পাতা:বিশ্বকোষ চতুর্দশ খণ্ড.djvu/৪৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহিমুর সম্পন্ন হয়। ভারত-রাজ প্রতিনিধিরূপে মাত্মাজের শাসনকর্তা তৎকালে উপস্থিত ছিলেন। মহিমুরের চিফ কমিশনর দেওয়ানের হস্তে কাৰ্য্য ভার বুঝাইয়া দিলেন। ঐ সময়ে চিফ কমিসনর ও সাধারণ সচিবের কার্য্যলোপ ব্যতীত শাসনবিষয়ে আরও কয়েকটা পরিবর্তন ঘটিয়াছিল । উক্ত বর্ষে মহারাজের উপর রাজ্যশাসনভার অর্পিত হইলেও রাজকাৰ্য্য বিধির কোনও পরিবর্তন ঘটে নাই । মহারাজ ব্যবস্থাপক সভা লইয়া সকল কাৰ্য্যের পরামর্শ গ্রহণ করিতেন। কোন নুতন বিধি প্রবর্তন করিতে হইলে তাহাকে ভারতগবমেন্টের অভিমত লইতে হইত। তিনি রাজস্বের অপব্যয় করিতে পারিতেন না। মহারাজের নিজস্ব সম্পত্তি রাজস্ব হইতে পৃথক্ থাকিত। এখানে ও শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগ স্বতন্ত্র। একজন যুরোপীয় ও দুষ্ট [ 8-૭ ] জন দেশীয় বিচারক হাইকোর্টের প্রণালী অনুসারে বিচার- ; কার্য্য করিয়া থাকেন। মহিমুর ও সিমোগা নগরে একজন সিবিল ও সেসন জজ অধিষ্ঠিত আছেন। বঙ্গলুরের বিচারকাৰ্য্য চিফ কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেই করিতে হয়। প্রত্যেক জেলার শাসনকাৰ্য্য কএকজন ডেপুটী কমিসনরের হস্তে ন্যস্ত আছে। এতদ্ভিন্ন একজন জুডিসিয়াল এসিষ্টাণ্ট, মুনসেফ ও আমিলদার স্থানীয় দেওয়ানী ও ফৌজদারী বিচারকাৰ্য্য পরিচালনা করিতেছেন। প্রত্যেক জেলার মাজিষ্টারের অধীনে পুলিশ নিযুক্ত আছে। প্রত্যেক থান৷ এক এক জন অধস্তন সহকারী পুলিশ কৰ্ম্মচারীর উপর ন্যস্ত । রাজ্যের অপরাপর সংস্কারের মধ্যে জেলখানা, পূর্ববিভাগ, শিক্ষাবিভাগ, রাজস্ববিভাগ, জরিপবিভাগ প্রভৃতির বিশেষ বন্দোবস্ত করা হইয়াছে। অনেক স্থলে দেশীয় লোকের পরিবর্তে যুরোপীয়কে আসন দেওয়া হইয়াছে। প্রতিবৎসর ‘দশের উৎসবের পর প্রত্যেক তালুক হইতে দুই বা তিনটা প্রতিনিধি নিৰ্বাচন করিয়া একটী সভা আহুত ছয় । বিচারবিভাগের অধ্যক্ষ ‘দেওয়ান’ মহাশয় সৰ্ব্বসমক্ষে রাজ্যের বিচার-বিবরণী পাঠ করেন এবং পরবর্তী বৎসরের রাঞ্জকায্যের হিতকল্পে িক কি সদসুষ্ঠান প্রবর্তন করিতে শাসনসমিতি বাধ্য হইয়াছেন, তাছাও তিনি সাধারণ সমক্ষে জ্ঞাপন করিতে থাকেন। অবশেষে স্থানীয় প্রতিনিধিবর্গের নিকট হইত্তে তত্তদেশবাসীর অভাব ও অভিযোগ শ্রবণ করা হইয়। থাকে। যtছ। উপস্থিত সভ্যমণ্ডলীর বিচারে নিম্পন্ন হইতে পারে, এরূপ বিষয়সমূহ সভাতেই নিম্পত্তি হইয়া যায়, জার বিচাৰ্য্য বাক্যগুলি অনুসন্ধানের জম্ভ লিপিবদ্ধ করিয়া রাখা হয় । এই প্রতিনিধি-সভায় বাছ। পঠিত ও গৃহীত হয়, প্রথমে তাহাই মহিস্থর ইংরাজীতে লিপিবদ্ধ করিয়া পরে তাহ সাধারণের জানিবার জন্ত দেশীয় ভাষায় রূপান্তরিত করা হহয়! থাকে । এখানে প্রথমে ৪টা পদাতিক সেনাদল ছিল । উহার একটকে বিদায় দিয়া, ৩টা সিল্লাদার অশ্বারোহী সেনাদল ভাঙ্গিয়া ২ট দল গঠিত করিয়া সেনাiবভাগের অনেক বায়ুসংক্ষেপ করা হইয়াছিল । এথানকার অদিম অধিবাসীর মধ্যে পাৰ্ব্বত্য কুরুবদিগের সংখ্যাই অধিক । ইহার বন মধ্যে হাসি নামক ক্ষুদ্র কুটার নিৰ্ম্মাণ করিয়া বাস করে। ইহার কৃষ্ণবর্ণ ও ক্ষুদ্রকায়, মাথায় চুল রাখে ও খোপা বাধে। রমণীগণ প্রায়ই বনের অন্তরাল হইতে বাহির হয় না । জেমু-কুরুবগণ উহাদের অন্ততম শাখা। এতদ্ভিন্ন হরলিগার, সোলিগার প্রভূতি কতকগুলি অসভ্য জাতি আছে, ইহার নির্জন প্রদেশে থাকিয় বহু পশু ধরিয়া জাবিক। নিৰ্ব্বাহ করে। মলনাদ-প্রদেশে ছোলিয়ারু মল্লালু ও হোল্লালু নামে ক একটী আদিম জাতির বাস আছে। ইহার প্রায় কৃষিকাৰ্য্য দ্বারা জীবিকা অর্জন করে। ইহারা সকলেই প্রায় ভূম্যধিকারীর অধীনে দাসত্বস্বত্রে আবদ্ধ থাকে। বোকলিগজাতি ৫০ট শাখায় বিভক্ত । ইহার ও কৃষিজীবী । এই জাতির সংখ্যা মহিমুর রাজ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক । এখানকার ব্রাহ্মণগণ পঞ্চ দ্রাবিড় ব্রাহ্মণের অন্তভুক্ত । এথানকার হিন্দু-সম্প্রদায় প্রধানতঃ তিন ধৰ্ম্মাবলম্বী— ১ স্মাৰ্ত্ত, ২ মাধব ও ৩ শ্রীবৈষ্ণব। স্মার্তগণ অদ্বৈত, মাধ্বগণ দ্বৈত এবং ঐবৈষ্ণবগণ বিশিষ্টাদ্বৈতমতপোষক। বণিকৃসম্প্রদায়ের অধিকাংশই লিঙ্গায়ৎ । ইহারা ব্ৰাক্ষশদিগকে সম্মান প্রদর্শন করে না। এতদ্ভিন্ন শ্রাবণবেলগোলে কতকগুলি পুরোহিত অাছে। তথায় গোমতেশ্বর নামক প্রকাও একটা দেবমুক্তি অস্থাপি বিদ্যমান দেখা যায়। বস্তি বা জৈনমন্দিরসমূহেও তীর্থঙ্করাদির প্রতিমূৰ্ত্তি দৃষ্টিগোচর হইয় থাকে। পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি যে, খৃষ্টপূৰ্ব্বাৰা হইতে এই রাজ্যে বৌদ্ধ ও জৈনপ্রভাব বিস্তৃত হইয়াছিল। ধ্বংসাবশিষ্ট নিদর্শনসমূহ সেই স্মৃতি জাগাইয়া রাখিয়াছে। চালুক্যংশের অধিকারকালে স্থাপত্য-শিল্পবিস্ত৷ উন্নতির চরম স্থান অধিকার করে। হোয়শাল বল্লালবংশীয় রাজগণের শাসনসময়ে ( ১ • • ০-১৩০০ খৃঃ মধ্যে ) কতকগুলি চারুশিল্পময় মন্দির নিৰ্ম্মিত হয়। তন্মধ্যে লোমনাথপুরের বিখ্যাত মন্দির রাজ বিন্যাদিত্য বল্লাল কর্তৃক, ৰেলয়ের বিষ্ণুমন্দির ১১১৪ খৃষ্টাব্দে রাজা বিষ্ণুবৰ্দ্ধন কর্তৃক এবং দ্বারসমুদ্রের কাইতেশ্বর শিবমন্দির রাজাৰিণয়নরসিংহ কর্তৃক স্থাপিত হইয়াছিল।