পাতা:বিশ্বকোষ ষোড়শ খণ্ড.djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রঘুনাথ শিরোমণি [ s8१ ] রঘুনাথ শিরোমণি হইতে নবদ্বীপে আসিয়া চতুষ্পাঠী স্থাপনপূৰ্ব্বক ছাত্রদিগকে স্থায় শাস্ত্রের উপাধি দান করিতে র্তাহার বাসনা জন্মিল, তদনুসারে তিনি মিথিলা হইণ্ডে দ্যায়-শাস্ত্রের পুথি সংগ্ৰহ করিতে ব্যস্ত হুহলেন । পক্ষধর কোন পুথি বা তাহার নকল কাহীকে ৪ দেশে লইয়া যাইতে দিতেন না । অধ্যয়ন শেষ হইলে রঘুনাথ নবদ্বীপে প্রত্যাগমন করিবার জন্য পক্ষধরের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করিয়া পরে, কতগুলি হ্যায়-শাস্ত্রের পুথি সঙ্গে লইতে চাহিলেন। তিনি চতুষ্পাঠী খুলিবেন শুনিয়াই পক্ষধরের শিরে বজ্রাঘাত পড়িল । পুথি বা তাহার নকল লহবার প্রস্তাবে তিনি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করিলেন । পক্ষীধরের অসম্মতি দেখিয়া রঘুনাথ ক্রোধান্ধ হইয়া সংকল্প কfরলেন, অপ্ত রাত্রিকালেই গুরুর প্রাণ নষ্ট করিব। নিশীথ সমাগমে যখন চতুষ্পাঠীগৃহে ছাত্ৰগণ গভীর নিদ্রায় অভিভূত এবং পক্ষধর, পত্নীর সহিত শয়ন-মন্দিরে নানাবিধ আলাপে ব্যাপৃত, তখন রঘুনাথ গুরু-হত্য মানসে শাণিত অস্ত্র লইয়া পক্ষধরের শয়ন-গৃহের দ্বারদেশে আসিলেন । তিনি শুনিলেন পক্ষধর-গৃহিণী কহিতেছেন “ঠাকুর । এ সংসারে কোন বস্তু আপনার পক্ষে পরম নিৰ্ম্মল ? আমি, বা আমার সস্তান, বা এই শারদীয় আকাশের পুণচন্দ্র ?” গৃহিণীর নিবন্ধতিশয় দেখিয়া পক্ষধর কহিলেন “তুমি, বা তোমার সস্তান, বা আকাশের পূর্ণচন্দ্র, ইহার কিছুই আমার নিকট নিয়ল নহে । নবদ্বীপ হইতে রঘুনাথ নামক যে একটী নবীন যুবা আসিয়া আমুর নিকট সমগ্র দ্যায়-শাস্ত্র শিক্ষা করিয়া লইয়াছে, তাহারবুদ্ধির ন্তায় মুনিৰ্ম্মল বস্তু আমি এ জগতে আর কিছুই দেখিতে পাই না।” রঘুনাথ গুরুদেবের কথা শুনিয়া ক্ৰন্দন করিতে লাগিলেন, তাহার মনে গুরুভক্তি জাগিয়া উঠিল এবং তিনি আপনার ছুর,দ্ধিকে ধিকার দিতে লাগিলেন। তথন তাহার মনে হইল “আমার যে বুদ্ধি তাহাকে বধ কারবার জ9 আমাকে প্রণোদিত করিয়াছে, তাহারই চক্ষে আমার মেহ বুদ্ধি জগতের সব্বাপেক্ষ নিৰ্ম্মল বস্তু।” এইরূপ চিস্তু। করিতে করিতে রঘুনাথের হৃদয় ক্রমশঃই অনুতাপানলে দগ্ধ তাহার ক্রমনভাব ও শ্বাসপ্রশ্বাসে বাহিরে পক্ষধর হহতে লাগিল । লোক আছে বিবেচনা করিয়া কিয়ুৎক্ষণ পরে গৃহের দ্বারোন্মোচন পুৰ্ব্বক বাহিরে আসুিয়া দেখিলেন, রঘুনাথ ভূমিতলে একখানি শাণিত অস্ত্র রাখিয়া অত্যন্ত ক্ৰন্দন করিতেছে। পক্ষধর ইহার কারণ জিজ্ঞাসা করিলে রঘুনাথ কহিলেন “আপনি আমাকে পথি বা পথির নকলও লইতে দেন নাই। একারণ আমি ক্রোধান্ধ হইয় আপনাকে বধ করিবার জন্তু উদ্যত হইয়াছিলাম। পরে মামার প্রতি আপনার আকৃত্রিম অমুল্লীগের কথা শুনিয়া মৰ্ম্মাহত হইয়া ক্রনন করিতেছি। এখন আমার তুষানল বা অন্ত কোন ও প্রায়শ্চিত্তের বিধান করুন।” পক্ষধর ও র্তাহার গৃহিণী ইহ। শুনিয়া অবাকৃ হইয়। পড়িলেন, এবং তাহার অকপট আত্মগ্লানিই যে তাহার সমুচিত প্রায়শ্চিত্ত হইয়াছে, ইহা তাহাকে বুঝাইয় দিলেন। রাত্রি প্রভাত হইলে রঘুনাথ কহিলেন *গুরুদেব ! এখন নবদ্বীপ-গমন স্থগিত রাখিলাম। আমার হায় শাস্ত্রাধ্যয়ন এখনও শেষ হয় নাই। আরও কিছু দিন আপনার গৃহে অবস্থান করিব।” পক্ষধর কহিলেন, “যতদিন ইচ্ছা, আমার বাটতে থাকিয়া দ্যায়-শাস্ত্র অধ্যয়ন করিতে পার ।” রঘুনাথের প্রাণ পুথির দিকেই পড়িয়া রহিয়াছে। তিনি অনন্তমনা: ও অনন্ত কৰ্ম্ম হইয় দিবানিশি পক্ষধরের এক একখানি করিয়া সমস্ত পুথিই কণ্ঠস্থ করিতে লাগিলেন । পুথিগুলি কণ্ঠস্থ করিয়া দুই এক বৎসর পরেই দিগ্বিজয়ী নৈয়ায়িক হইয়। রঘুনাথ খৃষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর প্রারম্ভেই নবদ্বীপে প্রত্যাগমন করিলেন । নবদ্বীপে চতুষ্পাঠী খুলিবার জন্ত রঘুনাথ কৃত-সংকর হইলেন, কিন্তু অর্থাভাবে তাহ দুঃসাধ্য হইয়া উঠিল । প্রবাদ, ঐ সময়ে নবদ্বীপে "হরি ঘোষ” নামক একজন সম্পত্তিশালী গোয়াল বাস করিতেন । তিনি গরু রাখিৰার জন্তু একখানি স্বাবস্তৃত গো-শালা নিন্মাণ করাইয়াছিলেন । এই গো-শালাই অদ্যপি “হরি ঘোষের গোয়াল” বলিয়া প্রসিদ্ধ। এই হরি ঘোষই নিজ অর্থব্যয়ে সেই গো-শালায় রঘুনাথের চতুপাঠা খুলিয়। দিলেন। রঘুনাথের বিদ্যোপার্জন-বলে ও শিক্ষা দান-ফলে দেখিতে দেখিতে নবদ্বীপ একটা প্রকৃত সারস্বত-মন্দির হহয়। উঠিল। রঘুনাথ অনেক গুলি গ্রন্থ লিথিয়া গিয়াছেন,—“তত্ত্বচিন্তামণি-দীধিতি", পদার্থ-থগুন, পদার্থতত্ত্ব-নিরূপণ, পদাৰ্থরত্নমালা, আত্মতত্ত্ব-বিবেক-টাকা, প্রামাণ্য-বাদ, নঞর্থ বাদ, গণ ভঙ্গুর-বাদ, আখ্যাত-বাদ, ব্যুৎপস্থিবাদ লালাব তা-টীক, থগুল-থ ও খাদ্য-টক, গুণকিরণাবলীপ্রকাশ-দীধিতি, স্তায় কুসুমাঞ্জলি-টীকা, স্তায়লালাং তাপ্রকাশ-দীধিতি, ন্যায়-লীলাবতী-বিভূতি, ব্রহ্মস্বত্র বৃত্ত্বি, ৪ মলিয়,চ-বিবেক । এতদ্ধির তাহার রচিত অদ্বৈতেশ্বরবাদ, অপুৰ্ব্ববাদরহস্ত, অবয়বগ্রন্থ, অ কাজক্ষাবাদ, কেবলব্যতিরেকি, গুণনিরূপণ, ধর্মিতাবচ্ছেদক-প্রত্যামন্তি, নিযোঞ্জাম্বয়tথ-নিরূপণ, নিরোধলক্ষণ, পক্ষতা, পঞ্চলগণীক্রোড়, যোগ্যতারহস্ত, বাক্যবাদ,