পাতা:বিশ্বকোষ নবম খণ্ড.djvu/৫২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নন্দ


লাগিল না। তিনি মন্ত্রিত্ব পরিত্যাগ করিয়া বানপ্রস্থ অবলম্বন করিলেন। সকলে বররুচিকে না দেখিয়া ভাবিল রাজা তাছাকে মারিয়া ফেলিয়াছে। বররুচির গৃহে সে সংবাদ গেল। বররুচির পত্নী উপকোশ অগ্নিতে প্রাণ বিসর্জন করিলেন। শকটাল এখন মন্ত্রী হইলেও তাহার বৈর-নির্যাতনম্পূহ তিরোহিত হয় নাই। তিনি একদিন দেখিলেন, এক কদাকার ব্রাহ্মণ মাঠের মধ্যে গর্ত খুড়িতেছে। তাহার কারণ জিজ্ঞাসা করায় তিনি উত্তর করিলেন, ‘এই কুশ আমার পায়ে বিদ্ধ হইয়াছে, সেই জন্ত সমুলে উৎপাটন করিতেছি । শকটাল ঠিক করিয়া লইলেন, এই ব্যক্তি হইতেই তাহার অভিপ্রায় সিদ্ধ হইবে। তিনি তাহাকে বহু অর্থের লোভ দেখাইয়৷ আগামী অমাবস্তার দিন রাজবাটীতে শ্ৰাদ্ধ উপলক্ষে নিমন্ত্রণ করিলেন। সেই কদাকার ব্রাহ্মণই চাণক্য । চাণক্য ভাবিয়া ছিলেন, রাজবাটতে আসিলে তিনিই প্রধান আসন পাইবেন, কিন্তু শকটালের পরামর্শে যোগনন্দ পূৰ্ব্বেই সুবন্ধু নামে এক ব্রাহ্মণকে সেই আসন দিবার সঙ্কল্প করিয়াছিলেন। চাণক্য রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করিয়া যেমন সেই আসনে বসিতে গেলেন, অমনি নন তাহাকে নিবারণ করিলেন। তাহাতে চাণক্য আপনাকে নিতান্ত অপমানিত বোধ করিয়া ‘সাত দিনের মধ্যে নন্দের মৃত্যু হইবে এই বলিয়া অভিসম্পাত করিলেন। নন্দও তৎক্ষণাৎ চাণক্যকে প্রাসাদ হইতে বাহির করিয়া দিতে কহিলেন । এ দিকে শকটাল চাণক্যকে আপনার গৃহে লইয়া গেলেন, রাজা যে র্তাহাকে অপমানিত করিবেন এ সম্বন্ধে তিনি নিজেই জানিতেন না এবং তাহারও কোন দোষ নাই এইরূপ বুঝাইয়া নন্দের বিরুদ্ধে আরও তাহাকে উত্তেজিত করিলেন। চাণক্য অভিচারক্রিয়া দ্বারা সাত দিনের মধ্যেই | নন্দের প্রাণ সংহার করিলেন। তখন শকটাল যোগনন্দের ঔরসজাত পুত্র হিরণ্যগুপ্তের ধ্বংস সাধন করিয়া প্রকৃত নন্দপুত্র চন্দ্র গুপ্তকে সিংহাসন প্রদান করিলেন। এখন চাণক্য চন্দ্রগুপ্তের মন্ত্রী হইলেন। এইরূপে শকটাল আপনার উদ্দেশু সাধন করিয়া বানপ্রস্থ আশ্রয় করিলেন । (কথাসরিৎসাগর ) সিংহলের মহাবংশটীকায় ও উত্তরবিহারের অখকথায় নদের এইরূপ সংক্ষিপ্ত পরিচয় পাওয়া যায়— ‘কালাশোকের পর ধৰ্ম্মাশোক পৰ্য্যস্ত ১২ জন রাজত্ব করেন। কালাশোকের ১০ পুত্র । জ্যেষ্ঠপুত্রের মাতৃকুল অভি নীচ জাতীয় বলিয়া গণ্য ছিল। সেই জন্তু সেই পুত্র অপর প্রদেশে থাকিত। কালাশোকের মৃত্যুর পর ( যুদ্ধনিৰ্ব্বাণের ১০ • বৰ পরে 1) তাহা ১ পুত্র একত্র রাজা করিতে থাকেন। এই সময় একজন বহু বল সংগ্ৰহ করিয়া দক্ষ্যবৃত্তি দ্বারা দেশ উৎসন্ন IX [ ৫২১ ] নন্দক করিতে লাগিল। স্বাপতি নগরাদি লুণ্ঠন করিয়া বন মধ্যে গিয়া বাস করিত। এক দিন এক অপরিচিত ব্যক্তি অসীম সাহসে ও উৎসাহে তাহাদের ভীষণ কার্য্যে যোগ দিয়া সকলের প্রশংসা লাভ করিল। সে ব্যক্তি দস্বাগণের সহিত বনে গিয়া তাহাদের জিজ্ঞাসা করিল, “তোমরা কিরূপে থাক।’ তাহার উত্তর করিল, “তুই কি জান্‌ৰি ) চাষবাস কর, কি গোচারণ করা এ সব আমাদের ভাল লাগে না। তুই যেমন দেখুলি, এইরূপে আমরা নগরগ্রামাদি লুট করিয়া মুখে কাল কাটইয়া থাকি। ধনরত্ন কি আহার সামগ্ৰী আমাদের কিছুরই অভাব নাই। মৎস্ত, মাংস ও মদ যথেষ্ট রহিয়াছে। বড় সুখে আমরা থাকি।” দম্যদিগের কথা তাহার বড় ভাল লাগিল । সেও তখন দমাদিগের সহিত রীতি মত মিলিত হইল। এইরূপে কিছুদিন গেল। একদিন দক্ষ্যগণ এক নগর আক্রমণ করিল। নগরবাসিগণের সতর্কতায় ও সাহসিকতায় দস্তাগণ কিছুই করিতে পারিল না। বরং তাঁহাদের দলপতি নাগরিকদিগের হস্তে নিহত হইল। দস্বাগণ সকলে একত্র হইয়া বিলাপ করিতে করিতে বলিতে লাগিল, “আমাদের সহায় সম্বল সকলই গিয়াছে। যখন দলপতি মরিল, তখন আর কে এ দল রাখিতে সমর্থ হইবে ।’ এই সময় নবাগত ব্যক্তি সোৎসাহে উত্তর করিল, ‘কোন চিন্তা নাই। আমি তোমাদের দল রক্ষা করিব।” এবার দস্থ্যগণ সাধু সাধু বলিয়া তাঁহাকেই আপনাদের দলপতি করিয়া লইল । তাঁহারই পর সেই দম্পতি নন্দ নামে প্রসিদ্ধ . হইলেন। তিনি গ্রামে গ্রামে নগরে নগরে অনবরত লুণ্ঠন বৃত্তি স্বায় বিপুল ধনরত্ন সংগ্ৰহ করিলেন । তাহার উত্তেজনায় তাহার ভ্রাতৃগণও তাহার সহিত যোগ দিলেন। এখন ননী দমাবৃত্তি পরিত্যাগ করিয়া নানা রাজ্য জয় করিয়াপাটীগুত্রের সিংহাসনে আরোহণ করিলেন। বহুদিন রাজত্বের পর তাহার মৃত্যু হইল। অবশেষে একে একে তাহার ভ্রাতৃগণ ২৮বর্ষ রাজত্ব ভোগ করিলেন। ইহারাই নব নন্দ নামে খ্যাত। শেষ বা নবম নন্দের নাম ধননন্দ। ইনি প্রভূত ধনসঞ্চর করিয়াছিলেন বলিয়া ইহার ধননন্দ’ নাম হইয়াছিল। চাণক্যের কৌশলে এই ধননন্দই বিনষ্ট হন। [ চাণক্য, চন্দ্রগুপ্ত ও পরীক্ষিৎ শব্দ দেথ । ] নন্দ, উৎকলের শ্রোত্রিয় ব্রাহ্মণদিগের মধ্যে একটা শ্রেণী। নন্দক (পুং) নলয়তীতি নন্দ-খুল। বিদ্যাময় বিষ্ণুর খড়গ । “রথাঙ্গেনাথ শাঙ্গেন গদয়া নন্দকেন চ | প্রহরারুহ গরুড়ং দৃঢ়োভূত্বা জনাৰ্দ্দন ॥” (হরিব” ১২৭৪৪ । ) ২ ভেক। ৩ সন্তোষকারক। ৪ কুলপালক। স্বার্থে ক । ৫ নন্দগোপ । ৬ নাগভেদ । ৭ অলিমাত্র। ৮ কুমারামচর বিশেষ । ৯ প্লুতরাষ্ট্রের এক পুত্র। 9