পাতা:বিশ্বকোষ দশম খণ্ড.djvu/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নারায়ণস্বামী আমাকে অবজ্ঞা করিলে, এই জন্ত তোমরা কলিযুগে ভূমণ্ডলে छायडौ* ट्रेंट्द् ।* তদন্তর কলিযুগে সহজানন্দ নারায়ণরূপে ও ঋষিগণ র্তাহার সাঙ্গোপাঙ্গ হইয়া জন্মগ্রহণ করিলেন । নিকুলানন্দ সাধু রচিত ভক্ত-চিন্তামণিতে লিখিত আছে— . অযোধ্যার অন্তর্গত চুপিয়া নামক ক্ষুদ্রনগরে ১৮৩৭ সংবতে চৈত্রমাসের শুক্লনবমীতে নারায়ণস্বামী জন্মগ্রহণ করেন । তাহার পিতার নাম হরিপ্রসাদ ও মাতার নাম বালা । আবার জ্ঞানোদয়ের মতে—তাহার পিতার নাম ধৰ্ম্মদেব ও মাতার নাম প্রেমবর্তী বা ভক্তি । তিনি সাবর্ণগোত্রজ ও সামবেদের কোঁথুনী শাখাধ্যায়ী । তিনি পিতার মধ্যম পুত্র। র্তাহার জ্যেষ্ঠের নাম রামপ্রতাপ ও কনিষ্ঠের নাম ইচ্ছারাম । বাল্যকালে সকলে র্তাহাকে ঘনগু্যাম বা হরিকৃষ্ণ বলিয়া ডাকিত। যথাকলে ঘনশুমের উপনয়ন হইল। উপনয়নের পর ব্রহ্মচর্ঘ্য পালন করিতে হয় । এই সময় মাতুল গিয়া মণিবককে ফিরিয়া আনিয়া গৃহধৰ্ম্মপালনে নিযুক্ত করেন। প্রথামত ঘনষ্ঠাম ব্রহ্মচারী হুইয়া ছুটলেন। তাহার মাতুল তাহাকে সংসারে ফিরিয়া আনিবাঞ্জ জন্ত কত মিষ্ট কথা বলিলেন। কিন্তু সে মিষ্টকথায় ঘনামের মন ভুলিল না। তিনি সংসারের মায় কাটাইলেন। তিনি ভগবপ্রেমে মত্ত হইয়া ক্রমাগত ছুটিতেছেন, পাছে পাছে তাহার মাতুল র্তাহাকে ধরিবার জন্য চলিয়াছেন। বীরক্রোশ আসিবার পর ঘনশ্যাম দেখিলেন, তখনও তাহার মাতুল পাছু ছাড়েন নাই । তিনি ফিরিয়া বলিলেন, "কেন আমার পাছে পাছে আসিতেছ। আমার অদৃষ্টে সংসারমুখ নাই । আমি আর সংসারে যাব না।” যে দিন তিনি ব্রহ্মচারী হইলেন, সেইদিনই এক গুরুসন্ধু পাইলেন। সেই গুরুর নিকট যথাকালে দীক্ষিত হইলেন, একাদশ বর্য বয়ঃক্রমকালে তিনি কেদার-বদরিকাশ্রম প্রভৃতি তীর্থদর্শনে চলিলেন। রামেশ্বর দর্শন করিয়া তিনি দক্ষিণাত্যে নিবিড় অরণ্যে গিয়া স্বর্যোর আরাধনা করিতে লাগিলেন। স্বৰ্য্যদেব তাহাকে দেখা দিয়া বর দিলেন, ‘তুমি যে কার্য করিবে, তাহাতেই সিদ্ধ হইবে ।’ এথান হইতে বাহির হইয়া ঘনখাম ‘নীলকণ্ঠ ব্রহ্মচারী’ নামে নানীতীর্থ পৰ্যটন করিতে লাগিলেন । ১৮৫৬ সংবতে, ১৯শ বর্ষের সময় তিনি জুনাগড়ের নিকটৰু লোজ নামক গ্রামে উপস্থিত হইলেন। তৎকালে এখানে মুক্তানন্দপ্রমুখ রামানন্দমতাবলম্বী প্রায় পঞ্চাশজন সাধু-অবস্থান করিতেছিলেন। যুবক নীলকণ্ঠের সহিত রামানন্দিগণের আলাপ হইল। মুক্তানদের গুরু রামানদের নিকট ঘনাম [ 8q 1 নারায়ণস্বামী সংবৎ ১৮৫৭ অক্সে ১১ই কাৰ্ত্তিক উপদেশ গ্রহণ করিলেন, তখন হইতে র্তাহার নাম হইল সহজানন্দ । 緣 বিংশতিবর্ষ হইতে সহজাননা ধৰ্ম্মপ্রচারে প্রবৃত্ত হইলেন। ক্রমে তাহার বহুসংখ্যক শিষ্য হইতে লাগিল। তিনি সমাধিবলে এরূপ এক জ্যোতিঃ লাভ করিয়াছিলেন যে, তাহার শিষ্যগণ র্তাহাকে দেখিলেই শঙ্খচক্ৰগদাপদ্মধারী শ্ৰীকৃষ্ণ বলিয়াই মনে করিত। তাহার গুরু রামানন্দ লোকের মুখে শুনিয়া তাহার এই অমানুষিক শক্তিতে বিশ্বাস করেন নাই, কিন্তু পরীক্ষণ করিয়া তাহারও সে সন্দেহ দুর হইল। তিনি সহজানন্দকে আপনার গদীতে বসাইয়া দেহত্যাগ করিলেন । তৎপরে সহজানন্দ কচ্ছদেশে আসিয়া বহুসংখ্যক মল্ল ও কুণবীজাতিকে নিজ মতে দীক্ষিত করিলেন। যে সকল কুণবী র্তাহার ধৰ্ম্মমত গ্রহণ করিল, তাহাদের পূর্বপুরুবগণ জাতি ত্যাগ না করিলেও মুসলমান আচার অবলম্বন করিয়াছিল। তাহারা পিতৃশ্ৰাদ্ধ করিত না । মৃতব্যক্তিকে গোর দিত, কাজি ডাকিয় তাহার আদেশে বিবাহাদি সম্পন্ন করিত। এখন সহজানন্দের উপদেশে আবার কুণবীর শ্রাদ্ধ ও দাহাদি আরস্তু করিল। সহজানন্দ আহ্মদাবাদে আসিয়া প্রচার করেন যে, ‘নানা প্রতিমাপূজার কোন প্রয়োজন নাই। একমাত্র নারায়ণের সেবা করিলেই মুক্তিলাভ হয়। র্তাহার মুখে বহু প্রতিমাপূজার নিন্দাবাদ শুনিয়া ব্রাহ্মণগণ পেশবার দিকট গুরুতর অভিযোগ উপস্থিত করিল। সহজানন্দ বাধ্য হইয়া আহ্মদাবাদ পরিত্যাগ করিলেন । তৎপরে তিনি আহ্মদাবাদের নিকট জেতলপুরে গহিড়ভান নামক গ্রামে ও নরিয়াদের নিকটবর্তী দভণ গ্রামে ‘মহারুদ্র’ নামে মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। জেতলপুরে অবস্থানকালে বহুলোক স্ত্রীপুত্ৰগৃহপরিজন পরিত্যাগ করিয়া সাধু হইয়াছিল। ১৮৬৮ সংবতে ভবনগররাজ্যের অন্তর্গত গঢ়ড়ানামক স্থানে গিয়া কাঠসর্দার দাদা-এডল-কাচরকে দীক্ষিত করেন। এখানে সহজানন্দ কিছুকাল কাঠিসর্দারের গৃহে মহাসমারোহে অবস্থান করেন। এখানে ৮০০ ব্যক্তি র্তাহার শিষ্যত্ব স্বীকার করে। তন্মধ্যে ১৫০ জন রমণী সঙ্খ্যযোগী’ বা সন্ন্যাসিনী হইয়াছিল । তৎপরে তিনি আপন প্রধান শিষ্যগণকে পাঠাইয়া আহ্মদাবাদ, ভুজ, নরিয়াদের নিকট বড়তাল, জেতলপুর, ধোলক, মুলিয়ে প্রভৃতি বহু স্থানে লক্ষ্মীনারায়ণের মন্দির স্থাপন করেন। তন্মধ্যে আহ্মদাবাদের স্বামী-নারায়ণের মন্দির অতি প্রসিদ্ধ । এ সময়ে সহজানন্দ স্বামী নারায়ণ নামেই প্রসিদ্ধ হইয়াছেন।