পাতা:বিশ্বকোষ নবম খণ্ড.djvu/৫৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নন্দকুমার - -T-T দায়ে কোম্পানীর হস্তে আসা উচিত, কিন্তু রেজfখ ক্রোক করিয়া কোম্পানীকে না দিয়া নিজে ভোগ দখল করিতেছেন। নায়েব বুদারের পদোচিত জায়গীরের জীদারী তিনি পদচু্যত হইয়াও মিজ দখলে আজিও রাখিয়াছেন। এ সম্বন্ধে নন্দকুমার বিস্তর গণ্য মান্ত সাক্ষীও সংগ্ৰহ করিয়াছিলেন। নন্দকুমায়ের চেষ্টায় রেজাখার দোষ প্রমাণিত হইলে, রেজাখ গোপনে নন্দকুমারকে দুই লক্ষ ও হেষ্টিংসকে দশলক্ষ টাকা ঘুষ দিতে চাহেন। নন্দকুমার হেষ্টিংসের নিকট সে কথা প্রকাশ করিলে হেষ্টিংস বলিলেন, এক কোট টাকা দিলেও আমি নির্দোষিতার প্রমাণ না পাইলে তাহাকে ছাড়িব না । ১১৭৩ ( ফসলী ) সালের প্রথম হইতে ১১৮১ ( ফসলী ) সালের শেষ পর্য্যস্ত রাজা সেতাবরায় কমবেশ নব্বই লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করিয়াছিলেন । রাজা সেতাবরায়ও হেষ্টিংসকে চারি লক্ষ, নন্দকুমারকে এক লক্ষ এবং রীড সাহেবকে ৫০ হাজার টাকা যুদ্ধ দিতে চাহিলেন। হেষ্টিংস এ কথাও শুনিয়া পূৰ্ব্বমত মহানুভবতা দেখাইলেন । শেষে বিচার আরম্ভ হইল। যখন এই বিচার চলিতেছে, তথন নবাব নজমৃউদ্দৌলার নাবালক পুত্র মোবারকউদ্দৌলা সিংহাসনে বসিয়াছেন, তাহার অভিভাবক নিয়োগ লইয়৷ একটা মহা তর্ক চলিতেছে। মোবারকউদ্দৌলার মাতা বাবু বেগম ও বিমাতা মণিবেগম উভয়েই অভিভাবক হইবার জন্য আবেদন করিয়াছিলেন। কোম্পানীর ডিরেক্টরের হেষ্টিংসের উপরেই এই বিষয়ের মীমাংসা ও নবাবের দেওয়াননিয়োগের ভারার্পণ করেন । মণিবেগম নন্দকুমারের সাহায্যে হেষ্টিংসকে ২০ লক্ষ টাকা ফু দিবার প্রস্তাব করেন। হেষ্টিংসের মতিছন্ন ঘটিল, এবার অার এড়াইতে পারিলেন না, স্বীকার করিলেন। ননীকুমার গবর্ণরের খানসাম জগন্নাথ ও বালকৃষ্ণ এবং আপনার কৰ্ম্মচারী সদানন্দ ও নরসিংহ দ্বারা এই টাকা পাঠান। এই সময় মহারাজ নন্দকুমার স্বীয় পুত্র গুরুদাসকে নবাবের দেওয়ানী পদে নিযুক্ত করিবার জন্য হেষ্টিংসকে অনুরোধ করেন। হেষ্টিংস তখন নন্দকুমারের উপর অতীব প্রীত হইয়াছেন। প্রথমতঃ–র্তাহার দ্বারা রেজাখ ও সেতাবরায়ের বিচারের মহা মুবিধা হইয়াছে, দ্বিতীয়তঃ—তাহারই মধ্যস্থতায় মণিবেগমের অংরাশি হস্তগত হইয়াছে, সুতরাং হেষ্টিংস গুরুদাসের নিয়োগে সম্মতি প্রদান করিলেন, কিন্তু একবার ঘুষ লইয়া লালসার পথ [ (లిరి ) খুলিয়া দিয়াছেন, সুতরাং প্রকারাস্তরে নন্দকুমারের নিকটও কিছু নজর চাছিলেন। গবর্ণর যখন নিজেই প্রকারান্তরে | নজরের কথা প্রস্তাব করিলেন, তখন নন্দকুমার দিতেও স্বীকৃত | ΙΧ ন্দিকুমার * হইলেন। শেষে মণিবেগম ও রাজা গুরুদাসের নিয়োগের জল্প উক্ত ২০ লক্ষ ব্যতীত আরও ১০৪১০৫২ টাকা নমাকুমার হেষ্টিংসকে দিয়াছিলেন । * ১১৭৯ সালের ৪ঠা ভাদ্র হইতে ২৯এ আশ্বিনের মধ্যে এই সমস্ত টাকা দেওয়া হয়। ইহার কতকাংশ নগদ হেষ্টিংসের নিকট কলিকাতায় পাঠান হয় এবং কতক হেষ্টিংসের বেনিয়ান কৃষ্ণকান্ত নদীর কনিষ্ঠ ভ্রাতা নরসিংহ নদীর নিকট হেষ্টিংসের কাশিমবাজারস্থ কুঠিতে পাঠান হয়। হেষ্টিংস ইহার পর কাউন্‌সিলে মণিবেগমের এবং রাজা গুরুদাসের নিয়োগের কথা প্রস্তাব করেন। কাউন্‌সিলের সভ্য গ্রেহীম, ডেক্রে, মরেল প্রভৃতি রহস্ত না বুঝিয় মণিবেগমের নিয়োগে আপত্তি করিলেন ন, কিন্তু রাজা গুরুদাসের নিয়োগের আপত্তি তুলিয়া বলিলেন যে, যে মহারাজ মনীকুমার ইংরাজ-প্রভূত খৰ্ব্বের জন্য বহুবার বাদশাহের, ফরাসীগণের ও নবাবের সহিত চক্রান্তু করিয়াছেন, র্তাহারপুত্রকে দেওয়ানী দিয়া ক্ষমতা বাড়াইয়া দেওয়া উচিত নহে। হেষ্টিংস সে আপত্তি গ্রাহ না করিয়া নন্দকুমারের চরিত্র সম্বন্ধে এক ীির্ঘ মতামত লিথিয় রাজা গুরুদাসকে দেওয়ানী প্রদান করেন। হেষ্টিংস এই মতামতের মধ্যে যাহা লিখিয়াছিলেন, তাহ হইতে নন্দকুমারের বাস্তবিক চরিত্র কিরূপ ছিল, তাহা জান। যায়। হেষ্টিংস লিখিতেছেন—“নন্দকুমারের চরিত্র সম্বন্ধে দোষ গুণ প্রকাশ করা আমি এ স্থানে সঙ্গত মনে করি না । নন্দকুমার সম্বন্ধে আমি যে অভিপ্রায় প্রকাশ করিয়াছি, ডিরেক্টর-সভা তাহ অবগত আছেন । নবাব মীরজাফর তাহাকে অতিশয় বিশ্বাস করিতেন এবং যতদিন বাচিয়াছিলেন, ততদিন তদ্বিরুদ্ধে কোন কাজই করেন নাই। নন্দকুমার যে সকল রাজনৈতিক ব্যাপারে লিপ্ত ছিলেন, সে কেবল র্তাহার প্রভুর মঙ্গলের জন্ত, তাহার ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্ত, এতদ্ব্যতীত অন্য কোন উদেখা ছিল না । মীরজাফরের সহিত র্তাহার মিজের স্বার্থ যে একবারে কিছুই ছিল না, এমন নহে। মীরজাফর তাহার রাজত্বের আরম্ভ হইতে শেষ পর্যন্ত মহারাজ নন্দকুমারকে যে সকল রাজসন্মানে বিভূষিত করিয়াছেন, তাহ হইতেই নলকুমারের প্রতি র্তাহার প্রীতির পরিমাণ বুঝা যায়। নন্দকুমার সেকালে যাহা যাহা করিয়াছেন, যদিও তাহার অধিকাংশ আমাদের বিপক্ষে পরিচালিত, তথাপি সত্য কথা বলিতে গেলে, ইহাতে র্তাহাকে কোন মতে নিন্দ করা যায় না, বরং ইহা দ্বারাই তাহার চরিত্রের দোষশূন্ততা এবং প্রভূহিতৈষিত প্রকাশ পাইয়াছে ও তাহার গৌরবও বাড়াইয়া তুলিয়াছে। >○8 • Minute of the Committee of Circut of Kasimbazar 280 July, 1772. -