পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অমুমরণ [: চলিয়া মাসিতেছিল। কিন্তু পুরাণাদিতে দেখা যার, সেকালে সকল বিধবা স্ত্রী পতির সঙ্গে পুড়িয়া মরিতেন না । কেহ ব্ৰহ্মচারিণী হইতেন, কেহ গৃহে থাকিতেন, কেহ পুনৰ্ব্বার বিবাহও করিতেন । পাণ্ডুর মৃত্যুর পর কুল্পী, পতির অসুগমন করিলেন না । দ্রোণাচার্য্যের মৃত্যু হইলে কৃপীও পতির অনুগমন করেন নাই । ভাগৰতে লেখা আছে, অশ্বথম নামে কৃপার বীরপুত্র জন্মিয়াছিলেন, সে কারণ তাহাকে পতির অষ্ট্রগমন করিতে হয় নাই । ‘তস্তাত্মনোহৰ্দ্ধং পত্ন্যাস্তে নাম্বগাদ্বীরস্থঃ কৃপী।’ ১ । ৭। ৪৩ বাঙ্গালী দেশে এ নিয়মের চলন ছিল না । এখানে পুত্রবতীয়াও মৃতপতির সঙ্গে পুড়িয়া মরিতেন। কিন্তু পঞ্জাব অঞ্চলে পুত্রবর্তীর পক্ষে সহমরণ নিষিদ্ধ ছিল । * * It is a characteristic trait, that only those women devote themselves to that dismal ceremony whose fate had decreed them not to be mothers. Honigberger.) পূৰ্ব্বকালের চেয়ে ইদানীং সহমরণ কিছু অধিক প্রচলিত হইয়াছিল। স্ত্রীলোকদের ইচ্ছা না থাকিলেও জ্ঞাতিবন্ধু আত্মীয় স্বজনেরা তাহাদিগকে জোর করিয়৷ পোড়াইয়া মারিতেন। অকবরের সেনাপতি জয়মল্ল সিংহের মৃত্যুর পর তাহার স্ত্রী পতির সঙ্গে পুড়িয়। মরিতে অসন্মত হন । জয়মল্লের পুত্র উদয় সিংহ জোর করিয়া জননীকে পোড়াইবার চেষ্টা করেন। বাদশ এই সংৰাদ পাইয়। উদয়সিংহকে কারারুদ্ধ করিয়াছিলেন । সম্রাট এই রূপ কঠিন আইন ও করিয়াছিলেন যে, কোন স্ত্রীলোক আপন ইচ্ছায় অনুসৃত না হইলে, কেহ তাহার উপর জোর করিতে পারিবে না । (আইনই-আকবরী দেখ )। কিন্তু হিন্দুরা সৰ্ব্বত্র এই আইন মানিয়া চলিতেন না । উলানিবাসী মুক্তারাম নামক জনৈক ব্যক্তির মৃত্যু হইলে তাহার তেরজন স্ত্রী পুড়িয়। মরে। চিতার আগুন ধুধু করিয়া জলিতেছে, এমন সময়ে আর দুই জন স্ত্রী উপস্থিত হইল। তাহাদের এক জন চিতায় আগুনে পড়িবে, তজ্জন্ত স্বৰ্য্য প্রভৃতি দেবতাদিগকে অর্থ্য দিবার মন্ত্র পাঠ করিতেছে, ইতি মধ্যে ছঠাৎ তাছার প্রাণে কেমন ভয় হইল। কাজেই সে শ্মশান হইতে পলাইবার চেষ্টা করিতে লাগিল। মুক্তা রামের পুত্র বিমাতাকে ধরিয়া জাগুণে ফেলিয়া দিলেন। অপর স্ত্রীলোকটা অভিনীকে ধরিতে গেল, মুক্তারামের অনুমন্ত্রণ পুত্র তাহাকেও চিতার আগুনে ঠেলিয়; দিলেন। সে সময়ের ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের পণ্ডিত রামনাথ এই নিষ্ঠুর কাজ স্বচক্ষে দেখিয়াছিলেন। ১৮২৮ খৃঃ অস্বের ৯ই মার্চ জেম্স পেগ নামক জনৈক ইংরাজ এক খানি পুস্তক প্রচার করেন। উহার মায়,-“ব্রিটিশ utfiza fazi Rils agara (The Sati's cry to Britain )। ফ্যানী পার্কাস নামে জনৈক ইউরোপীয় মহিলারও একখানি পুস্তক আছে। পূৰ্ব্বদেশে (ভারত বর্ষে ) চব্বিশ বৎসর ভ্রমণের পর সেই পুস্তকখানি fifts &#1 **To HT-Wanderings of a Pilgrim in search of the Picturesque, during four and twenty years in the East with Revelation of life in the Zenana. È gề«Ifn oigtst Hengtesz গল্প আছে । তাহা পড়িলে শরীর শিঙ্গরিয়া উঠে। সহমরণের নিমিত্ত হিন্দুর স্ত্রীলোকের উপর কি পৰ্য্যস্ত অত্যাচাৰু করিত, তাহ ঐ দুইখানি পুস্তকে স্পষ্ট করিয়া লেথ হইয়াছে । সেকালে মঙ্গুষ্যের মন ও বিশ্বাস এবং সমাজের অবস্থা এ প্রকার ছিল না। পতিবিয়োগের পর কাহারও স্ত্রী সহমৃতা ন হইলে কলঙ্কে দেশ ভরিয়া যাইত। পাচ জন লোক এক ঠাই হইলে নানা প্রকার দুর্নাম রটাইত। কাজেই চিরকাল কলঙ্কের ডালী মাথায় করিয়া থাকার চেয়ে স্ত্রীহভ্য ভাল। লোকগঞ্জনার ভয়ে হিন্দুরা অনেককেই জোর করিয়৷ পোড়াইয়া মারিতেন। তাহার পর বিষয়ের লোভ । হয় ত কোন স্ত্রীলোক একটা ঘোর জাতিশত্র,—সম্পত্তির এক অংশ বুকে করিয়া চারি যুগ বসিয়া থাকিবেন। বিধবার প্রাণ বড় কঠিন। একসন্ধ্যা নিরামিষ ভোজন, মাসের মধ্যে দুই দিন নির্জল উপবাস, তাহাতেও শরীর শুকায় না, সহজে মৃত্যু হয় না। অতএব এত জ্বালা মন্ত্রণার চেয়ে বিববৃক্ষের মূল পুৰ্ব্বাহেই উঠাইয়া ফেলা ভাল। এই ভাবিয়া অনেক জ্ঞাতি, আপনার খুড়ী জেঠাই প্রভৃতি বিষয়ের অংশভাগিনীকে জোর করিয়া পোড়াইয়া মারিতেন । কিন্তু এ সকল কাজ লুকান ছিল না । লোকমুখে গভর্ণমেণ্ট সকল কথাই শুনিতে পাইতেন। তাই ১৮০৫ সাল হইতে পুলিশ একটু কড়াকড় হইল। বিধৰ স্ত্রীলোকের ইচ্ছাপূৰ্ব্বক সন্মত মা হইলে কর্তৃপক্ষেরা সহমরণের অনুমতি দিতেন না । হিন্দুরাও ভাৰিয়া চিস্তির একটা উপায় বাহির করিলেন। সহমরণে যাইতে কেহু ইতস্তুত কৱি