পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপেয় সেই সকল সামগ্রী পান করিলে পীড়া জন্মে, তাই শাস্ত্রকারের পানীদি করিতে নিষেধ কয়িয়া গিয়াছেন। ফুগ্ধের সঙ্গে লবণ মিশ্রিত করিয়া পান করিবে না । দুগ্ধ নষ্ট হইয় গেলেও পান করা নিষিদ্ধ . গাভির বাছুর হইলে দশ দিন পরে তাহার দুগ্ধ পান করিবে । দশ দিনের পূৰ্ব্বে গাভিদুগ্ধ অত্যন্ত গুরুপাক থাকে, খাইলে উদরাময়াদি রোগ জন্মে, সে কারণ বিচক্ষণ শাস্ত্রকারেরা তাহা অপেয় বলিয়া ধরিয়াছেন। আধু নিক চিকিৎসকগণ স্থির করিয়াছেন যে, দুগ্ধ অধিক ক্ষণ পড়িয়া থাকিলে বায়ু সহযোগে তাহাতে নান৷ প্রকার বিষ মিশ্রিত হয়। সুতরাং নষ্ট দুগ্ধ খাইলে বিষ ভোজন করা হয়। দুগ্ধে লবণ মিশাইলে পিত্তবৃদ্ধি হইয়া থাকে। সুবিজ্ঞ বৈদ্যেরা কহেন, পরিণামে তাহাতে কুষ্ঠাদি রোগ জন্মিতে পারে। কুকুরের উচ্ছিষ্ট জল পান করিতে নাই। অজ্ঞানত বশতঃ পান করিলে, শঙ্খপুষ্পী নামক লতার সঙ্গে দুগ্ধ পাক করিয়া তিন দিন তাহ পান করা চাই। স্ত্রীর উচ্ছিষ্ট জল পান করাও নিষিদ্ধ। ইহার ঠিক কারণ কি, বলিতে পারা যায় না । শূদ্রের উচ্ছিষ্ট জল পান করিতে নাই। পান করিলে কুশমূলের সঙ্গে দুগ্ধ সিদ্ধ করিয়া তিন দিন কেবল তাহাই পান করিয়া থাকিবে, অন্ত কোন দ্রব্য ভক্ষণ করিবে না। কুকুরে যে পাত্র স্পর্শ করিয়াছে তেমন পাত্রের জল, কিম্বা যে জল শুক্র, বিষ্ঠা অথবা মূত্রাদিতে দূষিত হইয়াছে তাই অপেয়। পান করিলে তপ্তকৃচ্ছ ব্রত করিতে হয় । তাহার অভাবে এক কাহন বার পণ কড়ী উৎসর্গ কর। চাই । চণ্ডালের কৃপে কিম্বা ভাণ্ডে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশু ও শূদ্র জল পান করিবে না । কোম কারণে সেই অপেয় জল পান করিলে ব্রাহ্মণের পক্ষে সস্তিপন ব্ৰত প্রশস্ত। ক্ষত্রিয়ের প্রাজাপত্য ব্রত করা উচিত। বৈশু্যের প্রাজাপতোয় অৰ্দ্ধ। এবং শূদ্রের পক্ষে একপাদ প্রাজাপত্য প্রশস্ত । তাহাতে অশক্ত হইলে ইহার অতুকল্প ব্যবস্থাও আছে। চণ্ডালে জল স্পর্শ করিলে কিম্বা দুগ্ধাদি পাক করিয়া দিলে তাহাও আপেয় । এখন আমাদের মনে এই সন্দেহ জন্মিতে পারে যে, চণ্ডাল ও ব্রাহ্মণাদিতে প্রভেদ কি ? ব্রাহ্মণে জল স্পর্শ করিলে তাহা জপেয় হয় না, চণ্ডালের এত কি | [8$o 1 অপেয় অপরাধ যে, তাহারা জল স্পর্শ করিলে তাহা অপেয় হইয়া যায় ? এ স্থলে অনেকটুকু ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত আছে। পূৰ্ব্বকালের শাস্ত্রকারের অনেক বুঝিয়াই তৎকালোচিত এই নিয়ম বিধিবদ্ধ করিয়াছিলেন । সে কালে চণ্ডালাদি নীচ জাতি পথিকদের সর্বস্ব অপহরণ করিবার নিমিত্ত কৃপাদিতে বিধ ফেলিক্ষ্ম রাথিত। তৃষ্ণাতুর পথিকেরা সেই জল পান করিয়া অজ্ঞান হইয়। পড়িলে দ সু্যরা তাহাদের সর্বস্ব হরণ করিয়া পলাইয়া যাইত। এথনও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলাদি প্রদেশে নীচ জাতির নানা প্রকার কৌশলে পথিকদিগকে ধুতুরা খাওয়াইয়। দেয়। ধুতুরার বিষে সকলে অজ্ঞান হইয়া পড়িলে দুষ্টেরা তাহাদের সর্বস্ব লইয়া পলাইয়া যায়। যে সকল নীচ জাতি স্বভাবতঃ এত নিষ্ঠুর ও অবিশ্বাসী, তাহদের হাতের দ্রব্য পানভোজন করা কর্তব্য নহে । যম বলেন কাচা মাংস, ঘৃত, মধু, ফলসভূত স্নেহবস্তু ম্লেচ্ছাদির ভাড়ে থাকিলে তাহ অপেয় হয় । কিন্তু ভাড় হইতে ঢালিয়া লইলে তাছা শুদ্ধ হইয়া থাকে। জাবাল, শাতাতপ ও শঙ্খমুনির মতে ক্ষত্রিয়, বৈশু ও শূদ্রের নুতন পাত্রস্থ জল, দুগ্ধ, দধি, স্বত, তৈল, ইক্ষুরস, গুড়, খোল ও মধু প্রভৃতি দ্রব্য ভক্ষণ করিলে কোন Cु |ु ट्रै:; नौं ! শাস্ত্রকারেরা বামহস্তে পাত্র ধরিয়া জল পান করিতে নিষেধ করিয়াছেন। লবুহারাতের মতে জলসত্রের জল, কূপ হইতে সকলে যে কলসী করিয়া জল তুলে তাহার জল, দ্রোণী প্রভৃতি যে পাত্র দ্বার। ক্ষেত্রে জল সেক করে তাহার জল, তলবার প্রভৃতি অস্ত্রের থাপের মধ্যস্থিত জল অপেয় । যম বলেন, ঐ সকল পাত্রের জল ভূমিতে ঢালিয়া পুনৰ্ব্বার তাহ পাত্রে তুলিয়া লইলে পান করা যায়,তাহাতে কোন ক্ষতি নাই। অঙ্গীরার মতে, মলমূত্র সংস্থষ্ট কূপের জল পান করিলে প্রায়শ্চিত্ত করা চাই। যদ্যপি তাদৃশ কৃপের জলে মলমূত্রের স্বাদ বা গন্ধ না থাকে তথাপি প্রায়শ্চিত্ত করা আৰশুক। বিষ্ণু ৰলেন যে, ক্ষুদ্র জলাশয়ে বিষ্ঠাদির সংসর্গ থাকিলে তাহার জল অপেয় । কিন্তু বৃহৎ জলাশয়ের যে দিকে মলমূত্র থাকিবে, সেই দিকেরই জল পান করিবে না । অন্ত ঘাটের জল ব্যবহার করিতে দোষ নাই । বিষ্ণু আরও এই রূপ নিয়ম করিয়াছেন যে, কোন কূপে কুকুরাদি পঞ্চনখ প্রাণী মরিলে কিম্বা তাহাতে শ্লেষ্মা, রক্ত ও উচ্ছিষ্টাদি ফেলিলে, তাহার