পাতা:বিশ্বকোষ বিংশ খণ্ড.djvu/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাহপুর মোগল-সাম্রাজ্য ধ্বংস হওয়ার পূৰ্ব্বে এই জেলার ইতিহাস অতীব অস্পষ্ট। কিন্তু ভূমির অবস্থা পৰ্য্যালোচনা করিলে মনে হয়, প্রাচীন সময়ে এখানে লোকনিবাস ছিল। এই জেলার বিস্তীর্ণ পরিত্যক্ত ভূখণ্ডে কোথাও বা ভূপ্রোথিত ইষ্টকরাশি, কোথাও বা মাতিগভীর ইষ্টকনিৰ্ম্মিত কুপ, কোথাও বা মুণ্ডিকানিৰ্ম্মিত ভগ্নপাত্রাদির স্ত,প দেখিতে পাওয়া যায়। ক্রমশঃ জলের অভাব হওয়ায় এই সকল স্থান ধীরে ধীরে লোক-নিবাসের অযোগ্য হইয়া পড়িয়ছিল । সম্ভবতঃ এহ কারণেই এখনও এই জেলাতে অনেক স্থানই মামুষের আবাসের অমুপযুক্ত হইয়া পড়িয়া রহিয়াছে। ৬০ ফিট পৰ্য্যন্ত গভীর করিয়া কুপ খনন করিলেও কুপে জলোদ্ধার হয় না, হইলেও সে জল ব্যবহার করিতে পারা যায় না। কিন্তু পূৰ্ব্বে এরূপ ছিল না। মহাবীর আলেক্জান্দারের সমসাময়িক ইতিবৃত্তবিদগণ বলেন, এই স্থানে নরনিবাসে পরিপূর্ণ ছিল। অকবরের রাজত্ব সময়েও নাকি শাহপুর জেলার যথেষ্ট উন্নত অবস্থা বর্তমান ছিল । মহম্মদ শাহের শাসন সময় হইতেই আমরা শাহপুরের পরিফুট ইতিহাসের প্রমাণ পাই। আনন্দবংশীয় রাজপুত রাজা সলামত রায় ভেরায় রাজধানী সংস্থান করিয়াছিলেন । তিনি এই স্থানের চতুঃপার্শ্বস্থ গ্রাম গুলিকে স্বীয় আয়ত্তে রাখিয়া শাসন করিতেন । নবাব আহম্মদীয়ার খ খুশাবের শাসনকর্তা ছিলেন । এই জেলার দক্ষিণপুৰ্ব্বস্থ ভূখণ্ডে মুলতানের শাসনকর্তা মহারাজ কুমারমল শাসন দণ্ড বিস্তার করিয়াছিলেন। সময়ে সময়ে শিখ ও আফগানগণ এখানে স্বীয় শাসন প্রভাব বিস্তার করিতেন। আহ্মদ শাহ ছুরাণী ১৭৫৭ খৃঃ অব্দে নূর-উদ্দীন বমিজকে তদীয় পুত্র তৈমুরের সাহায্য করার জন্ত প্রেরণ করেন। এই সময়ে মহারাষ্ট্রীয়দের সহিত তৈমুরের দারুণ যুদ্ধ চলিতে ছিল । সৈন্যগণ খুশবের নিকটে ঝিলাম নদী পার হইয়। ভেরী, মিয়ানী এবং চক্‌সামু নামক তিনট সমৃদ্ধিশালী নগরকে একবারে বিদ্ধস্ত করিয়াছিল। কালক্রমে ভেরা ও মিয়ানী সেই ধ্বংসাবশেষ ইষ্টতে আবার সমৃদ্ধির মুখ দর্শন করিতে সুবিধা প্রাপ্ত হয়, কিন্তু চক্সাচু এখন কেবল নাম মাত্রেই প্রাচীন পরিচয় বজায় রাখিয়াছে। নবাব আহম্মদীয়ার র্থার মৃত্যুর পরে খুশাব রাজা সলামত রায়ের শাসনাধীন ইয়াছিল। আববাস থ1 নামে একজন শাসনকর্তা আহ্মদ শাহের প্রতিনিধি রূপে পিণ্ডদাদন প" নামক স্থানে অবস্থান করিতেন, লবণপৰ্ব্বতশ্রেণী ও ই হার শাসনাধীন ছিল। ইনি ভেরার রাজাকে বিশ্বাসঘাতকতা করিয়া নিহত করেন এবং ভেরায় স্বীয় অধিকার বিস্তার করেন । তাববাস খ এই সকল স্থান হইতে যে রাজস্ব আদায় কাপুনে, সে সমস্তই প্রায় নিজেই [ ৩৪৬ ] শাহপুর - ভোগ তছরূপ করিতেন। এই অপরাধে তাহার অবশিষ্ট জীবন কারাবাসে অতিবাহিত হইয়াছিল। এই সময়ে সলামত রায়ের ভ্রাতু-পুত্র ফতেসিংহ ভেরার অধিকার প্রাপ্ত হন। ১৭৬৩ খৃঃ আৰো আহ্মদ শাহের সহিত শিখদের ঘোরতর যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে বিজয়লক্ষ্মী শিখদিগকে সমাশ্রয় করেন। মুকর-চকিয় মিশিলের নেত। ছত্রসিংহ বিজয়গৌরবে স্পন্ধিত হইয়া সহসা লবণপৰ্ব্বতশ্রেণী করায়ত্ত্ব করিতে প্রয়াস পান । এদিকে ভাঙ্গি রাজস্থ্যবৰ্গ পাৰ্ব্বত্যপ্রদেশ হইতে চেনাব নদের তটান্ত পৰ্য্যস্ত ভূখণ্ডে আপনাদের আধিপত্য বিস্তার করিয়া উহ। আপনাদের মধ্যে বিভক্ত করিয়া লরেন। মুসলমান শাসনকর্তারা সম্রাটের মুখাপেক্ষ না করিয়া নিজ নিজ ৰীরত্ব প্রভাবে সাৰিবান,মিঠাতিবান এবং খুসাবে শিখগণের বিরুদ্ধে আপনাদের প্রভাব অক্ষুণ্ণ রাখিতে সমর্থ হইয়াছিলেন । অতঃপর જ્ઞાન કે অরাজকতার অসঙ্গত আক্রমণে, এবং সীম সম্বন্ধীয় বিবাদে এই অঞ্চল সততই অশাস্তিতে আন্দোলিত হইতেছিল। এই অবস্থায় শিথবীর মহাসিংহের অভু্যদয় হয়। তাহার প্রভাবগৌরবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজশক্তির পরম্পর কলহ একবারে প্রশমিত হইয়া যায় । অতঃপর তৎপুত্র স্বনামধন্ত বীরকেশরী রণজিৎসিংহ সম্যক পঞ্জাবে স্বীয় অসাধারণ প্রভুত্ব সংস্থাপন করেন। ১৭৮৩ খৃঃ অন্ধে মানসিংহ মিয়াণী নগর স্বীয় শাসনাধীন করেন, ১৮৮৩ খৃঃ অৰে তৎপুত্র মহারাজ রণজিৎসিংহ ভেরায় স্বীয় শাসন-গৌরব প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন । ইহার ছয় বৎসর পরে রণজিৎ শাহবাল ও খুসাবের বলুচ শাসনকর্তা স্বয়কে বিতাড়িত করিয়৷ এই দুই স্থানে স্বীয় আধিপত্য বিস্তার করেন"। এই সময়ে তিনি আরও অনেকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তালুক নিজের শাসনাধীন করিয়াছিলেন । ১৮১ • খুঃ অব্দে বঙ্গের শিয়াল-বংশীয় সামস্তরাজবর্গের শাসিত স্থানগুলিও রণজিতের শাসনাধীন হয় । ১৮১৬ খৃষ্টাব্দে রণঞ্জিতের বিজয়ধ্বজ মিঠাfতবানায় উডডীন হয়। মিঠাতিবানার মালিকগণ রণজিতের বিজয়োত্মত্ত সেনাদের বীরগঞ্চ দেখিয়া ভয়ে ভয়ে মুদুরে পলায়ন করেন । কিন্তু রণজিৎ মিঠাক্তিবানাগণের ক্ষমতা বিলক্ষণ রূপেই জানিতেন। সুচতুর রণজিৎ তাহাদিগকে পরাজিত করিয়া পরে তাহাজের সহিত মিত্রতা ৰন্ধনে আবদ্ধ হয়েন এবং হরিসিংহ নামক জনৈক শিখসর্দারের প্রতি তিবানাদের রাজ্যশাসনের ভার সংস্কস্ত হইয়াছিল। ছরিসিংহের মৃত্যুর পর ১৮৩৭ খৃষ্টাব্দে তিবানাদের প্রতিনিধি ফতে থাকে রণজিৎ জাম্রু নগরে প্রতিষ্ঠিত করেন । রণজিৎ তৎপুত্র ও পৌত্র অল্প সময় মধ্যেই ক্রমে ক্রমে লোকাস্তুর প্রাপ্ত হন । {রণজিৎ সিংহ দেখ ।] এই সময়ে মালিক ফতেখ যথেষ্ট প্রাধান্ত লাভ করিয়াছিলেন ।