পাতা:বিশ্বকোষ দ্বাবিংশ খণ্ড.djvu/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সুবর্ণ থাকে, সেখানে অথবা শ্লেট, কি স্ফটিকনিভ ( Crystallime ) প্রস্তরময় পাছাড়ের ফাটালেই সাধারণতঃ স্বর্ণ অধিক পরিমাণে পাওয়া গিয়া থাকে। কখনও কখনও ইহা অবিমিশ্র অবস্থায়, কিন্তু অধিকাংশ স্থলেই লৌহ, তাম্র, চুম্বকশক্তিবিশিষ্ট পাইরাইট, সিমুলক্ষীরজ পাইরাইটজ, গালেন, আকরলব্ধ অসংস্কৃত রৌপ্য প্রভূভির সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় পাওয়া যার । শেষোক্ত স্থান হইতে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই স্বর্ণ সংগৃহীত হইরা থাকে। অতিপ্রাচীনকাল হইতেই ভারতবর্ষের সুবর্ণখ্যাভি বিশ্বব্যাপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল। স্বর্ণ সংগ্রহের জন্য সলোমন রাজা যে অফির নামক স্থানে জাহাজ প্রেরণ করিতেন বলিয়। বাইবেলে উল্লেখ আছে, অনেকের বিশ্বাস, সেই অফির ভায়তবর্ষের মলবার উপকূলেরই কোন বন্দর বা সৌবীর । ৭৭ খৃঃ অন্ধে প্লিনি যে হারেই জাতি-আধুবিত স্ববর্ণরৌপ্য-ধনিবহুল দেশের উল্লেখ করিয়াছিলেন, দৃঢ়ৰূপে প্রমাণিত হইয়াছে যে সেই দ্যারেই জাতি মলবারের নায়র ব্যতীত অন্ত কেহ নহে। শিলালিপি, তাম্রশাসন প্রভৃতি হইতে জানা যায় যে, একাদশশভাবীতে দাক্ষিণাত্যে বহুপরিমাণে স্বর্ণ উত্তোলিত ও সংগৃহীত কষ্টত। অনেক লেখক লিথিয়া গিয়াছেন যে তথন এদেশে বহু সংখ্যক ও বহু প্রাচীন মুবর্ণখনি ছিল। ষোড়শ শতাব্দীতে লিখিত আইন্‌ষ্ট-অকৃবরী পাঠে জানা যায় যে, যদিও তখন বিদেশ হইতে সুবর্ণ এদেশে আমদানী করা হইভ, তথাপি উত্তরবত্তী পাৰ্ব্বভ্য প্রদেশসমূহে ও তিব্বভে বহু পরিমাণে স্বর্ণ পাওয়া যাইত। ঢালনী ( ধৌত করণ ) প্রক্রিয় দ্বারা গঙ্গা, সিন্ধু এবং অন্তান্ত অনেক নদীর বালুক হইভে স্বর্ণরেণু বাছির করা হইত। এখনও অনেক স্থলে এই ভাবে মুবর্ণ সংগৃহীত হইয় থাকে । কিন্তু ইহাতে ষে পরিমাণে পরিশ্রম করিতে হয়, তদনুরূপ লাভ হয় না বলিয়া লোকের দৃষ্টি এদিক হইতে ক্রমেই অপসারিত হইতেছে। তবে, অধুনা দক্ষিণভারতবর্ষে আকর হইতে স্বর্ণ উত্তোলনের নূতন চেষ্ট হইতেছে । ভারতবর্ষে নানা স্থানেই সুবর্ণ পাওরা যায়। তাহার একটি ইতিহাস দেওয়া ধাইতেছে— বঙ্গদেশ-মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ায় যথাক্রমে কাসাই নদী ও দ্বারকেশ্বর নদীর বালুক ধৌত করিয়া স্বর্ণরেণু সংগ্রহ করা হয় । এখানে কোন সুবর্ণ-খনি নাই।

  • উড়িষ্যা—এখানেও ধেনকানল, কেওন-বাড়, পাললহরা, ও তালচের নামক দেশীয় রাজ্যসমূহে বালুক ধৌত করিয়া সুবৰ্ণ সংগ্ৰহ করিবায় প্রথা প্রচলিত আছে। বর্তমান সময়ে ব্ৰাহ্মণী নদীর তীরেই এই কার্য সবিশেষ যত্নের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হইতেছে । এখানেও কোন খনি নাই ।

ংক্ষেপে ه و ] J সুবর্ণ ছোট নাগপুর—এখানকার যাবতীয় প্রস্তরময় স্বাভাবিক মৃত্তিকাস্ত,পেই সুবর্ণ বিজড়িত আছে বলিয়া মনে হয়। তবে মানভূম, সিংহভূম, গাজপুর, যশপুর ও উদয়পুরের পাহাড়গুলিষ্ট সুবর্ণপ্রাপ্তির জন্ত সমধিক প্রসিদ্ধ। এদেশে স্বর্ণ সংগ্রহের জন্ম বিশেষ উদ্যোগ চলিতেছে,করেকটি কোম্পানিও প্রতিষ্ঠিত হষ্টয়াছে। সমগ্র মানভূমেরই, বিশেষতঃ ইহার দক্ষিণাংশের নদীসৈকতগুলি সুবর্ণ কণার উজ্জ্বলিভ। এতদ্ব্যতীত, এখানে ক্ষারগুণযুক্ত কঠিন শ্বে তযুত্তিক, অভ্র, প্লেট, ও স্ফটিকমণিসংমিশ্রিত যে সকল পাহাড় আছে, তাহাতেও সুবর্ণরেণু দেখিতে পাওয়া যায়। এখানকরে পরিবর্তনশীল পাহাড় গুলিতেও অতি অল্প পরিমাণে স্বর্ণ সংগৃহীত হইয়া থাকে। মানভূম হইতে যে সকল অৰ্দ্ধ পরিবর্তনশীল গিরিrশ্রণী সিংহভূমের মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে তাহাতেও স্বর্ণ দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু এখানকার পরিবর্তনশীল পাহাড়গুলি একেবারেষ্ট সুবর্ণবিহীন । এই জেলায় নদীসৈকতগুলি মানভূমের পাহাড় অপেক্ষ অধিকভর ফটিকমণিসংমিশ্রিত । তাছাতে মনে হয় যে, এই সকল স্থানে সুবর্ণরেণুও থাকিতে পারে। এখানে কামেরেরা, ধলভূমের কাপড়গদি ঘাট, লাণ্ডু, অসিাস্তোরিয়া, সোণপেট, পোড়াহাট, এবং সারনা এই কয় স্থানেই অধিকতয় পরিমাণে স্বর্ণ পাওয়৷ যায়। তন্মধ্যে সোণপেটই স্বর্ণখনি বলিয়া সমধিক প্রসিদ্ধ। এখানেও নদীতীরস্থ বালুক ধৌত করিয়া মুবর্ণসংগ্রহের প্রথা প্রচলিত আছে। লোহারডগ জেলার কাঞ্চী নদীব বালুকাকণার সঙ্গে সুবর্ণরেণুও মিশ্রিত আছে। গাঙ্গপুর রাজ্যে ইব, নদীতে ও ইবা৫মুখ ইeার শাখাসমূহেও বালুক ধৌত করিয়া স্বর্ণ সংগ্রহের প্রথা প্রচলিত আছে। শুনিভে পাওয়া যায় যে, পূৰ্ব্বে এই অঞ্চলে সুবর্ণখনিও আবিষ্কৃত হইয়াছিল । যশপুর রাজ্যে সমর সমর অনেক বড় বড় সোণার তাল পাওয়া গিয়াছে । উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এখানকায় য়াজ খনি হইভে সুবর্ণ উত্তোলন করিতেন । কিন্তু কোন . এক দুর্ঘটনায় তাহ বন্ধ করা হইয়াছে। এখনও লোকে ভূগর্ভে ১০ ফিট হষ্টতে ৩৯ ফিট পৰ্য্যন্ত সুরঙ্গ কাটিয়া স্বর্ণ উত্তোলিত করিয়া থাকে। যেখানকার মৃত্তিক লাল কি মেটেরংএর, সাধারণতঃ সেখানেই এইরূপ সুরঙ্গ কাটা ইয়া থাকে এবং যে স্তরে সুবর্ণ পাওয়া যায়, তাহাতে মৃত্তিকার সঙ্গে প্রস্তর এবং স্ফটিকথওও মিশ্রিত থাকে । উদয়পুর রাজ্যে নদীতীরবর্তী ও নদীগর্ভস্থ বালুকাকণার সঙ্গে মুবর্ণরেণু বিজড়িত। এই বালুক ধৌত করিয়া কয়েকটি পরিবার বেশ স্বচ্ছলো জীবিকা নিৰ্ব্বাহ করিতেছে।