি হইয়া মাসিলেন ।