অস্ত্যেষ্টি অগ্নিতে হোম করিতে বলেন। এদিকে অশ্বিলায়নীয় সূত্রে দেখা যায় যে, পিতৃমেধের প্রথম হোম এ সময়ে না করিলেও চলে । হোম সাঙ্গ হইল, তাহার পর গৃহ হইতে জন্মের মত বিদায়ের ব্যবস্থা,—বন্ধুবান্ধবের যজ্ঞডুমুর কাষ্টে এক খানি খাট নিৰ্ম্মাণ করিলেন। খাট নিৰ্ম্মাণ করিয়া তাহাতে কৃষ্ণসারচর্শ্ব বিছাইলেন । চৰ্ম্মথানির লোমের পুষ্ঠ নিম্ন দিকে উল্টান থাকিত। আত্মীয় স্বজন আসিয়া শবেব মাথা দক্ষিণদিকে রাখিয়া তাহাকে চিত করিয়া থাটেয় উপরে শোয়াইলেন। মৃতব্যক্তির পুত্র, শবকে একখানি নূতন কাপড় পরাইলেন এবং উপরে ছিলাযুক্ত আর একখানি নূতন কাপড় ঢাকা দিলেন (৩)। পুত্র না থাকিলে সহোদর কিম্ব কোন নিকট জ্ঞাতিকে এই কাজ করিতে হইত। এখন ব্রাহ্মণের মড়া শূদ্রে স্পর্শ করিতে পারে না । মতু(৪) প্রভৃতি শাস্ত্রকারেরা তাঙ্গর নিষেধ করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু পূৰ্ব্বে এ নিয়ম চলিত ছিল না । ব্রাহ্মণ মরিলে বাটীর চাকরের মৃতদেহ শ্মশানে লইয়া যাইত। কিন্তু মনুষ্য দ্বারা শব লইয়া যাইতে অসুবিধা হইলে গোরুর গাড়ীতে মৃতদেহ বহন করার প্রথা ছিল (৫) । শ্মশানে যাইবার সময়ে পথে তিনবার মৃতদেহ নামাইতে হইত । শব নামাইয়া সহগামীরা তিনট মন্ত্র পাঠ করিতেন। এই মন্ত্র দেখিয়া স্পষ্টই জানা যায়, আর্য্যের প্রেতলোকের পথ চিনিবার নিমিত্ত অনেকটা চিন্তা করিতেন, তাহারা পথের সহচর খুজিতেন । (৩) ইদং ত্বা বস্তুং প্রথমং স্বাগন। অপৈতদূহ যদি হাবিভঃ পুরা। ( তৈত্তিরীয় আo ৬ । ১)। এই বস্ত্র তোমার কাছে প্রথম আহক। তুমি পূর্বের যে বস্ত্র পরিয়া আছ, তাহা ত্যাগ কর। Y (৪) ন বিপ্রং স্বেযু তিষ্ঠংস্ক মৃতং শূদ্রেণ নায়য়েৎ। অস্বৰ্গা! হান্থতি: সা স্তাক্ষুদ্রসংস্পর্শদূষিত। মনু ।। ১০৪। ব্রাহ্মণাদির স্বজাতি থাকিতে শূদ্র দ্বারা মৃতদেহ বহাইবে না। কারণ শূত্র স্পর্শ করিলে সেই আহতিদ্বারা তিনি স্বৰ্গ লাভ করিতে পারেন না । বিষ্ণু যম প্রভৃতি অন্যান্য স্মৃতিকারদের পুস্তকেও ঐ রূপ নিষেধ चत्रोंtछ । (s) ইমেী যুনঞ্জমি তে বহী অস্বনীথায় বোড়বে। যাভ্যাং যমস্ত সাদলং স্বকৃতাঞ্চাপি গচ্ছতাং। তৈত্তিরীয় আরণ্যক ৬। ১। ৪। তোমাকে লইয়া যাইবার নিমিত্ত আমি এই দুইটী বৃষকে গাড়ীতে যুড়িয়া দিতেছি। ইহার তোমাকে যমের আলয়ে এবং পুণ্যাহ্মাদের স্থানে লইয়া যাইবে । [ ७२१] - একটা মন্ত্রে লেখা আছে,—‘পূষা পথ উত্তম রূপে জানেন, তোমাকে বহন করিবার নিমিত্ত র্তাহার সুশিক্ষিত শাস্তু পশু আছে, তিনি ভূবনের রক্ষাকর্তা ; তিনি এখান হইতে তোমাকে পিতৃলোকে লইয়া যাউন । এবং অগ্নি তোমার সকল পুণ্যকৰ্ম্ম জানেন, তিনি তোমাকে লইয়। যাউন (৬ )। বাঙ্গালাদেশে এখন শব নামাইবার প্রথা নাই । ইহাকে সকলেই ভয় করিয়া চলেন। লোকের বিশ্বাস এই যে, পথে মড়া নামাইলে গ্রামে মহামারী হয়। তজ্জন্ত দৈবাৎ কেহ মড়। নামাইলে কিম্বা মৃতদেহ ছিড়িয়া পড়িলে গৃহস্থের দ্বারে দ্বারে সাতটা গেটে কড়ী এবং সাত কলসী জল ঢালিয়া দেয়। আর্য্যের মৃতদেহের সঙ্গে শ্মশানে একটা গোরু লইয়া যাইতেন। ঐ গোরুর নাম অমুস্তরণী বা রাজগবী। বুড়া গোরু পাইলেই ভাল হইত। তাহা না মিলিলে, যে গোরুর লোম, চক্ষু কিম্বা খুর কাল তাহাতেও কাজ চলিত। গোরুর অভাবে কেহ কেহ কৃষ্ণবর্ণ তরুণ , ছাগলও লইয়া যাইতেন। শ্মশানে গিয়া বন্ধুবান্ধবের আগে চিতার গৰ্ত্ত কাটতেন। গর্ভট বার অঙ্গুলি গভীর, পাচ প্রাদেশ প্রশস্ত এবং মৃতব্যক্তি মাথার দিকে সোজা করিয়া হাত ছড়াইলে পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ হইতে হাতের তর্জনী পৰ্য্যস্ত যত লম্বা হয়, গৰ্ত্তটাও ঠিক তত বড় দীর্ঘ করা হইত। চিলু কাটা হইলে তাহার উপরে সকলে চিতা সাজাইতেন । তাহার পর শবকে কামাইয়া এবং স্নান করাইয়া চিতার উপরে শোয়ানো হইত। পূৰ্ব্বে কোন কোন স্থানে একটী আশ্চর্য্য নিয়ম চলিত ছিল। উদরে মলমূত্র থাকে। মানুষ মরিয়া পিতৃলোকে যান। কিন্তু মলমূত্র লইয়া পুণ্যধামে যাওয়া কর্তব্য নয়, তাই কেই কেহ নাড়ী ভূড়ী বাহির করিয়া উদর স্বতে পরিপূর্ণ করিতেন । - এই সকল প্রক্রিয়া সমাপ্ত হইয়া গেলে মন্ত্রপাঠ পূৰ্ব্বক রাজগবীকে বধ করা হইত। গোরুটা কি রূপে বধ করা হইত, তাহার কোন উল্লেখ নাই। কিন্তু এরূপ ব্যবস্থা রহিয়াছে বে, তাহার পা হইতে মাথা (৬) পূষা ক্ষেতশ্যাবয়তু প্রস্থিাননষ্টপশুভূবনপ্ত গোপাঃ। স ত্বৈতেভা পরিদদাৎ পিতৃত্যোহগ্নির্দেবেভ্য: সুধিদত্রেভাঃ।। (তৈ• আe ৬ । ১ { e ) { দ্বিতীয় এবং তৃতীয় মন্ত্রের মর্শও প্রায় ঐ রূপ।
পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫১
অবয়ব