বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৬৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশৌচ [ ৩৩২ ] অশৌচ গলার কাচা বাধিয়। থাকেন। অশোচের সময়ে তাহার তৈলাদি মাখেন না, পায়ে জুতা ও মাথায় ছত্র দেন না এবং ক্ষৌরকর্ষ্য করেন না । দিবসে কেবল হবিষ্যায় ভোজন করিয়া থাকেন, রাত্রিতে অল্প দুগ্ধাদি সেবন করেন। এই সময়ে স্ত্রীসংসৰ্গাদি সকল প্রকার সুখ ভোগ নিষিদ্ধ । প্রাচীন ইহুদীদের মধ্যে অশৌচকাল প্রায় সাত দিন থাকিত, কেহ কেহ ত্রিশ দিনও অশৌচ গ্রহণ করিতেন। অশোঁচের সময়ে সকলে চুল কামাইয়া ফেলি, তেন, কাপড় ছিড়িতেন, পায়ে জুতা দিতেন না, তৈল মাখিতেন না, স্নান করিতেন না ; সকলেই সংযত হইয়। মৃত্তিকায় শুইয়া থাকিতেন। গ্রিস্দেশ বাসীরা ত্রিশ দিন অশৌচ লইতেন। তাহার মধ্যে কেবল স্পার্টানদের দশদিন অশৌচ গ্রহণের পদ্ধতি ছিল। অশোচের সময়ে তাহারা চুল কামাইয়া কৃষ্ণবর্ণ কাপড় পরিয়া থাকিতেন এবং কাহার সম্মুথে বাহির হইতেন না। রোমদেশে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীলোকেরা এক বৎসর অশৌচ গ্রহণ করিতেন; কিন্তু পুরুষের অশৌচ কাল অল্প দিন থাকিত। অশোচের সময়ে স্ত্রীলোকেরা শুভ্র বস্ত্র পরিয়া থাকিতেন এবং পুরুষেরা কৃষ্ণবর্ণ কাপড় পরিতেন। পূৰ্ব্বে স্পেনবাসীরাও অশোচের সময়ে শাদা কাপড় পরিয়া থাকিতেন। আজি কালি সাধারণ ইউরোপবাসীরা অশোঁচের সময়ে কৃষ্ণবর্ণ কাপড় পরিয়া থাকেন, কেহ কেহ হাতে কাল কাপড় জড়াইরা দেন এবং পত্র লিখিবার সময়ে চতুর্দিকে কাল রেখাযুক্ত কাগজ ও খাম ব্যবহার করেন। তুরস্কবাসীরা অশোঁচের সময়ে বায়লেট বর্ণ কাপড় পরেন; চীনবাসীরা শ্বেতবর্ণ; মিশরবাসীর হরিদ্রাবর্ণ ;" এবং ইথিওপিয়াবাসীরা কটাবর্ণ। হিন্দুদিগের জনন ও মরণ অশোচের নিয়ম এই রূপ,--সপ্তম পুরুষ পৰ্য্যন্ত ব্ৰাহ্মণের ১০ দিন ; ক্ষত্রিয়ের ১২ দিন ; বৈশ্বের ১৫ দিন ; শূদ্রের এক মাস। চণ্ডাল, হাড়ী, মুচি প্রভৃতি নিকৃষ্ট জাতিরা ১০ দিন অশৌচ গ্রহণ করে । অশোঁচেয় কিছু দিন গত হইলে পর জ্ঞাতি কুটুম্বর যদি সেই সংবাদ পায় তবে তাহার অবশিষ্ট কয়েক দিন মাত্র অশৌচ গ্রহণ করিতে হয়। মরণাশৌচ গত হইলে যদি এক বৎসরের মধ্যে জ্ঞাতির সেই সংবাদ পায় তবে ত্রিরাত্র অশৌচ থাকে। এক বৎসরের পরে মরণাশৌচ শুনিলে সপিণ্ডগণ স্বান করিয়া শুদ্ধ হয়। কিন্তু সম্বৎসর পরে পিতামাতার মৃত্যু সংবাদ পাইলে পুত্রের একদিন অশৌচ থাকে। এক বৎসর পরে স্বামীর মৃত্যু সংবাদ পাইলে স্ত্রীলোকের এক দিন অশৌচ হয় । দ্বিতীয় বৎসরে শুনিলে সদ্যঃ অশৌচান্ত হইয়া থাকে। কিন্তু শুভ অশৌচ কিম্বা খণ্ডাশৌচ গত হইলে পর তাহ। শুনিলে আর অশৌচ গ্রহণ করিতে হয় না। দীক্ষাগুরুর মৃত্যুর পর ত্রিরাত্র অশৌচ হয়। র্যাহার নিকট বেদবেদাঙ্গাদি শাস্ত্র অধ্যয়ন করা যায় তাহার মৃত্যুতে অহোরাত্র অwেiাঁচ। সকল বর্ণের পক্ষে দশ পুরুষ পৰ্য্যন্ত জনন ও মরণ অশৌচ ত্রিরাত্র। চোঁদ পুরুষ পৰ্য্যন্ত পক্ষিণী । ( পূৰ্ব্বদিন এবং মধ্যের রাত্রি ও পরের দিন, এই সময়ের নাম পক্ষিণী ) । জন্মনাম স্মরণ পৰ্য্যন্ত অর্থাৎ উভয় পূৰ্ব্বপুরুষের নাম স্মরণ পর্যন্ত সকল বর্ণের এক দিন অশৌচ হয় ; তাহার পর জ্ঞাতির স্নান করিলেই শুদ্ধ হইয়া থাকে। মাতামহ মরণে ত্রিরাত্র । মাষ্ট্ৰীভূত ভাই, পিসীতৃত ভাই, মামাতৃত ভাই, ভাগিনেয়, পিতামহভগিনীপুত্র, পিতামহীভগিনীপুত্র ও পিতামহীভাতৃপুত্র, দৌহিত্র ভগিনী, মামী, মাতুল, মাসী, পিসী, গুরুপত্নী, মাতামহী, এবং একগ্রামবাসী শ্বশুরশাশুড়ী মরিলে পক্ষিণী । মাতামহভগিনীপুত্র, মাতামহীভগিনীপুত্র, মাতামহীভাতৃপুত্র ও একগ্রামবাসী স্বগোত্রব্যক্তি মরিলে অহোরাত্র । পিতামাতার মরণে বিবাহিত কস্তার ত্রিরাত্র অশৌচ। বিশেষ বিশেষ কারণে বিশেষ বিশেষ অশৌচ কালের বিবরণ শুদ্ধিতত্বে দেখ }। অশোঁচের কাল গত হইলে সজ্জাতি হিন্দুরা পাক করিবার ছাড়ী প্রভৃতি পরিত্যাগ করেন। মরণাশোঁচের শেষ দিনে ক্ষেীর কৰ্ম্মাদি করিতে হয়। জ্ঞাতিরা গৃহ হইতে কিঞ্চিৎ দূরে কিম্বা গ্রামেয় প্রাস্তে ক্ষেীর কৰ্ম্ম করেন। ক্ষেীর কৰ্ম্মের পর স্নান করিয়া সকলে বাটীতে আসেন। পিতামাতার মরণাশেীচে পুত্রেরা এই দিন পূরক পিণ্ডাদি দেন ; শেষে ক্ষৌরকৰ্ম্মের পর স্নানাদি করিয়া স্ত্রীলোকদের সঙ্গে গৃহে আসিয়া পূৰ্ণঘট এবং অল্পব্যঞ্জনাদি দর্শন করেন। পূৰ্ব্বকালে আর্য্যদের মধ্যে অশৌচান্তের দিন যে সকল ক্রিয়া চলিত ছিল, এখন আর তাহার কিছুই নাই । তৈত্তিরীয় আরণ্যকে ইহাকে “শাস্তিকৰ্ম্ম বলিয়া