পাতা:বিশ্বকোষ বিংশ খণ্ড.djvu/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাল و هo ]

হইত। এতদ্ব্যতীত অপর ২ • ভাগ আমেরিক, ফ্রান্স ও চীনদেশে প্রেরিত হইত। ফরাসীয় ভারতীয় শালের বড় পক্ষপাতী ছিলেন। ফ্রান্স-প্রসিয়ানযুদ্ধের পর হইতেই ফ্রান্সে শালের প্রচলন অনেক পরিমাণে বন্ধ হয়। মধুনা যুরোপে ও আমেরিকায় শালের ব্যবহার বড় কম হইয়া পড়িয়ছে। কাশ্মীরে যখন শাল-ব্যবসায়ীর উন্নতির পরাকাষ্ঠী প্রদর্শন করিয়াছিলেন, য়ুরোপে তখন ৪ শাল ব্যবহারের নিমিত্ত জনসাধারণের অতুরাগ পরিলক্ষিত হইতেছিল। পইজলী (Paisly)নগরে কাশ্মীরী শালের অনুকরণে শাল নিৰ্ম্মিত হইত। ৩-৪০ বৎসর পূৰ্ব্বে স্কটলণ্ডে বিবাহের সময়ে কন্যাকে শাল দিয়া আচ্ছাদিত করা হইত। ক্রমে বিবাহে শালব্যবহার বিবাহের একট প্রথা রূপে পরিণত হইয়া যায়। পইজলীতে কলের তাতে শাল প্রস্তুত হয়। এতদ্বারা য়ুরোপে কাশ্মীরী শালের আদর ও আমদানী অনেক পরিমাণে কমিয়া আসিয়াছে। ভারতবর্ষে শালের ব্যবহার চিরন্তন। সম্রাস্ত ও ধনাঢ্যলোকের শাল সম্পত্তির স্থায় রক্ষা করিতেন। এখনও সন্ত্রাস্ত রাজ| মহারাজদের গৃহে প্রাচীন কালের বহুমূল্য শাল দেখিতে পাওয়া যায়। তাদৃশ শাল এখন আর প্রস্তুত হয় না। একখানি শাল ১৯ হাজারেরও অধিক মূল্যে বিক্রীত হইত। দিল্লীর মোগল বাদশাহগণ এবং বাঙ্গালীর নবাবগণ অধীন অমাত্য ও কৰ্ম্মচারীদিগকে কৃতকার্য্যের পুরস্কারস্বরূপ শালশিরোপা দিতেন । এই শালের ব্যবসা এদেশে বহু প্রাচীন কাল হইতে প্রচলিত রহিয়াছে। গড়ে প্রতি বর্ষে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকার শাল বিক্রীত হুইয়া থাকে। বস্ত্রবয়ন সম্বন্ধে য়ুরোপ যদিও এখন অত্যন্ত দক্ষত দেখাইতেছেন,কিন্তু বস্ত্রশিল্পে এখনও ভারতবাসীর যে গৌরব আছে,বিজ্ঞান বলে বগীয়া সমৃদ্ধিশালী যুরোপীয়গণ এ বিষয়ে এখনও তাদৃশ গৌরব লাস্ত করিতে পারেন নাই। ভারতবর্ষে যেরূপ উৎকৃষ্ট শাল নিৰ্ম্মিত হইয় থাকে, য়ুরোপের শিল্পীরা এখনও তাছার সন্ধান প্রাপ্ত হন নাই, এখন তাদৃশ শালনিৰ্ম্মাণে তাহাদের যোগ্যতা জন্মে নাই। আধুনিক যুরোপীয় বস্ত্রশিল্পীরা বিজ্ঞান আন্দোলনের ফলে এবং বিবিধ যন্ত্রের সাহায্যে বস্ত্রশিল্পের যে উন্নতিসাধন করিতেছেন, বহু সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে এদেশের নিয়ক্ষর বা অল্পবিস্তু তত্ত্ববায়গণ বস্ত্রশিল্পে তাহা অপেক্ষাও অধিকতর উন্নতি সাধন করিয়াছিলেন । এসম্বন্ধে পাশ্চাত্য লেখকগণও বহু স্থলে নিরপেক্ষ ভাবে এদেশীয় শিল্পিগণের অনুকূলে প্রশংসা করিয়া গিয়াছেন। কেবল যে শালবয়নেই ইহাদের কৃতিত্ব প্রকাশ পাইয়াছিল তাহা নহে, ৰণসৌন্দৰ্য্য এবং কলানৈপুণ্য প্রভৃতিতেও এই সকল শিল্পীরা যে সবিশেষ কুশলতা প্রদর্শন করিয়াছিলেন,য়ুরোপীয় লেখকগণ মুক্তকণ্ঠে তাহা স্বীকার করিয়াছেন। যদিও যুরোপীয় শিল্পীর শালমিৰ্ম্মাণে যথেষ্ট যত্নবান হইতেছেন, কিন্তু কাশ্মীরে যেরূপ উৎকৃষ্ট শাল প্রস্তুত হয়, জগতের আর কুত্ৰাপি তাদৃশ শাল দেখিতে পাওয়া যায় না।• আইন আকবরী পাঠে জানা যায়, সম্রাট, অকৰয় শালনিৰ্ম্মাণ কার্যের যথেষ্ট উৎসাহ প্রদান করিতেন । এমন কি তিনি নিজেও অনেক সময়ে নমুনা দেখাইয়া দিতেন। কারুকার্য্যে ও বর্ণ, প্রতিফলনে সম্রাট আকবর শালনিৰ্ম্মাণে নানা প্রকার অভিনব সৌন্দর্য্যের স্বত্রপাত করিয়াছিলেন। তিনি শাল ব্যবহার করিতে ভাল বাসিতেন । চারি প্রকার শাল প্রস্তুত করাইতেন । প্রথমতঃ তুজ, আসগাল, ইছা ধূসর বর্ণ বা শুভ্র । এহ শাল যেমন কোমল, তেমনই নরম ও পাতলা । এই শ্রেণীর শালে , শিল্পীর পূৰ্ব্বে রং ধরাইতে পারিত না। কিন্তু সম্রাট আকবর বিশেষ চেষ্টা করিয়া এই শ্রেণীর শালে রং প্রতিফলিত করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । দ্বিতীয় প্রকার শালের নাম-সফেদ আলচে, ইহার অপর নাম তেঢ়েদার ; সফেদ ও কাল দুই রকম পশমে এই জাতীয় শাল দ্বিবিধ বর্ণেই প্রস্তুত হইত। শিল্পীরা ইহা হইতে এক প্রকার ধূসর বর্ণের শাল প্রস্তুত করিত। অকবরের পূর্কে তিন বা চারি রঙ্গের শাল প্রস্তুত হইত। ইহার বেশী রঙ্গদার শাল দেখা যাইত না । কিন্তু আকবরের সময় হইতেই বিবিধ রঙ্গের শাল প্রস্তুত হইতে আরম্ভ হয় । তৃতীয় প্রকার শালের নাম জয়দী, গুল-বাতান, কাশাদী, কালঘাই, বুদ্ধানম৷ ছিট, আলচে এবং পরজদার। এই সকল শাল সম্রাট, আকবরের উদ্ভাবিত। চতুর্থ-জামার নিমিত্ত এক প্রকার সুদীর্ঘ শাল প্রস্তুত হইত । অকবরই শালের জুড়ী ব্যবহারের প্রথা প্রবর্তল করেন । আইন আকবরী পাঠে আরও অবগত হওয়া যায় যে, সম্রাটের উৎসাহে এই সময়ে লাহোরে প্রায় সহস্রাধিক তত্ত্বশাল ছিল । তথায় তত্ত্ববায়গণ শালনিৰ্ম্মাণকার্য্যে নিযুক্ত থাকত। তাহারা ময়া নামে একরূপ নকল শাল প্রস্তুত করিত। ময়ান রেশম ও পশমে নিৰ্ম্মিত হহত । অধুনাও কাশ্মীরী শাল এদেশে সুবিখ্যাত। ১৮২০ খৃঃজকে

  • “From the neck and underpart of the body of the wool-goat is taken the fine flossy silk-like wool which is worked up into those beautiful shawls with an exquisite taste and skill, which all the mechanical ingenuity of Europe has never been able to initate

with more than partial success". (The Cyclopædia of India)