পাতা:বিশ্বকোষ দশম খণ্ড.djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীরদ অতিথি ছছলেন, এবং তাছার পরিচর্ধ্যায় তুষ্ট হইয় তাহাকে বর দিলেন, তোমায় বহুতর পুত্রপৌত্ৰাদি ও অশেষ ধনবাছমাদি হউক। অনন্তর উভয়ে তথা হইতে ভাগীরথীতটস্থ চেলিকাগ্রামে উপস্থিত হইলেন। এই স্থানে একজন ব্রাহ্মণ স্বীয় ক্ষেত্রে হল কৰ্ম্ম করিতেছিলেন । ইহারা গিয়া তাহার নিকট অতিথি হইলেন। ব্রাহ্মণ ইহাদের যথোচিত পরিচর্য । করিলেন। কিন্তু গমন সময়ে বিষ্ণু তাহাকে কছিলেন, কথন তোমার কৃষিতে উন্নতি বা পুত্রসন্তান হইবে না। পথে নারদ বিষ্ণুকে জিজ্ঞাসা করিলেন, প্রভু, ব্রাহ্মণকে এরূপ শাপ দিলেন কেন ? বিষ্ণু বলিলেন, এ শাপ নহে, বর। একজন মৎস্তজীবি মৎস্তবধ করিয়া সংবৎসরে যত পাপ সঞ্চয় করে, লাঙ্গলকারী দ্বিজ একদিনে তত পাপ সঞ্চয় করিয়া থাকে। এজনা যাহাতে ঐ ব্যক্তির পুত্র হইয়া পাপবৃদ্ধি না করে, তাহার উপায় বিধান করিয়া আসিলাম। অনস্তর উভয়ে কানাকুজদেশে উত্তীর্ণ হইয় এক সরোবরতীরে উপস্থিত হইলেন। তথা বিষ্ণু নারদকে স্নান করিতে কছিলেন। কিন্তু ইনি স্নান করিয়া উঠিবামাত্র পরমরমণীয়া সুন্দরী স্ত্রীরূপ প্রাপ্ত হষ্টলে বিষ্ণুও অন্তহিত হয়েন। এই সময় তালধ্বজ নামক রাঞ্জ তথায় উপস্থিত হক্টয় ষ্টঙ্গকে পত্নীরূপে গ্রহণ করেন। ইনি দ্বাদশবর্ষ স্বামীর সহিত সুখে বাস করিলে ইহার গর্ড সঞ্চার হয়, যথা সময়ে এক অলাবু প্রসব করেন। ঐ অলাবু মধ্য হইতে গান্ধারীর শত পুত্রের ন্যায় পঞ্চাশৎ পুত্র জন্মিল। ক্রমে সেই সকল পুত্র মহাবল পরাক্রান্ত হইয় উঠিল। ক্রমে তাহাদেরও অনেক পুত্রাদি হইল। অবশেষে তাহার রাজ্যের জন্য কুরুপগুবদিগের ন্যায় আপন আপনি যুদ্ধ করিয়া সকলে নষ্ট হইল। ইনি তাহ দেখিয়া অতিশয় আকুল হইলেন, এবং স্বামীর সহিত নিরন্তর রোদন করিতে লাগিলেন। তখন ভগবান্‌ বিষ্ণু বৃদ্ধ ব্রাহ্মণবেশে ও অন্যান্য দেবগণকে দ্বিজবেশে সঙ্গে লইয়া সেইথানে উপস্থিত হুইয়৷ ইহাদিগকে অনেক বুঝাইলেন, কিন্তু কিছুতেই শান্ত করিতে পারিলেন না। পরে নারদকে সেই সরোবরে স্নান করাইয়া পুনরায় স্বরূপ দান করিলেন। তখন বিষ্ণু নারদকে মায়ার স্বরূপ জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, নারদ হাস্ত করিয়া মায়ার স্বরূপ জানাইয়াছিলেন। .কোন সময়ে ভগবান বিষ্ণু কৌশিকের প্রতির জন্ত তুম্বককে সভায় গান করিতে করেন। নারদও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন। পরে ইনি তুম্বুরুর গান শুনিয়া ঈৰ্ষাপরবশ হন, এবং বিষ্ণুর উপদেশে গানশিক্ষার জন্য উলুকেশ্বরের নিকট গমন করেন। তাহার নিকটে যথানিয়মে সহস্ৰ দিব্য বৎসর গান J צס ] নারদ শিক্ষা করিয়া, ইহার মনে কিঞ্চিৎ অহঙ্কারের আবেশ হুইল । ইনি ভুমুরুকে জয় করিবার জষ্ট তাছার ভবনাভিমুখে যাইয়া দেখিলেন, কতকগুলি বিকৃতাকার স্ত্রীপুখুধ রহিয়াঁছে, ইনি তাঁহাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করিলে তাহারা কহিল, আমরা রাগ ও রাগিণী । আপনার গানে আমাদের এই দুৰ্দশা হইয়াছে। তুম্বুরু আবার গান দ্বারা আমাদিগকে সুস্থ করিবেন বলিয়া এখানে আসিয়াছি। নারদ ইহাদের এই কথা শুনিয়া লজ্জিত হইয়া নারায়ণের নিকট গমন করিলেন । নারায়ণ নারদের আক্ষেপ শুনিয়া বলিয়াছিলেন, তুমি এখনও গীতশাস্ত্রে পারদর্শী হও নাই, আমি যখন যদুবংশে কৃষ্ণরূপে জন্মগ্রহণ করিব, সেই সময় তুমি আমার নিকট গমন করিলে গানশিক্ষার উপায় করিব । এক সময়ে নারদ অম্বরীষরাঞ্জার কম্ভ খ্ৰীমতীকে বিবাহ করিতে যাইয়৷ অতিশয় অপ্রতিভ হন। { শ্ৰীমতী দেখ। ] পরে কৃষ্ণ যদুবংশে অবতীর্ণ হইলে নারদ গানশিক্ষার্থ গমন করেন, তখন শ্ৰীকৃষ্ণ নারদকে যথাক্রমে জাম্ববতী ও সত্যভামার নিকট ছুই বৎসর গান শিক্ষা করাইলেন, কিন্তু নারদ কোন ক্রমেই স্বরায়ত্ত করিতে পারিলেন মা। পরে রুক্মিণীর নিকট তুই বৎসর শিক্ষার পর স্বর ও বীণাযোগ শিক্ষা করিলেন। শেষে ভগবান স্বয়ং অমুত্তম গানযোগ শিক্ষা দিলেন। তখন নারদের তুম্বুরুর উপর যে ঈর্ষা ছিল, তাছা তিরোহিত ছইল। নারদ এই গানশিক্ষায় ব্ৰহ্মানন্দে বিভোর হইয়া হরিগুণগান করিতে করিতে জগতে বিচরণ করিতে লাগিলেন । ( ভাগ, ব্ৰহ্মাগু, বিষ্ণু”, বরাহ, ভবিষ্যপু অদ্ভুত রামা” ) হরিবংশ মতে—নারদ ব্ৰহ্মার মানসপুত্র। ব্ৰহ্মা প্রজাস্মৃষ্টি করিতে অভিলাষী হইয়া মরীচি, অত্রি প্রভৃতিকে প্রথমে উৎপাদন করেন, তাহার পর ব্রহ্মা হইতে সনক, সনন, তন, সনৎকুমার, স্কন্ধ, নারদ ও রোষাত্মক রুদ্রদেব জন্মগ্রহণ করেন । (হরিবংশ ১ অ” ) ব্ৰহ্মার মানসপুত্র নারদ সপ্তর্ষির মধ্যে একজন । ব্ৰহ্মা পুত্রদিগকে প্রজাস্যষ্টিতে নিয়োগ করিলে তাহার নারদের বাক্যে বিনষ্ট হইলে ব্রহ্মা ইহাকে শাপ দিয়াছিলেন,— তুমি সৰ্ব্বদা লোকসমূহে ভ্রমণ করিয়া বেড়াইবে, এক স্থানে স্থির থাকিতে পরিবে না।’ “তন্মালোকেষু তে মূঢ় ন ভবেদ ভ্রমতঃ পদম্।” (বিষ্ণুপু ১।১৫ অধ্যায় টাকা ) আমাদের পুরাণ-সমুহে নারদ অতুলনীয় ব্যক্তি, নারদের সছিতই মারদের তুলনা করা যায়। এমন পুরাণ নাই, এমন কাব্য নাই, যাহাতে নারদ নাই। শিবের বিবাহ নায়দ