পাতা:বিশ্বকোষ ত্রয়োদশ খণ্ড.djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাগলপুর [ ৩১১ ] ভাগলপুর ক্ষেত্রে শোভিত্ত থাকিয়৷ উৰ্ব্বরতার পরাকাষ্ঠা দেখাইত, এখন তাহা অরণ্যে পর্য্যবসিত হইয়া ব্যাঞ্জমহিষাদির আবাসে পরিণত হইয়াছে। ভাগলপুর নগরের দক্ষিণদিকে ভূমিভাগ ক্রমে উন্নত হইয়া পৰ্ব্বতাকার ধারণ করিয়াছে। মহুয়া ও আম্রকানন ব্যতীত এখানে বহুল পরিমাণে কার্পাস বৃক্ষ জন্মিতে দেখা যায়। গঙ্গানদীই এখানকার সর্বপ্রধান । এতদ্ভিন্ন উত্তরাংশে কুশী, তিলযুগ, বর্তী, দিমড়া, তলব, পল্পবাণ, ধুমান, চলোঁনী, লোরণ, কটন, দৌস ও ঘাগ রী প্রভৃতি কএকটি শাখানদী প্রবাহিত আছে। দক্ষিণাংশে একমাত্র চন্দন নদীই উল্লেথযোগ্য। বড় বড় নদীতে বৎসরের সকল সময় নৌকাযোগে যাতায়ত করিতে পারা যায় ; কিন্তু ক্ষুদ্র নদীগুলি প্রার্টুধারায় স্ফীত না হইলে গমনোপযোগী হয় না। এখানে রেশমের চাষ আছে। খনিজ পদার্থের মধ্যে গন্ধক, তাম্র, লৌহ প্রভৃতি পাওয়া যায়। এই স্থানের প্রাচীন কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না । এখানকার চম্পানগরী মহা ভারতো ক্রু অঙ্গরাজ কর্ণের রাজধানী ছিল। স্থানীয় কর্ণগড় পৰ্ব্বত ও অনেকানেক কীৰ্ত্তি এখনও মহাবীর কর্ণের গৌরব ঘোষণা করিতেছে । হিউএন্‌সিয়াংএর বর্ণনীয় জানা যায়, বৌদ্ধপ্রাধান্ত সময়ে এথানে বহুসহস্র সত্যারাম প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, ৭ম শতাদের প্রারস্তুে সেই সমস্তই প্রায় ভগ্নাবস্থায় পতিত ছিল । তৎকালে হীনযান-মতাবলম্বী প্রায় দুইশত বৌদ্ধাচাৰ্য্য ধৰ্ম্মালোচনায় ব্যাপৃত ছিলেন। এতদ্ভিন্ন এখানে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক বিংশত্ত্যধিক দেবমন্দির নিৰ্ম্মিত ছিল । তন্মধ্যে পাথরঘাটা পৰ্ব্বত শিখরের মন্দিরগুলিই উল্লেথযোগf । শিলালিপিপাঠে জানা যায় যে, মগধের গুপ্তবংশীয় মহারাজাধিরাজ পরম ভট্টারক আদিত্যসেন দেব ও পালৰংশীয় রাজা নারায়ণপাল দেব + এখানে আধিপত্য বিস্তার করিয়াছিলেন । মুসলমান অধিকারে ইহা বেস্থার প্রদেশের অন্তভুক্ত থাকে এবং চম্প। প্রভৃতি স্থান সামান্ত পরগণারূপে পরিগণিত হয়। ১৭৬৫ খৃষ্টাম্বে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি বাঙ্গালার দেওয়ানী গ্রহণ করায় এই জেলা মুঙ্গের সরকারের পুৰ্ব্বসীমারূপে গণ্য হইয়া মুসলমান নবাবের অধীন ছিল। তৎকালে গঙ্গার দক্ষিণাংশবন্ত্রী চৈ-পরগণা ভাগলপুর হইতে পৃথক • Inscriptionum Indicarum, vol. III. p. 11. * Indiam Antiqnary, Vol. XV. p 804—8. ছিল। ১৭৬৯ খৃষ্টাফ পৰ্য্যস্ত এখানকার রাজস্ব সংগ্রহ ও শাসনকার্য্যের ভার জনৈক দেশীয় কৰ্ম্মচারীর হস্তে ন্যস্ত থাকে। ঐ বৎসরের শেষভাগে রাজস্ব ও প্রয়োজনীয় অস্তান্ত বিষয়ের বিশেষ বিবরণ অবগত হইবার নিমিত্ত রাজমহল श्रेष्ऊ अऐनक हेरब्राण-'ब्रिार्थक मियूक्त श्न ; किच्च ठिनि সম্পূর্ণরূপ কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই। ১৭৭২ খৃষ্টাবে এই দেশের স্বশাসন স্থাপন করিতে কৃতসংকল্প হইয়া কোম্পানী বাহাদুর স্বকীয় অসাধারণ অধ্যবসায়-গুণে ও স্থানীয় জমিদারদিগের সাহায্যে কলেক্টর ক্লিভল্যাও দ্বারা অল্পদিনের মধ্যে উক্ত প্রদেশে শাসনবৃঙ্খলা স্থাপন কল্পিয়াছিলেন । ঐ সময়ে উহার দক্ষিণ ও পশ্চিমাংশে পাৰ্ব্বত্য জাতির অত্যস্ত উপদ্রব ছিল। তাহারা উক্ত স্থান পুনঃ পুনঃ আক্রমণ ও লুণ্ঠন করিয়া এরূপ বিপৰ্য্যন্ত করিয়াছিল যে, উহার শাসননির্দেশক কোন সীমা ধাৰ্য্য ছিল না । উহার সীমানির্দেশের জন্য ১৭৭৪ খৃষ্টাব্দে একজন স্বতন্ত্ৰ কৰ্ম্মচারী-নিয়োগের ব্যবস্থা হয় । রাজস্বসংগ্রহ ও দণ্ডবিধি প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে এখানকার সীমার কিঞ্চিৎ পরিবর্তন ঘটিয়াছে । ১৭৭৭ হইতে ১৭৭৮ খৃষ্টান্ধের মধ্যে দম্বাদল প্রায় ৪৪ খানি গ্রাম লুণ্ঠনপুৰ্ব্বক জালাহয় দেয়। রাজস্ব সংগ্ৰাহক ক্লিভল্যাণ্ডের যত্নে (১৭৮e খৃঃ) এখানকার দস্থ্যপ্রভাব বিদূরিত হয়। দক্ষ্যদলের প্রভুত্ব খৰ্ব্ব হইলে, এখানে কৃষিবাণিজ্যাদির উন্নতি সাধিত হইয়াছিল। ১৮৬৪ খৃষ্টাব্দে গঙ্গার উত্তরতীরবর্তী ৭•• বর্গমাস্থল পরিমাণ ভূমি ইহার অন্তর্গত করা হইয়াছে এবং ১৮৭৪ খৃষ্টাব্দে থরকপুর পরগণ ভাগলপুর হইতে পৃথক করিয়া মুঙ্গের জেলার অধীন করা হয় । এথানকার বিভিন্ন স্থানে অনেকানেক প্রাচীন কীfক্টর নিদর্শন পাওয়া যায়। ভাগলপুর নগরের সন্নিকটস্থ দুইটী মুসলমান তীর্থ বা মসজিদ এবং জৈন অস্বাল সম্প্রদায়ীদিগের দুইটী মন্দির সমধিক প্রসিদ্ধ। এখানকার কর্ণগড় পৰ্ব্বতের ক্লিভল্যাওস্তস্ত ও গুহাদি দেখিবার জিনিষ। এতদ্ভিন্ন পাথরঘাট, মায়াগঞ্জ, কাহালগাও প্রভৃষ্টি স্থানে বহুশত হিন্দুমন্দির ও গুহাদির ভগ্নাবশেষ বিদ্যমান আছে । ৰঙ্গের শেষ স্বাধীন মুসলমান-ভূপতি মামুদসহ কাহালগাল্পে প্রাণত্যাগ করেন । উমারপুর, খন্দোলী, বলুর, সুলতানগঞ্জ প্রভৃতি স্থান এথানকার বাণিজ্যকেন্দ্র বলিয়। পরিগণিত। গঙ্গাতীরবর্তী সুলতান-গঞ্জের দুইটা গগুশৈলের শিখর দেশের একটতে মসজিদ ও অপরটতে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠিত আছে। সিংহেশ্বরস্থান নামক গ্রামে মেলা উপলক্ষে হস্তিবিক্রয় হইয়া থাকে।