পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৫৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[(రిe ] রূপলাবণ্যে মোহিত হুইয়া তাহাকে বিবাহ করেন । কাজেই তিনি পিতৃপক্ষ ছাড়িয়া দিন কতক শ্বশুরের পক্ষ অবলম্বন করিয়াছিলেন । আরঙ্গজিব বিশেষ কৌশল করিয়া তাহাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাইয়া দেন। দার, লাহোরে এবং আজমীরে কয়েকবার যুদ্ধের আয়োজন করিয়াছিলেন, কিন্তু অরঙ্গজিবের কাছে পরাস্ত হন। পরিশেষে তিনি অন্ত উপায় না দেখিয়া ভাবিলেন যে, এমন দুঃসময়ে পারস্তে গিয়া আশ্রয় লওয়া শ্ৰেয়: সে কারণ তিনি অনুচরগণের সঙ্গে পারস্তাভিমুখে চলিলেন । সিন্ধুপারে তত্তার কাছে আসিয়া তাহার পত্নী সুলতানা নাদির বাণী অত্যন্তু পীড়িত হইয়া পড়েন। তত্তার সর্দারের নাম জাইহন খা । পূৰ্ব্বে দুইবার তিনি খুনী মোকদ্দমায় পড়িয়াছিলেন। প্রধান বিচারপতির কাছে তাহার অপরাধ সপ্রমাণ হয়। তজ্জন্ত সম্রাট শাজেহান তাহার যাবতীয় সম্পত্তি ক্রোক করিয়া প্রাণদণ্ডের আজ্ঞা দেন। কিন্তু কেবল দারার অনুরোধে জাইহন খাঁ দুই বারই অব্যাহতি পাইয়াছিলেন। তাই দারা ভাবিয়াছিলেন যে, এমন বিপত্তিকালে তাহার উপকৃত সুহৃৎ অবশু দুই চারি দিমের নিমিত্ত আশ্রয় দিতে পারেন। জাইহন আশ্রয় দিলেন। এই খানে সুলতানা নাদির বাশার মৃত্যু হয়। দারা স্ত্রীবিয়োগে কাতর হইরা আছেন, ইতিমধ্যে শুনিলেন যে,অরঙ্গজিবের সেনানায়ক খা-জেহান মুলতান হইতে র্তাহাকে ধরিতে আসিতেছেন। দারা ব্যস্ত হইয়া জাইহনের কাছে বিদায় লইলেন। তত্তানগর ছাড়াইয়। অৰ্দ্ধ ক্রোশ গিয়াছেন, তাহার পর দেখেম পশ্চাতে জাইহন, সঙ্গে প্রায় এক হাজার অশ্বারোহী। দার স্থির করিলেন,—আমার সঙ্গে অধিক লোক নাই । যাহারা আছে, সে সকল লোকও পীড়ায় ও পথশ্রমে কাতর। সে কারণ জাইহন আমাকে পারস্ত পৰ্য্যন্ত রাখিয়া আসিবার জন্ত সঙ্গে আসিতেছেন। কিন্তু জাইছনের তেমন অভ্যাস নাই। উপকার করিলে কৃতজ্ঞ হইতে হয়, গুরুর কাছে সে পাঠ লইতে জাইহন ভুলিয়া গিয়াছিলেন। তিনি অর্থের মাহাত্ম্যই অধিক বুঝেন। দারাকে ধরিয়া দিতে পারিলে অরঙ্গজিবের কাছে পুরস্কার মিলিবে, সেই লোভে তিনি তুৱা ওর্তাহার মধ্যম পুত্রকে ধরিয়া খা-জেহানের হাতে সমপণ করিলেন । - - দারায় এখন অতিশয় জুর্দশা। সৰ্ব্বাঙ্গে ছিন্ন ৰত্ন ; ജ്ഞ~ങ്ക്-ജ്ഞ মাথায় মলিন পাগড়ী। তাহার পুত্রেরও অবস্থা সেই রূপ। খ-জেহান তাহাদিগকে একটা হাতীর উপরে, চড়াইয়া দিল্লিতে আনিলেন। দারার কুরবস্থা দেখিয়া নগরের পশুপক্ষীরাও কঁদিতে লাগিল ; কিন্তু অরঙ্গজিবের মন গলিল না । তিনি জ্যেষ্ঠভ্রাতার ও ভ্রাতু পুত্রের দুর্দশা প্রজাবৰ্গকে দেখাইবার জন্ত তাছাদিগকে একবার নগর প্রদক্ষিণ করাইয়া একটা নির্জন স্থানে আবদ্ধ করিয়া রাখিলেন । দারা জানিয়াছিলেন, भृङ्गा निझिऊ । डिनि পূৰ্ব্ব হইতে কাপড়ের ভিতরে একখানি ছুরী, একটা কলম, দোয়াত ও কয়েক খানি কাগজ লুকাইয়। রাখিয়াছিলেন। কারাগারে কলম কাটিতেন আর বসিয়া বসিয়া দুঃখের কবিভা লিখিতেন। যখন শোকের বেগ উথলির উঠিত, এক একবার পুত্রের গলা ধরিয়া কঁাদিতেন। অরঙ্গজিবের দরবার বসিল । দারা জ্যেষ্ঠ, তাড়াতাড়ি রাজা ইইতে গিয়াছিলেন, তাহার কি দও কর! কর্তব্য ? অনেকেই বলিলেন যে, তাহাকে যাবজ্জীবন গোয়ালিয়রের দুর্গে আবদ্ধ রাখা উচিত। কিন্তু অরঙ্গ - জিবের সে মন নয়, ইহা বুঝিতে পারির দুই এক জন সভাসদ কছিলেন,—‘দারা নাস্তিক। নাস্তিকের - বধ না করিলে মঙ্গদের প্রতিষ্ঠিত ধৰ্ম্মের বিরুদ্ধাচরণ করা হয়’। এখন কথাটা বেশ মনের মত হইল। অরঙ্গজিব কহিলেন,—সে কথা ঠিক। দার। আমার যে ক্ষতি করিতে হয়, করুক ; আমি তাহা সহিতে পারি। কিন্তু নাস্তিকতা অসহ্য । অভএব সেই ब्राज्ञिहउहे দারার প্রাণবিনষ্ট করিবার নিনিত্ত নাজির এবং লিফ নামক দুই জন আফগান সর্দারের উপর ভার দেওয়া হইল । রাত্রি দুই প্রহর। দারার ঘরের পাশে হঠাৎ অন্ত্রের ঝন ঝন শব হইল। হতভাগ্য রাজকুমারের শোকের রাত্রি কতক জাগরণে গিয়াছে ; কতক কাকনিদ্রায় যাইবে, চক্ষু অবসর হইয়া আসিতেছে,—এমন সময়ে অস্ত্রের ঝন ঝন শব্ব কাণে আসিল । তিনি চমকিয়। উঠিলেন ; বুঝিলেন, আজি অস্তকাল উপস্থিত। পুত্র ঘুমাইতেছিল, তাহাকে জাগাইলেন। ঘাতকের দ্বার খুলিল। দারা কলমকাটা চুর খানি লইয়া ঘরের একট কোণে দাড়াইলেন । দুৰ্বত্তের দ্বারার পুত্রকে পাশের একটা ঘরে বাধিয়া রাখিল। প্রথমে তাহারা মনে করিয়াছিল, গল টিপির দারার প্রাণ নষ্ট কৰিবে।