পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৩৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[७8२ ] অন্ত্রজ্বর - ডার প্রয়োগ করিলে অনেকস্থলে সুনিদ্র হর । কিন্তু মস্তকে রক্তাধিক্য থাকিলে এই ঔষধ ব্যবস্থা করা কৰ্ত্তব্য নহে। কারণ ইহাতে আফিম আছে। মস্তকে রক্তাধিক্য থাকিলে আফিম সহ হয় না। ফুসফুস প্রদাহ কিম্বা শ্বাসনালী প্রদাহ থাকিলে যদি শ্লেষ্মা নিঃসরণ না হয়, তাহা হইলে আফিমে অনিষ্ট করে। রোগী, একে বারে সংজ্ঞাহীন হইয়া পড়িবে এরূপ পূৰ্ব্বলক্ষণ জানিতে পারিলেও আফিম ব্যবস্থা করিবে না। যাহা হউক, কোন প্রকারে রোগীর স্বনিদ্রা হইলে এক দিনে উৎকট উপদ্রব সকল দূরীভূত হয়। বক্ষঃস্থলের প্রদাহ জন্ত কাশি বর্তমান থাকিলে বুকের উপর তাপিন তৈল দিয়া মৰ্দ্দন করিবে ; পাতল৷ কাপড় তাপিন তৈলে ভিজাইয় তাহা বুকের উপরে বিছাইয়া দিবে ; এবং মসিনার উষ্ণ প্রলেপ পুন: পুনঃ } প্রয়োগ করিবে । সেবনের নিমিত্ত টিং সেনেগা ২০ বিন্দু, সিরপ অব স্কুষ্টল ৩০ বিন্দু, ক্লোরিক ইথর ২ বিলু, কপূরের জল অৰ্দ্ধছটাক। এক মাত্রা। এই ঔষধ ৬ ঘণ্ট অন্তর সেবন করাইবে । উদরাময়, কাশি ও একজর এই উপসর্গগুলির আর একটা মহৌষধ আছে । যথা—লিকর সোডা ক্লোরিনে ২০ বিন্দু, সিরপ অব টলু ৩• বিন্দু, ক্লোরিক ইশ্বর ২০ বিন্দু, সাপেন্টারির | ফাণ্ট অৰ্দ্ধ ছটাক। এক মাত্রা। এই ঔষধ ৪ ৬ ঘণ্টা অস্তুর সেবন করাইবে । রোগী দুৰ্ব্বল হইয়া পড়িতেছে, এরূপ বুঝিতে পারিলেই মাংসের ঝোল এবং ব্ৰাওঁ সেবন কয়াইতে থাকিবে। জররোগে মদ্য প্রয়োগ করিতে হইলে অনেক টুকু বিজ্ঞতা চাই। ঠিক সময়ে এবং উপযুক্ত পরিমাণে মদ্য ব্যবস্থা করিতে না পারিলে বিস্তর অনিষ্ট ঘটে এবং অনেক রোগী চিকিৎসকের অবিবেচনার নিমিত্ত অকালে প্রাণত্যাগ করে । অতএব জররোগের চিকিৎসার সময়ে সকলেই এই কয়েকট বিষয় স্মরণ রাথিবেন— ১। নাড়ী ক্ষীণ ও অতিশয় দ্রুতগামিনী হইলে মদ্য প্রয়োগ করিবে এই ঔষধ দুই এক মাত্র সেবন করিলে যদ্যপি নাড়ী পুৰ্ব্বাপেক্ষা স্বস্থির ও সবল বোধ হয়, তবেই বুঝিতে হইবে যে, মদ্য প্রয়োগে উপকার হইয়াছে। মদ্য সেবন করাইলে যদ্যপি নাড়ীর বেগ ও বক্রগমন বুদ্ধি হয়, তাহ হইলে বুঝ চাই যে, মদ্য সেবনে কোন উপকার হয় নাই ; বরং কিছু অনিষ্ট ঘটিয়াছে। SuS কিন্তু নড়ী চঞ্চল হইলেও মদ্য এককালে স্থগিত রাখা উচিত নহে। পূৰ্ব্বাপেক্ষ আরও অল্প মাত্রায় কিছু বিলম্বে বিলম্বে সেবন করাইবে । এই প্রণালীতে সুরা প্রয়োগ করিলে, কোন রোগীকে কি পরিমাণে এবং কত বিলম্বে বিলম্বে মদ্য সেবন করান আবশ্যক, তাহা অনায়াসে বুঝিতে পারা যায় । যাহারা নিয়ত রোগীর কাছে থাকিয়া বহুদৰ্শিতা লাভ করিয়াছেন, সে সকল বিজ্ঞ চিকিৎসকের প্রায় এত দূর কষ্ট হয় না। মস্তিষ্কের উপসর্গ এবং নাড়ীর গতি দেখিলেই তাহার। মদ্যপ্রয়োগের ফলাফল অবিলম্বে বুঝিতে পারেন। মদ্য সেবন করাইলে যদ্যপি পূৰ্ব্বাপেক্ষ জিহ্বা আরও মলিন হয় ও শুকাইয়া যায়, তাহা হইলে সুরায় অপকার করিয়াছে বুঝিতে হইবে । কিন্তু, যদ্যপি জিহ্বা ক্রমশঃ সরস হইয়। আসে এবং মলিনত। কমিয়। যায়, তবে মদ্য সেবনে শুভ ফল দর্শিয়াছে, ইহা দ্বার। তাহাই বুঝা চাই। মদ্য ব্যবস্থা করিলে যদি প্রলাপ কমিয়া আসে ও নিদ্রার আবির্ভাব হয়, তবে তাহা সুলগণ। কিন্তু প্রলাপ পূৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক হইলে কিছু কালের নিমিত্ত স্থর। সেবন করাইবে না। দুই তিন মাত্র। মদ্য সেবন করাইলে যদি শ্বাস প্রশ্বাস স্বভাবিক হইয়া আসে, তাহা হইলে নিৰ্ভয়ে মদ্য প্রয়োগ করিবে। কিন্তু শ্বাস কৃচ্ছ বৃদ্ধি হইলে এই ঔবধ বন্ধ রাখিবে । আমাদের দেশে সচরাচর জুরাদি রোগের অবসন্নবস্থায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২ ঔপ্স হইতে ৬ ওস ব্ৰাওঁী কিম্বা ৪ ঔপ্স হইতে ৮ ওন্স পোর্ট ব্যবস্থা করা যায় । কচিৎ কোন কোন স্থলে ইহার অধিক পরিমাণেও সেবন করান গিয়াছে। কঠিন পীড়ার সময়ে রোগী অত্যন্ত দুৰ্ব্বল হইয়া পড়িলে ঠিক সময়ে সময়ে মদ্য সেবন করান চাই। মদ্য সেবন দ্বারা শরীর সুস্থ ওনিদ্রার আবির্ভাব হইলেও নির্দিষ্ট সময়ে রোগীকে জাগাইয়। সুরা সেবন করাইবে। কারণ ঠিক সময়ে মদ্য সেবন না করাইলে বিঘ্ন ঘটিবার সম্ভাবনা। রোগী সুস্থির ভাবে ঘুমাইয়াছে বলিয়। তাহাকে জাগাইতে কুষ্ঠিত হইবে না। কুষ্ঠিত হইলে, হয় ত সেই নিদ্র হইতে আর তাছাকে জাগিতে হইবে না। কারণ, তাহা হইলে জীবনী শক্তি একেবারে নিস্তেজ হইয়া পড়ে এবং রোগী ংজ্ঞাহীন হুইয়া প্রাণত্যাগ করে।