পাতা:বিশ্বকোষ ষোড়শ খণ্ড.djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রঘুনাথ শিরোমণি [ $88 ) রঘুনাথ শিরোমণি

জন্ত পাত্র লইয়া যান নাই। উপায়াস্তর না দেখিয়া তিনি এক অঞ্জলি বালুক লইয়া অগ্নি লইতে প্রস্তুত হইলেন। ৰাসুদেব সাৰ্ব্বভৌম তৎকালে চতুষ্পাঠীতে উপস্থিত ছিলেন, তিনি পঞ্চম বর্ষীয় বালকের প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব নিরীক্ষণ করিয়৷ চমৎকৃত হইলেন। সেই দিনই তিনি রঘুনাথের মাতাকে ডাকাইয়া কহিলেন, “তোমার ছেলেট বড়ই বুদ্ধিমান, কালে ছেলেট একটী রত্ন হইবে। অন্ধু হইতে আমি ইহার পড়1শুনার ভার গ্রহণ করিলাম।” বাসুদেবের কৃপার কথা শুনিয়া মাতা আহলাদ সহকারে তাহার হস্তে পুত্রের শিক্ষাভার অর্পণ করিয়! নিশ্চিম্ভ হইলেন । অন স্তুর বাসুদেব শুভদিনে শুভক্ষণে সেই বর্ষেই বালকের ছাতে খড়ি দিলেন । ক খ পড়িতে পড়িতে স্বতঃই তাহার মনে হইল অগ্ৰে ক না পড়িয়া থ পড়িলে কি দোষ হয় ? স্বয়ং এই সন্দেহের কিছু মাত্র মীমাংসা করিতে ন পারিয়া বালক বাসুদেবকে ইহার মীমাংসা করিতে বলেন । এই জটিল প্রশ্নে বাসুদেব মহাবিপদে পড়িলেন। তখন তিনি রঘুনাথকে বুঝাইবার জন্ত বলিলেন যে, সংস্কৃত বর্ণমালা স্বরসস্তৃত অর্থাং কণ্ঠ, তালু, মুদ্ধা, দন্ত ও ওষ্ঠ সাহায্যে উচ্চারিত এবং বৈজ্ঞানিক প্রণালীতে সংবদ্ধ। এই বলিয়৷ অধ্যাপকপ্রবর সে বার নিস্কৃতিলাভ করিলেন । রঘুনাথ ছাড়িবার পাএ নহেন । ব্যঞ্জনবর্ণে দুইটা 'জ', দুইট 'ন', দুইটা ‘ব’ ও তিনট সি’ থাকিবার কারণ কি, একদিন এই প্রশ্ন উথাপিত করিয়া রঘুনাথ পুনরায় ব্যস্ত করিয়া তুলিলে বামুদেব বুঝিলেন যে, এ সামাই বালক । নছে। প্রশ্নের উত্তর বালককে বুঝাইবার মিমিত্ত তপন তিনি উচ্চারণবিধি, ণত্ব ও যত্ব-বিধি প্রভৃতি ব্যাকরণ পড়াঃ । ‘জ’ আদি বর্ণের প্রয়োজনীয় তা স্পষ্টরূপে তাহাকে বুঝাইয়। দিলেন। সুতরাং এক বর্ণমালা শিথাইতে গিয়া বাসুদেবকে । ব্যাকরণের অনেক অংশ শিক্ষা দিতে ইহঁয়াছিল। এই রূপে রঘুনাথ মতি অল্প বয়সেই ব্যাকরণ, কাব্য, ও অভিধান পাঠ শেষ করি। কিছুদিন স্মৃতিশাস্ত্র অধ্যয়নের পর বামুদেবের নিকট স্বায়ুশাস্ত্র মধ্যয়নে প্ৰবৃত্ত হন । বামুদেব যেরূপ যত্ন-সহকারে রঘুনাথের অধ্যাপনা করিতে ছিলেন, রঘুনাথ ও তদ্রুপ অধ্যবসায় সহকারে অধ্যয়ন করিতে লাগিলেন । বামুদেব দিবাভাগে যে পাঠ দিতেন রঘুনাথ জাহ। লিথিয়া লইয়া রায়িতে আলোচনা করিতেন । র্তাহার মতের সহিত অধ্যাপকের কোন বিষয়ে বৈষম্য উপস্থিত হইলে, তিনি রাত্রিকালে তাহ তন্ন তন্ন করিয়া বুঝিয়া লইতেন। ক্রমে স্বীয় অখণ্ডনীয় যুক্তি প্রভাবে তিনি তৰ্ক-শাস্ত্রে বিশেষ পারদর্শী হইয়া উঠিলেন। তর্কের উৎকর্ষতায় তিনি গুরুকে অতিক্রম করিয়াছিলেন। বাস্বদেব “সাব্বভৌমনিরুক্তি” নামে যে টীক। গ্রন্থ প্রণয়ন করেন, তাকুবুদ্ধি রঘুনাথ তর্ক যুক্তির দ্বারা ঐ গ্রস্থের নানা দোষ বাকির করিতে লাগিলেন, এমন কি, নৈয়ায়িকরাজ গঙ্গে শোপাধ্যায় ও তাহার হস্তে নিস্কৃতি পাঠলেন না। তিনি স্বীয় পাঠ্য তৎকৃত “চিন্তামণি” গ্রস্থের ও নানা ভ্রম বাহির করিয়া, পঠদ্দশাতেই স্বমত সমর্থন পূর্বক ভদ্বিষয়ে নানা প্রকার প্রবন্ধ লিখিয়া স্বীয় মত প্রচার করিতে লাগিলেন। রঘুনাথের এই সমস্ত অলৌকিক কাও দেখিয়া নবদ্বীপের পণ্ডিত সমাজে মহা হুলস্থল পড়িয়া গেল । এই সময়ে নবদ্বীপে শ্ৰীচৈতন্য মচা প্রভুর আবির্ভাব হয় । রঘুনাথ ও শ্রীচৈতন্যদেব সহাধ্যায়ী হওয়ার উভয়ের মধ্যে পরম সৌহৃদ জন্মিয়াছিল। রঘুনাথ বালক নিমাইকে প্রথমতঃ বড় গ্রাহ করিতেন না, কিন্তু অচিরে তাহার প্রতিভার পরিচয় পাষ্টয় তাহার সে ভ্রম ঘুচিয়া গেল। রঘুনাথের যখন যে কিছু সন্দেহ ইষ্টত চৈতন্যদেবকে জ্ঞাপন করিলেই তাহার যুক্তিসঙ্গত মীমাংস পাইতেন । রঘুনাথকে একট প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেন । সেই জটিল প্রশ্নের মীমাংসা সমাধানের জন্য তিনি নবদ্বীপের নিকটবর্তী পান্তরে যাইয়া এক खैघ्,नि বৃক্ষমূলে নিভৃতে চিন্তায় নিমগ্ন হষ্টলেন । চিস্তাশীলতাই রঘুনাথের সবিশেষ গুণ ছিল। তিনি দিবানিশি সেই স্থানে বসিয়া এরূপ প্রগাঢ় চিন্তামগ্ন হইয়াছিলেন যে, পক্ষিগণ তাহার গাত্ৰে মলত্যাগ করাতেও তাহার সংজ্ঞ হয় নাই । পরদিন প্রভাতে প্ৰাত:কৃত্যাদি সমাপন পূৰ্ব্বক নিমাই রঘুনাথের অনুসন্ধান করিতে করিতে সেই স্থান দিয়া বাষ্টতেছিলেন, ঘটনাচক্রে রঘুনাথকে তদ বস্থার উপবিষ্ট দেখিয়া তিনি আশ্চৰ্য্যাম্বিত হইলেন এবং উপহাসচ্ছলে স্বীয় হস্তস্থিত ঝারি হইতে এক গণ্ডুষ জল তাহার গাত্রে নিক্ষেপ করিয়া কছিলেন “বনে বসিয়৷ মাখ। মুণ্ড কি ভাবিতেছ।” শীতলবারি স্পর্শে রঘুনাথের চমক ভাঙ্গিল, নিমাহকে সম্মুখে দেখিয়া একটু অ প্রতিভের হাসি হাসিলেন এবং নিমাইএর কথার উত্তরে বলিলেন “আমি ধাহ ভাবিতেছি, তুমি তাহার কি বুঝবে’ তখন চৈতন্তদেব তাহার ভাবনার কারণ জানিতে বিস্তর জেদ করিতে লাগিলেন । রঘুনাথের মুখে প্রশ্নটা অবগত হুষ্টয়া তিনি তৎক্ষণাং তাছার উত্তর দিয়া বলিলেন “এরই জম্ভ তোমার এত ভাবনা ।” রঘুনাথ চৈতন্তের মীমাংসা ও সদুত্তরে আলোদিত হইয়া বলিয়া উঠিলেন “ভাই তুমি সামান্ত মনুষ্য একদিন সাব্বভৌম