পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৬৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বরী পাথুরীর ওজন অৰ্দ্ধ সের পর্য্যন্ত হয় । বৃক্ককে পাথুরী জন্মিলে এই রূপ লক্ষণ প্রকাশ পায়, —কটিতে বেদনা, উপরে টিপিলে কিঞ্চিৎ কোমল বোধ হয়, প্রস্রাবের বর্ণ বিকৃত হইয়া থাকে ; মুত্রতাগের সময়ে কখন কখন রক্ত বাচির হয় এবং শরীর কৃশ ও অসুস্থ হইয়া পড়ে। বৃককের ভিতরেও কখন কখন পাথুরী অত্যন্ত বড় হয়। এ রূপ অবস্থা ঘটিলে কুঁচুকীর কাছে ফুলিয়া পাকিয় উঠে। তখন অস্ত্র প্রয়োগ দ্বারা পাথুরী বাহির করিতে হয়। বৃক্কক হইতে সূত্রায়ুপ্রণালী দিয়া মূত্রাশয়ে পাথুরী আসিবার সময়ে রোগীর অত্যন্ত যন্ত্রণা হইতে থাকে । পুনঃ পুন: প্রস্রাব করিতে ইচ্ছা হয় ; প্রস্রাব পরিমাণে অল্প এবং রক্তসংযুক্ত থাকে; অণ্ডকোবে বেদনা করে এবং উহ। গুটাইয়া উপর দিকে উঠে। উরুর ভিতর দিকেও অত্যন্ত বেদন হয়। কখন কখন এই অবস্থায় রোগীর বমন হইয়া থাকে । মূত্রায়ুপ্রণালী হইতে মূত্রাশয়ে পাথুরী আসিয়া পড়িলে রোগীর পুনঃ পুনঃ প্রস্রাব ত্যাগ করিতে ইচ্ছা হয়, মূত্রপথে পুরুষাঙ্গে এবং কুঁচকিতে বেদনা করে ; কথন কথন মূত্রপথের দ্বারে পাথুরী আসিয়া পড়িলে হঠাৎ প্রস্রাব বন্ধ হয় ; পাথুরীর উগ্রতাতে সময়ে সময়ে রক্তমিশ্রিত মূত্রও বাহির হইতে পারে। বৃক্কক হইতে পাথুরী ন। নামিয়া প্রথম হইতেই মুত্রাশয়েও উহা জন্মে। মূত্র যন্ত্রের পাথুরী অনেক প্রকার। তাহার মধ্যে ছয় রকম সচরাচর দেখা যায়। যথা— ১। ইউরেট অব এমোনিয়া । ইহা প্রায় শৈশববস্থায় হইয়া থাকে। এই পাথুরীর বর্ণ কাদার মত, উপর মসৃণ, কখন কখন দানাযুক্ত। ফুকানলে কর্কশ শব্দ হয় ; লিকর পোটাসী সহযোগে এমোনিয়া বাহির হয় ; কাৰ্ব্বোনেট অব পোটাস বা সোডা সহযোগে গলিয়া যায় ; ইউরিক অমের পাথুরী উহাতে দ্রব হয় না । এই জাতীয় পাথুরী অতি অল্পই দৃষ্ট হয়। ২ । ইউরিক আয় বা লিথিক অমের পাথুরী। ইহা কটা রক্তবর্ণ। উপরিভাগ মসৃণ এবং কথন কখন দানাযুক্ত। ফুকানলে বিকৃত হইয়া যায়, তখন উগ্র গন্ধ বাহির হয়, পরিশেষে দগ্ধ হইলে অল্প ভস্ম থাকে ; পোটাশ দ্রবে গলিয়া যায় ; ঐ দ্রবে সির্কাম মিশাইলে শ্বেতবর্ণ চূর্ণ অধঃপতিত হয়। এই জাতীয় পাথুরী সচরাচর দেখা যায় ! [ ৩৩৫ ] অশ্মরী ৩ । অগজেলেট অব লাইম। ইহা কটা কৃষ্ণবর্ণ, উপরিভাগ বন্ধুর ; ফুকানলে বিকৃত হইয়া যায় ; লবণ দ্রাবকে দ্রব হয় । ৪ । ফস্ফেট অব লাইম্‌ ! পাশুটে কটাবর্ণ। মন্থণ । ফুকানলে দ্রব হয় না। লবণাম্নে দ্রব হইয়া যায়। ৫। এমোনিয়া ম্যাগ্নেসিয়ান ফস্ফেট । প্রায় শ্বেতবর্ণ উচ্চনীচ । ফুকানলে এমোনিয়া নির্গত হয়। জলমিশ্র লবণ দ্রাবকে ইহা দ্রব হয় । ৬ । মিষ্টিক্‌ অক্সাইড । ইহা শ্বেতবর্ণ। উপরিতাগ বন্ধুর । ফুকানলে ধূম নির্গত হইয়া যায়। জলমিশ্র লবণ দ্রাবকে দ্রব হয় । মূত্রাশয়ে শলাকাথও কিম্ব অন্ত কোন দ্রব্য পড়িয়া থাকিলে তাহারও চারিদিকে নানা প্রকার পদার্থ জমিয়া যায়। উহারও লক্ষণ পাথুরীর মত। এলোপ্যার্থী চিকিৎসা—এই রোগের চিকিৎসায় তিনট উদ্দেশু সাধন করিতে হয়। ১ম—রোগীর বলবৃদ্ধি ও যন্ত্রণ নিবারণ করা; ২–যেন নূতন পাথুরী আর না জন্মে এবং যে সকল পাথুরী জন্মিয়াছে তাহারাওযেন আর না বাড়িতে পায় ; ৩—মূত্রাশয় হইতে পাথুরী বাহির করা । প্রথম উদেষ্ঠ সাধনের জন্য রোগীকে পুষ্টকর লঘু পথ্য দিবে ; কটিতে বেদন থাকিলে বেলেডোনা পলস্ত্রায় তাহার অনেকটা উপশম হয় । মূত্রদ্বার দিয়া রক্ত । স্রাব হইলে টিঙ্কার ষ্টিল ১০ বিন্দু জলের সঙ্গে, অথবা ৫ । ৬ গ্ৰেণ গেলিক এসিড সেবন করাইবে বৃক্কক হইতে মূত্রায়ুপ্রণালী দিয়া মূত্রাশয়ে পাথুরী নামিবার সময়ে অতিশয় যন্ত্রণ। হয়। এই অবস্থায় উষ্ণজলে স্নান, যবমণ্ড, ৭ বিন্দু আফিমের অরিষ্ট সেবন প্রভৃতি ব্যবস্থার দ্বারা উপকার দশে । দ্বিতীয় উদেহু সাধনের জন্য পাথুরীর বিধানোপদানের অবস্থা বুঝিয়া চিকিৎসা করিতে হয়। ইউরিক এসিড ধাতুতে নিরামিষ পথ্য প্রশস্ত । ঘবমণ্ডে বিলক্ষণ উপকার করে । যাহাতে নিত্য কোষ্ঠ পরিষ্কার হয়, এমন উপায় করা আবশুক । এই প্রকারে পাথুরীতে ক্ষার ঔষধ বিলক্ষণ উপকারী। তাহার মধ্যে বাইকার্বোনেট অব পটাশে পীড়ার অনেক উপকার হয়। লিকার পটাশও বিশেষ হিতকর। ফস্ফেটাধিক্য ধাতুতে নাইটোমিউরেটিক দ্রাবক সেবনে পীড়ার প্রতীকার হয়। ইহাতে অধিক মানসিক চিস্তা কর। কর্তব্য নহে। আগঞ্জেলিক্‌