পাতা:বিশ্বকোষ প্রথম খণ্ড.djvu/৬৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্ট্রেলিয়। [ ও৩২ ] অষ্ট্রেলিয়া বসন্ত। অগ্রহারণের অৰ্দ্ধ হইতে ফাল্গুন মাসের অৰ্দ্ধ পৰ্য্যস্ত গ্রীষ্ম । ফাঙ্কনের অৰ্দ্ধ হইতে জ্যৈষ্ঠের অৰ্দ্ধ পর্য্যন্ত শরৎ। জ্যৈষ্ঠের অৰ্দ্ধ হইতে ভাত্রের অৰ্দ্ধ পর্য্যস্ত শীত । আমাদের দেশের মত অষ্ট্রেলিয়ায় অধিক জীব জন্তু নাই। এখানে চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে কাঙ্গারুই প্রধান । ইহাদের সম্মুখের পা ছোট এবং পশ্চাতের প। বড়। তাই অস্ত জস্তুর মত ভাল ছুটিতে পারে না । কিন্তু ইহাদের লাস্কুলে অত্যন্ত বল। দৌড়িবায় আবশুক হইলে লেজের উপরে ভর দিরা এক এক বারে ১৯। ২০ হাত লাফাইতে পারে। কেহ ঘোড়ার উপর চড়িয়া কাঙ্গারু শিকার করিতে গেলে ইহার ঘোড়ার পিঠের উপর দিয়া লাফাইয়া পলাইরা যায়। কাঙ্গারুদের তলপেটের উপরে চৰ্ম্মের থলী আছে। ছোট ছোট সস্তানেয়া সেই থলীর ভিতরে লুকাইয়া থাকে। থলীর উপর দিকে বক্ষঃস্থলে স্তম। ক্ষুধা পাইলে বাচ্ছারা সেই থলীর ভিতরে থাকিয়া অনায়াসে স্তন পান করে। অন্তান্ত চতুষ্পদ জন্তুর গর্ভে বাচ্ছ জন্মিলে বাচ্ছার নাড়ীর সঙ্গে ধাড়ীর ফুলের সংযোগ থাকে । সেই ফুল দিয়া জননীর শরীরের রস বাচ্ছার দেহে আসে, তাহাতে সে হৃষ্ট পুষ্ট হয়। কাঙ্গারু জাতির সে রূপ নাই। ইহাদের জরায়ুতে একটা খলী আছে তাহাতে বাচ্ছার পোষণ কাজ চলে । অষ্ট্রেলিয়ায় আর এক প্রকার জন্তু আছে, তাহাকে একগুহ কহে । গে। মেষাদির মলমুত্র ত্যাগ করিবার ভিন্ন ভিন্ন পথ। একগুহাঁদের সে রূপ নয়, ইহারা পক্ষীর মত একদ্বার দিয়া মলমুত্র ত্যাগ করে। ইহাদের স্তন নাই। কাঙ্গারুর মত ইহাদেরও পেটে থলী আছে। ঐ থলীতে আপনিই দুগ্ধ চুইরা পড়ে, বাচ্ছারা তাহাই পান করে । এই দ্বীপে প্রায় ৬৯০ রকম পার্থী আছে । কাকাতুয় এবং টীয়া নানা বর্ণের। এমু নামে এক প্রকার বড় পার্থী আছে, ইহারা দেখিতে আফ্রিকার উষ্ট্রঞ্চ পক্ষীর মত । এই দ্বীপে ৬৩ রকম সাপ আছে, তাছার মধ্যে ৪২ রকম বিষাক্ত। পাচ প্রকার সাপের বিষ ঠিক এ দেশের কেউটিয়া গোখুরার মত মারাত্মক। , অষ্ট্রেলিয়ার গোমেষাদি চরিবার যোগ্য প্রচুর জমি পড়িয়া আছে। পশুচরেয় এমন উপযুক্ত স্থান জগতে আর দ্বিতীয় নাই। ইংরাজের অন্য অস্ত দেশের জন্তু | এই দ্বীপে লইয়া আসিয়াছে। ভেড়ার চাস চায়ি দিকে। বৎসর বৎসর বিস্তর পশম অপর দেশে প্রেরিত হয়। ভেড়ার মাংসও যথেষ্ট । পূৰ্ব্বে অষ্ট্রেলিয়ার লোকে মাংস খাইয়া ফুরাইতে পারিত না, অনেক মাংস নষ্ট হইত। এখন জাহাজে এক প্রকার কল বসান হইয়াছে, তাহাতে অনেক গুলি কামরা উত্তর-মেরু প্রদেশের মত অত্যন্ত শীতল হইয়া থাকে । তাতার ভিতরে মাংস রাখিলে বহুকালেও নষ্ট হয় না। ব্যবসায়ীরা ঐ সকল জাহাজে মাংস বোঝাই করিয়া ইংলণ্ডে পঠাইয়। দেয় । তাহাতে বৎসর বৎসর বিস্তর লাভ হয়। অষ্ট্রেলিয়ার ঘোড়ার চাসও প্রসিদ্ধ। পূৰ্ব্বে এখানে ঘোড়া ছিল না । ইংরাজের ঘোড়া লইয়া গিয়া ইহার চাস আরম্ভ করে। এখন অষ্ট্রেলিয়ার ঘোড়া নানা স্থানে প্রেরিত হইতেছে। এখানকার মদনদীতে ও অনেক রকম মাছ ছাড়িয়া দেওয়া হইয়াছে। বৃক্ষাদির মধ্যে এনকালিপ্তস গাছই প্রধান । ইহার পাতায় কাজুপুত তৈলির মত এক প্রকার তৈল প্রস্তুত হয় । উহা বাতের পীড়ার ঔষধ। ঐ গাছের আটাও অনেক দামে বিক্রীত হয় । এখানে ঝাউ গাছের ছালে চামড়ায় কস করা হয়। বাবলার মত দুই প্রকার গাছ আছে, তাহদের ছালেও বিলক্ষণ কস । কসের জন্য বৎসর বৎসর অনেক ছাল ইংলণ্ডে প্রেরিত হয় । এখন এই দ্বীপে গম, যব, ভুট্টা, সরিষ, মটর, ইক্ষু, আলু এবং নানা প্রকার শাক সবজী ও ফল উত্তম রূপ জন্মিতেছে । অষ্ট্রেলিয়ায় সোনা, রূপা, তামা, লোহা, সীস, কয়লা, টিন প্রভৃতি নানা প্রকার ধাতু পাওরা যায়। সোনার জন্তই এস্থান এত সমৃদ্ধিশালী। ১৮৫১ সালে সোনার খনি আবিষ্কৃত হয়। সোনার আকর বাহির হইলে সকল লোকেই আপন আপন কাজ ফেলিয়া সোনা তুলিতে ছুটিল, তাহাতে দিন কতক অষ্ট্রেলিয়াতে অত্যন্ত গোলযোগ ঘটিয়াছিল। ১৮৫১ সাল হইতে ১৮৮০ সাল পর্য্যন্ত সৰ্ব্বসমেত ২৯৬,০০,০০,০০০ টাকার সোনা তোলা হইয়াছে । অষ্ট্রেলিয়ায় এ পর্য্যস্ত কত সোনা তোলা হইয়াছে, বিলাতের গত প্রদর্শনীতে একটা হলকরা স্তুপ দ্বার। তাহ দেখানো হইয়াছিল। অষ্ট্রেলিয়া এবং নব-জিলন ইংরাজদের উপনিবেশ। তথাকার লোকে ঐ দেশ আপনারাই শাসন করিয়া থাকেন। ইহঁাদের পালেমেণ্ট সভা আছে; সভার সভ্য তাহারা নিজেই মনোনীত করেন। অষ্ট্রেলিয়ার প্রত্যেক প্রদেশে ইংলও হইতে শাসনকর্তা প্রেরিত হন । শাসন